জননী সুফিয়া কামাল প্রবন্ধ রচনা Class 5, 6, 7, 8,
প্রবন্ধ রচনা : জননী সুফিয়া কামাল
[রচনা সংকেত : ভূমিকা—শৈশব—কর্মজীবন—উপসংহার।]
উত্তর : ভূমিকা : “বিদ্যার্জন করা প্রতিটি মুসলমান নরনারীর কর্তব্য” হাদিসের এই বাণী প্রতিষ্ঠিত করা ও অধিকার অর্জন করার সংগ্রামে যে সমস্ত মহিলা অগ্রণীর ভূমিকা গ্রহণ করেছিলেন জননী সুফিয়া
কামাল তাঁদের অন্যতম। রক্ষণশীল মুসলিম সমাজের ভ্রূকুটিকে উপেক্ষা করে যিনি শৈশবে বালকের পোশাক পরে মক্তবে পড়াশোনা শুরু করার মধ্য দিয়ে এই সংগ্রাম ঘোষণা করেন, তিনিই সুফিয়া কামাল
শৈশব : ১৯১১ খ্রিস্টাব্দের ২০ জুন বরিশালের শায়েস্তাবাদে সৈয়দ সুফিয়া খাতুনের জন্ম হয় । পিতা সৈয়দ আবদুল বারী এবং মাতা সৈয়দা সাবেরা খাতুন। পিতা ছিলেন সুফি মতাবলম্বী। সুফিয়ার
যখন ৭ বছর বয়স, পিতা নিরুদ্দেশ হন। নানার বাড়িতেই তিনি তিনি বেড়ে ওঠেন। রক্ষণশীল জমিদার পরিবারে মেয়েদর লেখাপড়া শেখা নিষেধ। কিশোরী সুফিয়ার লেখাপড়া করার অদম্য ইচ্ছা। মা তাঁকে বানান করে বই ও পত্রপত্রিকা পড়তে শিখিয়েছেন। অগ্নি যাঁর মধ্যে দেদীপ্যমান ছাই তাকে কতক্ষণ লুকিয়ে রাখতে পারে। তিনি কলম ধরলেন। অশ্বিনীকুমার দত্তের ভ্রাতুষ্পুত্র “তরুণ” নামে একখানি পত্রিকা বার করতেন—সেখানে “সৈনিক বধূ” নামে একটি ছোটো গল্প লিখলেন। আত্মপ্রকাশ ঘটল কিশোরী সুফিয়ার। বয়স যখন তাঁর বারো, তখন রোকেয়া, মহাত্মা গান্ধি, নজরুল ইসলাম, রবীন্দ্রনাথ
ঠাকুরের সংস্পর্শে তিনি আসেন। তাঁদের আশীর্বাদ-ধন্যা তিনি। ‘সওগাত' পত্রিকায় লেখা “বাসন্তী” কবিতা বিশ্বকবির উচ্ছ্বসিত প্রশংসা লাভ করে।
কর্মজীবন : ১৯৩৩ থেকে ১৯৪১ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত তিনি কলকাতা কর্পোরেশন স্কুলে শিক্ষকতা করেন। ১৯৪০ খ্রিস্টাব্দে ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেন। ১৯৪৬ খ্রিস্টাব্দে কলকাতায় সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার আগুন জ্বলে উঠলে লেডি ব্রাবোর্ন কলেজের আশ্রয়কেন্দ্র তিনি পরিচালনা করেন। এই দাঙ্গা বিরোধী কর্মকাণ্ডের সময় শেখ মুজিবর রহমানের সাথে তাঁর পরিচয় ঘটে। দাঙ্গা থেমে গেলে, পার্ক সার্কাসে “রোকেয়া মেমোরিয়াল স্কুল” নামে কিন্ডারগার্টেন পদ্ধতিতে স্কুল চালু করেন। দেশভাগের পর তিনি ঢাকায় চলে যান ।
উপসংহার : এই কবি, সংগঠক, সমাজসেবিকা, নারী আন্দোলনের পথিকৃৎ ১৯৯৯ খ্রিস্টাব্দে ইহলীলা ত্যাগ করেন। বাঙালি নামটি মানব ইতিহাসে যতদিন লেখা থাকবে সুফিয় কামালের নাম ততদিন বাঙালিদের মনে থাকবে।
অনুরূপ রচনা : তোমার প্রিয় মহিলা কবি। সমাজ সেবার আদর্শ ও বেগম সুফিয়া কামাল।