ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর প্রবন্ধ রচনা Class 5, 6, 7, 8, 9

WhatsAp Group Join Now
Telegram Group Join Now

 প্রবন্ধ রচনা: ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর

[রচনা সংকেত : ভূমিকা— জন্ম ও শিক্ষা—কর্মজীবন—উপসংহার।]

উত্তর : ভূমিকা : প্রাতঃস্মরণীয় পুণ্যশ্লোক বিদ্যাসাগর মহাশয় আজও এদেশের উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্ব।


ভূমিকা: প্রাতঃস্মরণীয় পুণ্যশ্লোক বিদ্যাসাগর মহাশয় আজও এদেশের উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্ব। শিক্ষাবিস্তার এবং সমাজসংস্কার আন্দোলনে তিনি এযুগেও প্রেরণাস্থল। এদেশে বিদ্যাসাগরের মতো পূর্ণাঙ্গ মানুষের জন্ম—একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা।



জন্ম ও শিক্ষা : বর্তমানে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার বীরসিংহ গ্রামে ১৮২০ খ্রিস্টাব্দে ২৬ সেপ্টেম্বর ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের জন্ম। পিতা ঠাকুরদাস বন্দ্যোপাধ্যায়, মাতা ভগবতী দেবী। গ্রামের পাঠশালার পাঠ

সমাপ্ত করে ১৮২৮ খ্রিস্টাব্দে কলকাতায় আসেন। ১৮২৯ খ্রিস্টাব্দ ৯ বছর বয়সে সংস্কৃত কলেজে ভরতি হন। বারো বছর বয়সে সংস্কৃত, সাহিত্য, ব্যাকরণ, বেদান্ত, ন্যায়, স্মৃতি অলংকার-শাস্ত্র প্রভৃতি বিষয়ে

অসাধারণ ব্যুৎপত্তি লাভ করেন। ১৮৩৯ খ্রিস্টাব্দে হিন্দু ল কমিটির পরীক্ষায় কৃতিত্বের সঙ্গে উত্তীর্ণ হয়ে ‘বিদ্যাসাগর’ উপাধি পান। এই উপাধির জনপ্রিয়তার আসল নাম যায় হারিয়ে।


কর্মজীবন : মাত্র একুশ বছর বয়সে ফোর্ট উইলিয়াম কলেজে বাংলা বিভাগের প্রথম পণ্ডিত হিসেবে বিদ্যাসাগরের কর্মজীবনের সূচনা। ১৮৫১ খ্রিস্টাব্দে সংস্কৃত কলেজের অধ্যক্ষের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। সংস্কৃত কলেজের নানা সংস্কারের পাশাপাশি বিশেষ বিদ্যালয় পরিদর্শক রূপে বর্ধমান, হুগলি, মেদিনীপুর জেলায় অনেকগুলি বিদ্যালয় স্থাপন করেন। স্ত্রী-শিক্ষা বিস্তারে, সমাজ-সংস্কারে ও তাঁর অবদান স্মরণীয়। হিন্দু সমাজের প্রচণ্ড বিরোধিতা সত্ত্বেও বিধবা বিবাহের পক্ষে আইন প্রণয়নে সক্ষম হন। কিন্তু বহুবিবাহ, কৌলিন্যপ্রথা দূরীকরণের জন্য আন্দোলন করেও সাফল্য পাননি। দরিদ্র ব্রাহ্মণ-সন্তান বিদ্যাসাগর দানশীলতার কারণে দয়ার সাগর বা করুণাসাগর নামেও খ্যাত।


গদ্যভাষায় অবদান : বিদ্যাসাগর বাংলা গদ্যভাষার প্রথম সার্থক শিল্পী। তাঁর রচিত ‘বর্ণপরিচয়’ (১ম ও ২য় ভাগ), ‘বোধোদয়’, ‘কথামালা’, ‘আখ্যানমঞ্জুরী' গ্রন্থ উল্লেখযোগ্য। এছাড়াও ‘শকুন্তলা’, ‘সীতার বনবাস’, ‘ভ্রান্তিবিলাস' প্রভৃতি অনুবাদ গ্রন্থও মৌলিক রচনার মর্যাদা পেয়েছে।


উপসংহার : বিদ্যাসাগর চরিত্রের দুটি প্রধান বৈশিষ্ট্য—(১) ‘অক্ষয় মনুষ্যত্ব’ (২) ‘অজেয় পৌরুষ'। বস্তুত বিদ্যাসাগরের দয়া-মাতৃভক্তি-কর্মকুশলতা সবকিছুর মূলে চরিত্রের ওই দুটি বৈশিষ্ট্য সক্রিয় ছিল। ১৮৯১ খ্রিস্টাব্দের ২৯ জুলাই বিদ্যাসাগরের দেহাবসান হন।

অনুরূপ রচনা : বীরসিংহের সিংহশিশু। তোমার প্রিয় মনীষী।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url