বেগম রোকেয়া প্রবন্ধ রচনা Class 5, 6, 7, 8, 9
প্রবন্ধ রচনা : বেগম রোকেয়া
[রচনা সংকেত : ভূমিকা – সংক্ষিপ্ত জীবন কথা – কর্মজীবন — উল্লেখযোগ্য কীর্তি—উপসংহার।]
ভূমিকা : বিসর্জন করা প্রত্যেক মানুষের অবশ্য কর্তব্য। সে ছেলেই হোক বা মেয়ে, প্রত্যেকেরই শিক্ষিতমানুষ হওয়ার অধিকার আছে। কিন্তু মুসলিম সমাজে একসময় মেয়েদের লেখা-পড়ার অধিকার ছিল না। সংরক্ষণশীল মুসলিম সমাজের এই ভুল নিয়মের বিরুদ্ধে যিনি শৈশব থেকেই সংঘাম ঘোষণা করেছিলেন এবং নিজে ঝুঁকি নিয়ে পড়াশোনা করে নিজেকে শিক্ষিত করেছিলেন এবং সমাজকে পরিবর্তন করার এক নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়েছিলেন, তিনিই হলেন বেগম রোকেয়া।
সংক্ষিপ্ত জীবন কথা : বাংলাদেশের রংপুর জেলার পায়রাবন্দ গ্রামে ১৮৯০ সালে তিনি জন্মগ্রহণ করেছিলেন। বাবার নাম আবু আলি সাহেব। মায়ের নাম রাহাতুন্নেসা। ১৮৯৬ সালে ষোল বছর বয়সে রোকেয়ার বিয়ে হয়। স্বামীর নাম সৈয়ত সাখাওয়াত হোসেন। রোকেয়া স্বামীর সঙ্গে বিহারেরভাগলপুরে একসময় থাকতেন। তখনও তিনি পড়াশোনা চালিয়ে যেতেন।
কর্মজীবন : স্বামী সাখাওয়াত হোসেন তার স্ত্রী লেখাপড়ায় উৎসাহ দিতেন। ফলস্বরূপ রোকেয়া আনেক কিছু শিখে ফেললেন। গল্প, কবিতা লিখে ফেললেন। মুসলিম মেয়েদের লেখাপড়ার প্রয়োজনের কথা তিনি বারে বারে বলেছেন। পত্রিকায় ছাপা হতে লাগল তাঁর সব লেখা। সমাজের প্রত্যেক মানুষের মনে হতে লাগল যে সমাজে মেয়েদেরও লেখা-পড়া শেখার দরকার। সমাজে মেয়েরা যাতে করে লেখা-পড়া শিখতে পারে তারজন্য তিনি স্বামীর সহযোগিতায় ভাগলপুরে একটি বালিকা বিদ্যালয় স্থাপন করলেন।
উল্লেখযোগ্য কীর্তি : স্বামী মারা যাওয়ার পর তিনি ভাগলপুর ছেড়ে কলকাতায় চলে এলেন। এখানে স্বামীর নামে প্রতিষ্ঠা করলেন সাখাওয়াত মেমোরিয়াল গার্লস হাই স্কুল। যে স্কুলটি বর্তমানে কলকাতার একটি স্বনামধন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এই স্কুল করতে গিয়ে তিনি অনেক বাধা পেয়েছিলেন। কিন্তু তিনি পিছপা না হয়ে মাত্র ৮জন ছাত্রী নিয়ে স্কুল শুরু করেছিলেন।
উপসংহার : ১৯৩২ সালে ৯ ডিসেম্বর এই মহীয়সী নারীর জীবনাবসান হয়। কিন্তু আজও আমরা তাঁকে স্মরণ করি। মানুষ মারা যায় কিন্তু তার স্মরণীয় কীর্তি আজও আমাদের বাঙালির হৃদয়ে জ্বলজ্বল করছে। মুসলিম মেয়েদের শিক্ষার প্রসারের জন্য বেগম রোকেয়া আজও স্মরণীয়।