বিকল্প চিন্তা ও উদ্যোগ প্রশ্ন উত্তর pdf|মাধ্যমিক ইতিহাস পঞ্চম অধ্যায় প্রশ্ন উত্তর PDF

WhatsAp Group Join Now
Telegram Group Join Now

বিকল্প চিন্তা ও উদ্যোগ বৈশিষ্ট্য ও পর্যালোচনা দশম শ্রেণির ইতিহাসের প্রশ্ন উত্তর |মাধ্যমিক ইতিহাস পঞ্চম অধ্যায় প্রশ্ন উত্তর PDF |Class 10 history 5th chapter question in bengali pdf


আজ আমি তোমাদের জন্য নিয়ে এসেছি  দশম শ্রেণির ইতিহাসের পঞ্চম অধ্যায় বিকল্প চিন্তা ও উদ্যোগ  প্রশ্ন উত্তর PDF। Class X fifth chapter question answer Pdf in bengali | Madhyamik history 5th chapter question answer pdf |WBBSE পরীক্ষা প্রস্তুতির জন্য দশম শ্রেণি ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উত্তর pdf গুরুত্বপূর্ণ ভাবে তোমাকে সাহায্য করবে।


তাই দেড়ি না করে এই পোস্টের নীচে দেওয়া Download লিংকে ক্লিক করে বিকল্প চিন্তা ও উদ্যোগ  প্রশ্ন উত্তর pdf download । Class x History 5th chapter Question answer in Bengali Pdf ডাউনলোড করো । এবং প্রতিদিন বাড়িতে বসে প্রাক্টিস করে থাকতে থাক।ভবিষ্যতে আরো গুরুত্বপূর্ণ Note ,Pdf , Current Affairs,ও প্রতিদিন মকটেস্ট দিতে আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন।



মাধ্যমিক ইতিহাসের বিকল্প চিন্তা ও উদ্যোগ প্রশ্ন উত্তর নিচে দেওয়া হলো।

বিকল্প চিন্তা ও উদ্যোগ  mcq প্রশ্ন Pdf

ANS:- PDF Download link Click here 


বিকল্প চিন্তা ও উদ্যোগ  1 নং প্রশ্ন উত্তর|
দশম শ্রেণি ইতিহাস পঞ্চম অধ্যায় 1 নম্বরের গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উত্তর [একটি বাক্যে উত্তর দাও]

1. বাংলা ভাষায় প্রথম প্রকাশিত বিজ্ঞানমূলকপত্রিকার নাম লেখো। বিকল্প চিন্তা ও উদ্যোগ

উত্তর: বাংলা ভাষায় প্রথম প্রকাশিত বিজ্ঞানমূলক পত্রিকার নাম বিজ্ঞান সেবধি।

2. কত খ্রিস্টাব্দে জিয়োলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়া প্রতিষ্ঠিত হয়?

উত্তর: ১৮৫০ খ্রিস্টাব্দে জিয়োলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়া প্রতিষ্ঠিত হয়।

3.কেমিক্যাল রিসার্চ স্কুল কার উদ্যোগে স্থাপিত হয়?

উত্তর: আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের উদ্যোগে কেমিক্যাল রিসার্চ স্কুল স্থাপিত হয়।

4. বেঙ্গল টেকনিক্যাল ইন্সটিটিউট-এর প্রথম অবৈতনিক অধ্যক্ষ কে ছিলেন?

উত্তর: বেঙ্গল টেকনিক্যাল ইন্সটিটিউট-এর প্রথম অবৈতনিক অধ্যক্ষ ছিলেন প্রমথনাথ বসু।

5. বাংলা ভাষায় বিজ্ঞানের প্রথম পাঠ্যপুস্তক কে রচনা করেন?

উত্তর: বাংলা ভাষায় বিজ্ঞানের প্রথম পাঠ্যপুস্তক রচনা করেন ইয়েটিস।

6. হ্যালহেড-এর রচিত ব্যাকরণ গ্রন্থটি কোথায় মুদ্রিত হয়?

উত্তর: হ্যালহেড-এর রচিত ব্যাকরণ গ্রন্থটি হুগলির জন অ্যান্ড্রুজ-এর ছাপাখানায় মুদ্রিত হয় |

7. কার উদ্যোগে কোম্পানির প্রেস প্রতিষ্ঠিত হয়?

উত্তর: চার্লস উইলকিন্স-এর উদ্যোগে কোম্পানির প্রেস প্রতিষ্ঠিত হয়।

8. উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী ছোটোদের জন্য কোন্ মাসিক পত্রিকা প্রকাশ করেন?

উত্তর: উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী ছোটোদের জন্য যে সন্দেশ নামক মাসিক পত্রিকা প্রকাশ করেন।

9. অক্ষয়কুমার দত্ত রচিত 'বিজ্ঞানমূলক গ্রন্থের নাম লেখো।

উত্তর: অক্ষয়কুমার দত্ত রচিত বিজ্ঞানমূলক গ্রন্থের নাম হল পদার্থবিদ্যা

10. কলকাতা বিজ্ঞান কলেজের রসায়ন বিভাগের পালিত অধ্যাপক পদে প্রথম কে নিযুক্ত হন?

উত্তর: বিজ্ঞানী প্রফুল্লচন্দ্র রায় প্রথম কলকাতা বিজ্ঞান কলেজের রসায়ন বিভাগের পালিত অধ্যাপক পদে নিযুক্ত হন।

11. বসু বিজ্ঞান মন্দির করে প্রতিষ্ঠিত হয়?

উত্তর: ১৯১৭ খ্রিস্টাব্দে বসু বিজ্ঞান মন্দির প্রতিষ্ঠিত হয়।

12. বেঙ্গল ন্যাশনাল কলেজের প্রথম অধ্যক্ষ কে ছিলেন?

উত্তর: অরবিন্দ ঘোষ ছিলেন বেঙ্গল ন্যাশনাল কলেজের প্রথম অধ্যক্ষ।

13. বোলপুরে শান্তিনিকেতন আশ্রম কে প্রতিষ্ঠা করেন?

উত্তর: বোলপুরে শান্তিনিকেতন আশ্রম প্রতিষ্ঠা করেন মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর।

14. বিশ্বভারতী করে প্রতিষ্ঠিত হয়?

উত্তর: ১৯২১ খ্রিস্টাব্দে বিশ্বভারতী প্রতিষ্ঠিত হয়।


মাধ্যমিক ইতিহাস পঞ্চম অধ্যায় 2 নম্বরের প্রশ্ন|

1. বাংলায় সমাজসংস্কারের ক্ষেত্রে ছাপাখানার ভূমিকা উল্লেখ করো।

উত্তর: বাংলায় ছাপাখানার প্রসারের ফলে বহু পুস্তিকার প্রকাশ ঘটতে থাকে। এইসময় প্রকাশিত

প্যারিচাঁদ মিত্রের আলালের ঘরের দুলাল, কালীপ্রসমি সিংহের হুতোম প্যাঁচার নকশা, রামনারায়ণের কুলীন সর্দার প্রভৃতি একদিকে যেমন তৎকালীন সামাজিক কুপ্রথার বিরুদ্ধে ব্যাঙ্গাত্মক প্রতিবাদ জানায়, অন্যদিকে রামমোহন রায়, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর প্রমুখের বিভিন্ন সমাজসংস্কারমূলক লেখা মুদ্রিত হওয়ার ফলে বাংলায় সামাজিক চেতনা প্রসারের সম্ভাবনা আরও উজ্জ্বল হয়।

2. বাংলার ছাপাখানার উন্নতিতে সুকুমার রায়ের অবদান কী ছিল?

উত্তর : বাংলার ছাপাখানার উন্নতিতে সুকুমার রায়ের ভূমিকা অনস্বীকার্য | তিনি তাঁর পিতা উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী প্রতিষ্ঠিত ইউ রায় অ্যান্ড সন্স কোম্পানির সাথে যুক্ত ছিলেন। ছাপাখানা ব্যবসায় অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্য ইংল্যান্ডে ইউনিভার্সিটি অব ম্যাঞ্চেস্টারের মুদ্রণপ্রযুক্তি বিভাগ থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে আসেন এবং বাংলার ছাপাখানার জগতে উন্নতমানের মুদ্রণপ্রযুক্তির উদ্ভাবন ঘটান।

3. কার উদ্যোগে কেন ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয় ?

উত্তর: ১৮০০ খ্রিস্টাব্দে লর্ড ওয়েলেসলির উদ্যোগে ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়। এই কলেজ প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য ছিল ইংল্যান্ড থেকে আগত ব্রিটিশ সিভিলিয়ানদের ভারতীয় ভাষা, সংস্কৃতি, রীতিনীতি ও বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া।

4. ইউ রায় অ্যান্ড সন্স কোম্পানি বিখ্যাত কেন ?

উত্তর: ১৯১৩ খ্রিস্টাব্দে উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী প্রতিষ্ঠিত ইউ রায় অ্যান্ড সন্স কোম্পানি অল্পদিনের

মধ্যেই জাতীয় ছাপাখানার জগতে সাড়া ফেলে দেয়। হাফটোন ব্লক, ৬০ ডিগ্রি স্ক্রিন ও ডায়াফ্রামের সাহায্যে থ্রি কালার হাফটোন ছবির নেগেটিভ তৈরি, স্ক্রিনের দূরত্ব নির্ণয় করার জন্য যন্ত্র তৈরি প্রভৃতি নানা প্রযুক্তির উদ্ভাবনের ফলে ইউ রায় অ্যান্ড সঙ্গ জনপ্রিয়তা অর্জন করে।

5 রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কী উদ্দেশ্যে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করেন?

উত্তর: বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর মানুষে মানুষে ভেদাভেদ মিটিয়ে তাদের এক মুক্ত পরিবেশে শিক্ষাচর্চার সুযোগ করে দিতে চেয়েছিলেন। বিদ্যালয়ের আবদ্ধ পরিবেশের বাইরে প্রকৃতির কোলে শিক্ষাপ্রদান ছিল তাঁর প্রধান উদ্দেশ্য। এই উন্মুক্ত বাতাবরণের সূত্র ধরে রবীন্দ্রনাথ বিশ্বভারতীর মাধ্যমে প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য সংস্কৃতির সমন্বয়সাধন করতে চেয়েছিলেন।


দশম শ্রেণির ইতিহাসের পঞ্চম অধ্যায়ের শর্ট কোশ্চেন
দশম শ্রেণির ইতিহাস পঞ্চম অধ্যায় বিকল্প চিন্তা ও উদ্যোগ প্রশ্ন উত্তর পিডিএফ|

6. কোন্ কোন্ বিষয়কে রবীন্দ্রনাথ পাঠ্যক্রমের অন্তর্ভুক্ত করতে চেয়েছিলেন?

উত্তর: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মতে বিদ্যালয় হবে মানবসংস্কৃতি অনুশীলনের কেন্দ্র। এই জন্য তিনি পাঠ্যক্রমে বিশ্বপ্রকৃতির সৌন্দর্য উপলব্ধি করার জন্য যেমন সাহিত্য, শিল্পকলা, সংগীত, নৃত্য ও পল্লি উন্নয়নমূলক কাজকে অন্তর্ভুক্ত করতে চেয়েছিলেন তেমনই বিজ্ঞানশিক্ষার প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করে বিজ্ঞান ও দর্শনকেও পাঠ্যক্রমের অন্তর্ভুক্ত করার পক্ষপাতী ছিলেন।

7. বিজ্ঞান কলেজ কত খ্রিস্টাব্দে এবং কেন প্রতিষ্ঠিত হয়?

উত্তর: ১৯১৪ খ্রিস্টাব্দে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে স্থাপিত হয় বিজ্ঞান কলেজ। এই কলেজ স্থাপনার ফলে সুষ্ঠুভাবে বিজ্ঞান গবেষণার কাজ গতিশীল হয়ে ওঠে। এই কলেজেই প্রখ্যাত বিজ্ঞানী সি ভি রমনের নেতৃত্বে বিজ্ঞান গবেষণার কাজ সাফল্যেরসঙ্গে পরিচালিত হয়েছিল।

৪. গণশিক্ষার প্রসারে বটতলার প্রকাশনী সংস্থাগুলির ভূমিকা কী ছিল?

উত্তর: গণশিক্ষার প্রসারে বটতলার প্রকাশনী সংস্থাগুলি অনবদ্য ভূমিকা পালন করেছিল। কম

দামে বই ছাপানো থেকে শুরু করে হিন্দু-মুসলিম ঐক্যসাধন, রামায়ণ, মহাভারত ও বিভিন্ন নীতিশাস্ত্রের প্রসার এবং বর্ণপরিচয়, বোধোদয়, কথামালা, আখ্যানমঞ্জুরী, ধারাপাত প্রভৃতি শিশুপাঠ্য রচনায় এই প্রকাশনী সংস্থাগুলি চিরস্মরণীয় অবদানের স্বাক্ষর রেখেছে।

9. ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ কীভাবে বাংলা মুদ্রণশিল্পে গতি এনেছিল?

উত্তর: প্রশাসনিক কাজে প্রতিষ্ঠিত ফোর্ট উইলিয়াম ব্রিটিশঅসামরিক কর্মচারীদের (সিভিলিয়ানদের) শিক্ষাদানের জন্য বাংলায় মুদ্রিত পাঠ্যপুস্তকের প্রয়োজন পড়ে। সেই সূত্রে ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ শ্রীরামপুর মিশনের ছাপাখানাসহ সংস্কৃত প্রেস, হিন্দুস্থানি প্রেস প্রভৃতিকে বই ছাপার বরাত দিত।

10. চার্লস উইলকিন্স বিখ্যাত কেন?

উত্তর: চার্লস উইলকিন্স ছিলেন একজন প্রাচ্যবাদী পণ্ডিত। তাঁর তৈরি বাংলা মুদ্রাক্ষরের সাহায্যেই

হ্যালহেড তাঁর বাংলা গ্রামার বইটিতে উদাহরণরূপেবাংলা মুদ্রণের ব্যবহার করেন। এই কাজের জন্য তিনি বাংলার গুটেনবার্গ নামে অভিহিত হন |

11. পঞ্চানন কর্মকার বিখ্যাত কেন?

উত্তর: বাংলা মুদ্রাক্ষর তৈরির ক্ষেত্রে উইলকিন্সের সহযোগী ছিলেন হুগলি নিবাসী শিল্পী পঞ্চানন কর্মকার। তাঁর প্রচেষ্টাতেই বাংলা মুদ্রাক্ষর নির্মাণ একটি স্থায়ী শিল্পে পরিণত হয়।

12. ছাপাখানার প্রসারে স্কুল বুক সোসাইটি বিখ্যাত কেন?

উত্তর: ডেভিড হেয়ারের উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত স্কুল বুক সোসাইটির উদ্দেশ্য ছিল অল্প খরচে শিক্ষার্থীদের কাছে পাঠ্যপুস্তক সরবরাহ করা। এইসোসাইটি নিজের ছাপাখানার পাশাপাশি শ্রীরামপুরমিশন প্রেসসহ অন্যান্য প্রেসেও বই ছাপানোর ব্যবস্থা করেছিল।

13. সংস্কৃত প্রেস বিখ্যাত কেন?

উত্তর: ১৮৪৭ খ্রিস্টাব্দে পণ্ডিত মদনমোহনত র্কালঙ্কার ও ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর যৌথভাবে

কলকাতার ৬২ নং আমহার্স্ট স্ট্রিটে সংস্কৃত প্রেস প্রতিষ্ঠা করেন। এখান থেকে বিদ্যাসাগর রচিত বিভিন্নগ্রন্থ প্রকাশিত হয়।

4 ইউ রায় অ্যান্ড সন্স কী?

উত্তর: উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত প্রকাশনা সংস্থার নাম হল ইউ রায় অ্যান্ড সঙ্গ। তিন-চার রকমের রং ব্যবহার করে ছোটোদের জন্য মজার বই প্রকাশ করা ছিল এই প্রকাশনার অন্যতম বৈশিষ্ট্য।

15. ব্রিটিশ শাসনপর্বে কীভাবে বাংলায় বিজ্ঞান ও কারিগরি শিক্ষার প্রাথমিক বিকাশ ঘটে ?

উত্তর: আঠারো শতকে এশিয়াটিক সোসাইটি ও বোটানিক্যাল গার্ডেন এবং উনিশ শতকে অ্যাগ্রো- হটিকালচারাল সোসাইটি ও কলকাতা মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে বাংলায় বিজ্ঞান ও কারিগরি শিক্ষার প্রাথমিক বিকাশ ঘটে।

16. জাতীয় শিক্ষাপরিষদ প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য কী ছিল?

উত্তর: জাতীয় শিক্ষাপরিষদ প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যগুলি হল—[1] ব্রিটিশ কর্তৃক প্রবর্তিত শিক্ষানীতির বিরোধিতা করা। [2] দেশের প্রয়োজনে স্বদেশি ধাঁচে এক বিকল্প শিক্ষাব্যবস্থা গড়ে তোলা।

17. শান্তিনিকেতন আশ্রম কী?

উত্তর: মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর বোলপুরে নির্জনে ব্রহ্ম উপাসনা করার জন্য একটি আশ্রম প্রতিষ্ঠা করেন, যা শান্তিনিকেতন আশ্রম নামে পরিচিত হয়। পরবর্তীকালে এই আশ্রমকে কেন্দ্র করেই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ব্রহ্মচর্যাশ্রম নামক বিদ্যালয় ও বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন।

18. রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ব্রক্ষ্মচর্যাশ্রম প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য কী ছিল?

উত্তর: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কর্তৃক শান্তিনিকেতনে ব্রহ্মচর্যাশ্রম প্রতিষ্ঠার মূল মূল উদ্দেশ্য ছিল—

[1] আবাসিক ব্রহ্মচর্যাশ্রম প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে গুরু-শিষ্য সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করা। [2) প্রকৃতি ও মানুষের মধ্যে সম্পর্ক স্থাপন করে এক নতুন ধরনের শিক্ষাব্যবস্থা গড়ে তোলা।


মাধ্যমিক ইতিহাসের পঞ্চম অধ্যায়ের প্রশ্ন উত্তর|দশম শ্রেণির ইতিহাস পঞ্চম অধ্যায় বড় প্রশ্ন|


1.বাংলায় শিক্ষারবিস্তারে ছাপাখানার অবদান আলোচনা করো।

উত্তর

বাংলায় শিক্ষাবিস্তারে ছাপাখানার ভূমিকা ছিল খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ছাপাখানার বিকাশের ফলে অল্প সময়ের

মধ্যে বহু পাঠ্যপুস্তক প্রকাশিত হতে থাকে। এই সময়ের কয়েকটি উল্লেখযোগ্য প্রকাশনী সংস্থা হল শ্রীরামপুর মিশনারি প্রেস, ইউ রায় অ্যান্ড সন্স প্রভৃতি।

মিশনারিদের ভূমিকা: এই ব্যাপারে শ্রীরামপুর ব্যাপটিস্ট মিশনারির নিজস্ব ছাপাখানা উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে। এই ছাপাখানা থেকেই প্রকাশিত " হয় উইলিয়াম কেরি সম্পাদিত বাংলা ব্যাকরণ, দেবনাগরী হরফে মুদ্রিত হয় সংস্কৃত ব্যাকরণ, কানাড়া, তেলুগু, বাংলা প্রভৃতি ভাষায় বাইবেলের অনুদিত গ্রন্থ না প্রভৃতি। ১৮০০-৩২ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে শ্রীরামপুর ছাপাখানা থেকে মুদ্রিত হয় প্রায় ২ লক্ষ ১২ হাজার বই |


শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ভূমিকা : ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ, হিন্দু কলেজ, ক্যালকাটা স্কুল বুক সোসাইটি প্রভৃতি প্রতিষ্ঠানের জন্য বহু পাঠ্যপুস্তক মুদ্রিত হয় এই ছাপাখানাগুলি থেকে।

বটতলা সাহিত্যের ভূমিকা: গণশিক্ষার প্রসারে বটতলা প্রকাশনীর ছাপাখানাগুলিও প্রশংসার দাবি রাখে। এই ছাপাখানা থেকে কম দামে প্রকাশিত হতে থাকে রামায়ণ, মহাভারত, বর্ণমালা, বোধোদয়, কথামালা, প্রভৃতি। এভাবে এই প্রকাশনী সংস্থাগুলি শিক্ষাবিস্তারে চিরস্মরণীয় অবদানের স্বাক্ষর রেখেছে।


ছাপাখানা শিল্পে চার্লস উইলকিসের অবদান মূল্যায়ন করো।

উত্তর

বাংলার ছাপাখানার ইতিহাসে প্রবাদপ্রতিম ব্যক্তি হলেন চার্লস উইলকিন্স | তাঁকে বাংলা মুদ্রণ শিল্পের

জনক বলা হয়। তিনিই প্রথম ধাতুনির্মিত সঞ্চালনযোগ্য বাংলা মুদ্রাক্ষরের জন্মদাতা ছিলেন।

[1] ছাপাখানা স্থাপন : তিনি পঞ্চানন কর্মকার ও জোসেফ শেফার্ডের সাহায্যে নতুন বাংলা হরফেই ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির কর্মচারী হিসেবে চার্লস উইলকিন্সের উদ্যোগে ১৭৭৮ খ্রিস্টাব্দে হুগলির

চুঁচুড়ায় কোম্পানির নিজস্ব ছাপাখানা প্রতিষ্ঠা করেন। এদের উদ্যোগে মালদাতেও কোম্পানির ছাপাখানা স্থাপিত হয়।

[2] মুদ্রণ : চার্লস উইলকিন্সের উদ্যোগে কোম্পানির ছাপাখানা থেকে প্রথম মুদ্রিত হয় হ্যালহেডের লেখা গ্রামার অব দ্য বেঙ্গল ল্যাঙ্গুয়েজ গ্রন্থ | মুদ্রণ শিল্পে অসাধারণ অবদানের জন্য উইলকিন্সকে বাংলার

ক্যাক্সটন রূপে অভিহিত করা হয়। 


মাধ্যমিক ইতিহাস পঞ্চম অধ্যায় 4 নম্বরের প্রশ্ন pdf

মিশনারিদের ছাপাখানার বিস্তারে অবদান লেখো 

বাংলা ছাপাখানার বিকাশে খ্রিস্টান মিশনারিদের অবদান চিরস্মরণীয় | ব্যাপটিস্ট মিশনের প্রতিনিধি

উইলিয়াম কেরি তাঁর দুই সহযোগী জোশুয়া মার্শম্যান ও উইলিয়াম ওয়ার্ডের সহযোগিতায় ১৮৬৮ খ্রিস্টাব্দে সেরা গড়ে তোলেন শ্রীরামপুর মিশন প্রেস। এই ছাপাখানাটি এশিয়ার সর্ববৃহৎ ও বিশ্বের অন্যতম ছাপাখানারূপে খ্যাতিলাভ করে।

ছাপাখানার প্রতিষ্ঠা : ১৭৯৭ খ্রিস্টাব্দে উইলিয়াম কেরি কলকাতা থেকে কাঠের ছাপার সামগ্রী সংগ্রহ করে ৬ হাজার টাকায় কেনা একটি ছোটো বাড়িতে শ্রীরামপুর মিশন প্রেস প্রতিষ্ঠা করেন।

12) বাইবেলের অনুবাদ : শ্রীরামপুর মিশন প্রেস থেকে বাংলা, হিন্দি, অসমিয়া, ওড়িয়া, মারাঠি, সংস্কৃত প্রভৃতি ভাষায় বাইবেলের অনুবাদ প্রকাশিত হয়। এ ছাড়াও রামায়ণ ও মহাভারতসহ বিভিন্ন প্রাচীন ভারতীয় সাহিত্যের অনুবাদ, হিতোপদেশ, বিভিন্ন গবেষণামূলক প্রবন্ধ, রামরাম বসুর প্রতাপাদিত্য চরিত প্রভৃতি গ্রন্থও এই মিশন প্রেস থেকে প্রকাশিত হয়।

(3) পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণ: এ ছাড়া ফোর্ট উইলিয়াম কলেজের ছাত্রদের জন্য শ্রীরামপুর মিশন প্রেস থেকে

পাঠ্যবই ছাপানো হত। ১৮০১ থেকে ১৮০২ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে এই প্রেস থেকে চল্লিশটি ভাষায় দুই লক্ষাধিক বই প্রকাশিত হয়। যার মধ্যে বেশিরভাগ ছিল অনুদিত বাইবেল, খ্রিস্টানধর্ম বিষয়ে প্রচার পুস্তিকা প্রভৃতি।

[4] পত্রিকা ও সাহিত্যিক রচনাবলির মুদ্রণ : শ্রীরামপুর মিশন প্রেস থেকে সমাচার দর্পণ, দিগদর্শন প্রভৃতি পত্রিকা ছাপা হত। এই প্রেস থেকে মৃত্যুঞ্জয় বিদ্যালঙ্কারের বত্রিশ সিংহাসন, রাজাবলি, চণ্ডিচরণ মুনশি, ভরতচন্দ্রের অন্নদামঙ্গল, রামমোহনের গৌড়ীয় বাংলা ব্যাকরণ প্রভৃতি গ্রন্থ মুদ্রিত হয়।


উপসংহার: সুতরাং বলা যায় গদ্যসাহিত্য, জ্ঞানবিজ্ঞান ও শিক্ষার প্রচারে মিশনারিদের অবদান চিরস্মরণীয়।


4. ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন ফর কাল্টিভেশন অব সায়েন্স বা ভারতবর্ষীয় বিজ্ঞানসভা সম্বন্ধে আলোচনা করো।

ভারতে বিজ্ঞানচর্চার ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা হল ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন ফর দ্য কাল্টিভেশন অব সায়েন্স-এর প্রতিষ্ঠা (২৯ জুলাই, ১৮৭৬ খ্রি.)।

[1] প্ৰতিষ্ঠা : বিখ্যাত চিকিৎসক মহেন্দ্রলাল সরকার অধ্যাপক ফাদার ইউজিন লাফের সহযোগিতায় কলকাতার বউবাজার স্ট্রিটে এই মৌলিক গবেষণাকেন্দ্রটি স্থাপন করেন। পদার্থ ও রসায়ন বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখার নিয়মিত গবেষণা, বিজ্ঞানবিষয়ক বক্তৃতার আয়োজন প্রভৃতির জন্য এই ভারতবর্ষীয় বিজ্ঞানসভা প্রতিষ্ঠিত হয়। এই প্রতিষ্ঠানটির নিজস্ব পত্রিকা ইন্ডিয়ান জার্নাল অব ফিজিক্সসহ দেশ-বিদেশের বিভিন্ন পত্রিকায় এখানকার বিজ্ঞানীদের গবেষণার কাজ প্রকাশিত হয়।

[2] বিজ্ঞানীগণ : এখানে যাঁরা গবেষণার কাজ করেছেন তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন জগদীশচন্দ্র বসু, মেঘনাদ সাহা প্রমুখ। বিশ্ববিখ্যাত বিজ্ঞানী সি ভি রমন এখানেই তাঁর বিখ্যাত রমন এফেক্ট আবিষ্কার করেন। এই গবেষণার জন্য তিনি ১৯৩০ খ্রিস্টাব্দে পদার্থবিদ্যায় নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। ডা. নীলরতন সরকার, সত্যেন্দ্রনাথ বসু প্রমুখ ভারতীয় বিজ্ঞানসভার অধিকর্তারূপে কাজ করে গেছেন।

[3] গবেষণা বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা : বিখ্যাত ভারতীয় বিজ্ঞানী মেঘনাদ সাহা এখানে একটি সক্রিয় গবেষণা বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করে এক্স রশ্মি, আলোকবিজ্ঞান, চৌম্বকত্ব ইত্যাদি নানা বিষয়ে মৌলিক গবেষণার কাজকে উৎসাহ দিয়েছিলেন।

উপসংহার: পরবর্তীকালে যাদবপুরে ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন ফর দ্য কাল্টিভেশন অব সায়েন্সের

নতুন ক্যাম্পাস খোলার ব্যবস্থা করেন তদানীন্তন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী ডা. বিধানচন্দ্র রায়। ভারতে আধুনিক বিজ্ঞানচর্চার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন ফর দ্য কাল্টিভেশন অব সায়েন্স-এর বৈজ্ঞানিকরা।


ছাপাখানায় বটতলা সাহিত্যের ভূমিকা লেখো।

বাংলা মুদ্রণ শিল্পের একটি চিরস্মরণীয় অবদান হল বাংলা সাহিত্যের উদ্ভব। ১৮৪০ থেকে ১৮৭০

খ্রিস্টাব্দের মধ্যে বটতলার বেশাতি নামে বাংলায় এক নতুন প্রকাশনা ধারার সূচনা হয়। তাই একে বটতলা সাহিত্য বলা হত।

(1) প্রকাশিত বিভিন্ন গ্রন্থ : এই ধারার প্রকাশকছিলেন বিশ্বস্তর দেব ও ভবানীচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়।তাঁদের প্রকাশিত বইগুলি নব্য ইংরেজি শিক্ষিতদের জ্ঞানপিপাসা মেটাতে সক্ষম হয়েছিল। বটতলা সাহিত্যের শ্রেষ্ঠ নিদর্শন হল নববাবু বিলাস, কলিকাতা কমলালয়, করুণা নিধান, মুকুন্দরামের চণ্ডিমঙ্গল, কালীপ্রসন্ন সিংহের বাবু রামনারায়ণ, তর্করত্নের কুলীন কুলসর্বস্ব প্রভৃতি।

[2] বটতলা প্রকাশক : বটতলার প্রকাশকদের মধ্যে নৃত্যলাল শীল, নৃত্যলাল দত্ত, তারাচাঁদ দাস প্রমুখ অল্প দামে ছবি ও ছাপাবই বিক্রি করে তা সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দিয়েছিলেন।

[3] বটতলা সাহিত্যকেন্দ্র : চিতপুর, শোভাবাজার, জোড়াসাঁকো, মির্জাপুর, শিলাইদহ, বউবাজার প্রভৃতি

স্থানে বটতলা সাহিত্যের প্রকাশকরা ব্যাবসায়িক উদ্যোগে ছাপাখানা স্থাপন করেছিলেন।

উপসংহার: সুতরাং বলা যায় যে, বাংলা সাহিত্যে ও মুদ্রণ শিল্পের বিকাশে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে বটতলা সাহিত্য ও প্রকাশনীগুলি |


কারিগরি শিক্ষার প্রসারে বেঙ্গল টেকনিক্যাল ইন্সটিটিউটের অবদান কী ছিল?

বাংলা তথা ভারতে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনকালেসরকারি শিক্ষাব্যবস্থার বিকল্প রূপে একটি গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে ওঠে বেঙ্গল টেকনিক্যাল ইন্সটিটিউট।

[) উদ্দেশ্য : বেঙ্গল টেকনিক্যাল ইন্সটিটিউট স্থাপনের প্রধান উদ্দেশ্য ছিল বঙ্গভঙ্গ-বিরোধীস্বদেশি আন্দো এর কর্মসূচিকে বাস্তবায়িত করতে জাতীয় উদ্যোগের মধ্যে দিয়ে বিকল্প শিক্ষার ব্যবস্থা করা। এক্ষেত্রে, বাংলা তথা ভারতে কারিগরি শিক্ষার বিকাশের জন্য এই প্রতিষ্ঠানটিকে গড়ে তোলা হয়।

[2] প্রতিষ্ঠা : ১৯০৬ খ্রিস্টাব্দে প্রখ্যাত আইনজীবী তারকনাথ পালিতের উদ্যোগে কলকাতায় স্থাপিত হয় বেঙ্গল টেকনিক্যাল ইন্সটিটিউট। ১৯১০ খ্রিস্টাব্দে এই প্রতিষ্ঠানটি বেঙ্গল ন্যাশনাল কলেজের সঙ্গে একত্রিত হয়ে এর নতুন নাম হয় বেঙ্গল ন্যাশনাল কলেজ অ্যান্ড টেকনিক্যাল স্কুল। এই প্রতিষ্ঠানটি স্থাপনে ডা. নীলরতন সরকার, রাসবিহারী ঘোষ, মহারাজা মনীন্দ্রচন্দ্র নন্দী, উপেন্দ্রনাথ ঘোষ প্রমুখ সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন |

পঠনপাঠন : প্রতিষ্ঠাকাল থেকেই এই শিক্ষা- প্রতিষ্ঠানটিতে পদার্থবিদ্যা, রসায়ন, প্রযুক্তিবিদ্যা, শিল্পপ্রযুক্তি প্রভৃতি বিষয় পড়ানোর ব্যবস্থা করা হয়।

 

জার্নাল প্রকাশ: বেঙ্গল টেকনিক্যাল ইন্সটিটিউটের ছাত্রছাত্রীরা কারিগরি শিক্ষা ও প্রযুক্তির নতুন নতুন ভাবনাগুলিকে প্রচার করার জন্য টেকনামে একটি জার্নাল প্রকাশ করে। এই জার্নালের প্রথম সংখ্যা স্বদেশি যুগে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপনে নিয়োজিত আত্মত্যাগী মহান ব্যক্তিদের উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করা হয়।

5] বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর : বেঙ্গল ন্যাশনাল কলেজ অ্যান্ড টেকনিক্যাল স্কুল ১৯২৮ খ্রিস্টাব্দেকলেজ অব ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনলেজি নামে পরিচিতি লাভ করে। স্বাধীনতা লাভের পর ১৯৫৫ খ্রিস্টাব্দে এটির নামকরণ হয় যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় ।

সার্চ প্রভাব: বেঙ্গল টেকনিক্যাল ইন্সটিটিউটের হাত ধরে বাংলায় কারিগরি ও প্রযুক্তিশিক্ষার অভূতপূর্ব প্রসার ঘটে। বহু শিক্ষিত যুবক এখান থেকে কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে স্বনির্ভর ও সাবলম্বী হয়ে ওঠে। এই প্রতিষ্ঠান থেকে উত্তীর্ণ বহু বাঙালি যুবকের উদ্যোগে বাংলায় গড়ে ওঠে একাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।


দশম শ্রেণীর ইতিহাস পঞ্চম অধ্যায় বিকল্প চিন্তা ও উদ্যোগ

2. বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় সম্বন্ধে আলোচনা করো।

ভূমিকা: বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শিক্ষাভাবনার চূড়ান্ত পরিণতি হল ১৯২১ খ্রিস্টাব্দেশান্তিনিকেতনে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়েরপ্রতিষ্ঠা।

[1] উদ্দেশ্য : রবীন্দ্রনাথের মতে যে-কোনো দেশেরশিক্ষার সাথে সেখানকার জীবনযাত্রার সংযোগ থাকে।কিন্তু তৎকালীন ভারতে পাশ্চাত্য ধাঁচে গড়ে ওঠাশিক্ষাব্যবস্থা তৈরি করত শুধু কেরানি, দারোগাপ্রভৃতি, যদিও ভারতে চাষি, কুমোর প্রভৃতি পেশায়লিপ্ত অনেক মানুষই বসবাস করতেন। তাই রবীন্দ্রনাথ এমন এক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের স্বপ্ন দেখেছিলেন যা ভারতের স্বতন্ত্র চরিত্রকে স্বীকৃতি জানাবে। এ ছাড়াও বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের মাধ্যমে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর মানুষে মানুষে ভেদাভেদ মিটিয়ে তাদের এক মুক্ত পরিবেশে শিক্ষাচর্চার সুযোগ করে দিতে চেয়েছিলেন। বিদ্যালয়ের আবদ্ধ পরিবেশের বাইরে প্রকৃতির কোলে শিক্ষাপ্রদান ছিল তাঁর লক্ষ্য। এই উন্মুক্ত বাতাবরণের সূত্র ধরে রবীন্দ্রনাথ বিশ্বভারতীর মাধ্যমেপ্রাচ্য ও পাশ্চাত্য সংস্কৃতির সমন্বয়সাধন করতে চেয়েছিলেন।

[2] প্রতিষ্ঠা : আশ্রমগুরু রবীন্দ্রনাথ গঠনের কথা প্রথম ব্যক্ত করেছিলেন কয়েকজন গুজরাটি ব্যবসায়ীর কাছে এবং এই বিদ্যালয় গঠনে দীনবন্ধু সি এফ অ্যান্ড্রুজ রবীন্দ্রনাথকে বিশেষভাবে সহযোগিতা করেন। ১৯২১ খ্রিস্টাব্দের জুলাই মাসে ইউরোপ ও আমেরিকা থেকে ঘুরে এসে রবীন্দ্রনাথ বিশ্বভারতীর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন সভার আয়োজন করেন। এরপর ১৯২১ খ্রিস্টাব্দের ডিসেম্বরে মাত্র ১০ জন ছাত্র নিয়ে পণ্ডিত ব্রজেন্দ্রনাথ শীলের সাহায্যে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে পঠনপাঠন শুরু হয়। এর প্রথম অধ্যক্ষ ছিলেন বিধুশেখর ভট্টাচার্য |

[3] দেশি-বিদেশি পণ্ডিত : রবীন্দ্রনাথের আহবানে সাড়া দিয়ে বিশ্বভারতীতে অধ্যাপনার জন্য ছুটে এসেছিলেন বহু দেশি-বিদেশি পণ্ডিত | ব্রজেন্দ্রনাথ শীল তাই বলেছেন, “বিশ্ব ভারতের কাছে এসে পৌঁছোবে সেই বিশ্বকে ভারতীয় করে নিয়ে আমাদের রক্তরাগে

রঞ্জিত করে ভারতের মহাপ্রাণে অনুপ্রাণিত করে আবার সেই প্রাণকে বিশ্বের কাছে প্রতিষ্ঠা করবে।”

[4] শিক্ষাচর্চা : বিশ্বভারতীতে বিজ্ঞান ও কলা উভয়ই বিষয়ই সমান সমাদর লাভ করে। বিশ্বভারতীর বিভিন্ন বিভাগগুলি ছিল—পাঠভবন, শিক্ষাভবন, বিদ্যাভবন, রবীন্দ্রভবন, চিনাভবন, কলাভবন, সংগীত ভবন, হিন্দি ভবন। বিভিন্ন বিষয়ে শিক্ষাদান ছিল এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য। বিশ্বভারতী | [

[5] কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বীকৃতি : ১৯৫১ খ্রিস্টাব্দে বিশ্বভারতী কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদা লাভ করে। এর প্রথম আচার্য হন পণ্ডিত জওহরলাল নেহরু ও প্রথম উপাচার্য হন রবীন্দ্র নন্দন, রথীন্দ্রনাথ ঠাকুর। বর্তমানেও শিক্ষাক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য স্বাক্ষর রেখে চলেছে এই বিশ্ববিদ্যালয় ।


দশম শ্রেণির ইতিহাস বিকল্প চিন্তা ও উদ্যোগ pdf


বিজ্ঞানচর্চায় জগদীশচন্দ্র বসু ও বসু বিজ্ঞান মন্দিরের অবদান আলোচনা করো।

ভূমিকা: উনিশ শতকে বাংলা তথা ভারতের বিজ্ঞানচর্চা ও বিজ্ঞান শিক্ষার প্রসারে যে সকল বিজ্ঞানী

চিরস্মরণীয় অবদানের সাক্ষ্য রেখেছেন, তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু।

[1] কর্মজীবন : কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞানের স্নাতক ডিগ্রি লাভের পর দেশে ফিরে জগদীশচন্দ্র বসু ১৮৮৫ খ্রিস্টাব্দে প্রেসিডেন্সি কলেজে পদার্থবিদ্যার অধ্যাপক হিসেবে তাঁর কর্মজীবন শুরুকরেন।


[2] গবেষণা : গবেষণার মাধ্যমেজগদীশচন্দ্র বিজ্ঞানচর্চাকে উৎকর্ষতা প্রদান করেন | জীববিজ্ঞানে তাঁর অন্যতম শ্রেষ্ঠ অবদান হল উদ্ভিদেরও যে প্রাণ আছে তা প্রমাণ করা। এ ছাড়াও তিনি বেতারে বার্তা প্রেরণ; র‍্যাডারের ব্যবহার; ধাতু, উদ্ভিদ ও প্রাণীর বৈদ্যুতিক, রাসায়নিক, তাপীয় ও যান্ত্রিক উদ্দীপনায়

সাড়া দেওয়া প্রভৃতি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বৈজ্ঞানিক তথ্য গবেষণার মাধ্যমে আবিষ্কার করে আন্তর্জাতিক বিজ্ঞানচর্চাকে সমৃদ্ধ করেন।

[3] বসুবিজ্ঞান মন্দিরের প্রতিষ্ঠা : বিজ্ঞান সাধনায় জগদীশচন্দ্র বসুর চিরস্মরণীয় অবদান হল প্রেসিডেন্সি কলেজের অধ্যাপক পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে ১৯১৭ খ্রিস্টাব্দে কলকাতায় নিজের বাসভবনে বসুবিজ্ঞান মন্দির প্রতিষ্ঠা করা। বিজ্ঞানচর্চার এই কেন্দ্র স্থাপন করতে গিয়ে তিনি অকুণ্ঠ চিত্তে পৈতৃক সম্পত্তি বিক্রি করে বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন।

[5] আবিষ্কার : জগদীশচন্দ্রের অন্যতম আবিষ্কৃত যন্ত্র হল ক্রেস্কোগ্রাফ | এই যন্ত্রের সাহায্যে তিনি উদ্ভিদের প্রাণ এবং অনুভূতি শক্তির অস্তিত্বের প্রমাণ দেন। এ ছাড়া বিজ্ঞানী জগদীশচন্দ্র ফোটোগ্রাফি বিষয়ে গভীর গবেষণায় মনোনিবেশ করে বাড়ির বাগানে স্টুডিও তৈরি করেন। ১৯০০ খ্রিস্টাব্দে প্যারিসে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক পদার্থবিদ্যা কংগ্রেসে জগদীশচন্দ্র তাঁ গবেষণামূলক প্রবন্ধ 'On the similarity of and living substances' পাঠ করেন।

[4] বিজ্ঞানের শাখা স্থাপন : জগদীশচন্দ্র বসু তার নিজের তৈরি বসু বিজ্ঞান মন্দিরে বিশ্বমানেরবিজ্ঞানচর্চা ও গবেষণার জন্য বিজ্ঞানের নানা বিভাগ চালু করেন। এগুলির মধ্যে পদার্থবিদ্যা, রসায়ন, উদ্ভিদবিদ্যা, মাইক্রোবায়োলজি, বায়োকেমেস্ট্রি, বায়োফিজিক্স, পরিবেশ বিজ্ঞান প্রভৃতি বিষয় ছিলউল্লেখযোগ্য।

[5] আন্তর্জাতিক খ্যাতিলাভ : বিজ্ঞানচর্চায় জগদীশচন্দ্র বসু ও তাঁর বসু বিজ্ঞান মন্দির নানান গবেষণা ও আবিষ্কারের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক খ্যাতি লাভ করে। বিজ্ঞান গবেষণায় অসামান্য অবদানের জন্য ব্রিটিশ সরকার তাঁকে 'নাইট' উপাধিতে ভূষিত করেন। এ ছাড়া তিনি ১৯২০ খ্রিস্টাব্দে লন্ডনের রয়্যাল সোসাইটির সদস্যপদ লাভ করেন।

উপসংহার: সর্বোপরি আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু ও তাঁর বসু বিজ্ঞান মন্দির ব্রিটিশ শাসনকালে বিকল্প

শিক্ষাচিন্তার অঙ্গ হিসেবে বিজ্ঞানশিক্ষা ও বিজ্ঞান গবেষণার দরজা উন্মুক্ত করে। এর ফলে ভারতেরবিজ্ঞানচর্চার ইতিহাস এক নতুন ধারায় বইতে শুরু করে।|

দশম শ্রেণির ইতিহাস প্রশ্ন উত্তর পঞ্চম অধ্যায়|

জাতীয় শিক্ষার প্রসারে জাতীয় শিক্ষা পরিষদের ভূমিকা কী ছিল?

ভূমিকা: ১৯০৫ খ্রিস্টাব্দে বঙ্গভঙ্গ-বিরোধী আন্দোলনের অন্যতম কর্মসূচি রূপে গড়ে ওঠে জাতীয় শিক্ষা আন্দোলন | এর পরিণতিতে স্থাপিত হয় জাতীয় শিক্ষা পরিষদ।

[1] প্রতিষ্ঠা : ১৯০৬ খ্রিস্টাব্দের ১১ মার্চ সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুরের সভাপতিত্বে ৯১ জন সদস্য নিয়ে জাতীয়

শিক্ষা পরিষদ গঠিত হয়। রাজা সুবোধচন্দ্র মল্লিক, ব্রজেন্দ্র কিশোর রায়চৌধুরী, সূর্যকান্ত আচার্য চৌধুরী প্রমুখ যথাক্রমে জাতীয় শিক্ষার প্রসারের জন্য ১ লক্ষ, ৫ লক্ষ ও ২.৫ লক্ষ টাকা দান করেন।

[2] উদ্দেশ্য : জাতীয় শিক্ষা পরিষদ প্রতিষ্ঠার প্রধান উদ্দেশ্য ছিল—[i] জাতীয় আদর্শের ভিত্তিতে ভাষা, সাহিত্য, বিজ্ঞান ও কারিগরি শিক্ষার ব্যবস্থা করা। [ii] শিক্ষার্থীদের মধ্যে দেশসেবার মনোভাব গড়ে তোলা। [iii] নৈতিক শিক্ষার প্রসার ঘটানো। [iv] মাতৃভাষার মাধ্যমে শিক্ষার প্রসার ঘটানো।

[3] শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান স্থাপন : জাতীয় শিক্ষা পরিষদের উদ্যোগে গড়ে ওঠে একাধিক জাতীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। ১৯০৬ খ্রিস্টাব্দে স্থাপিত হয় বেঙ্গল ন্যাশনাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ। এর প্রথম অধ্যক্ষ নিযুক্ত হন বিপ্লবী অরবিন্দ ঘোষ। এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে রাধাকুমুদ মুখোপাধ্যায়, বিনয়কুমার সরকার, ডি ডি কোসাম্বি প্রমুখ পণ্ডিতগণ অধ্যাপনা করেন। এ ছাড়া জাতীয় শিক্ষা পরিষদ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠারউদ্যোগও গ্রহণ করে। বিখ্যাত কংগ্রেস নেতা তথা শিক্ষাবিদ রাসবিহারী ঘোষ এই প্রস্তাবিত বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি পদে নিযুক্ত হন|

[4] ব্যর্থতা : জাতীয় শিক্ষা পরিষদ স্বদেশি আদর্শের ধাঁচে জাতীয় শিক্ষার প্রসারে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করলেও শেষপর্যন্ত নানান কারণে এই উদ্যোগ ব্যর্থ হয়। এর কারণ হিসেবে বলা যেতে পারে—

[i] জাতীয় শিক্ষা পরিষদের প্রতি ব্রিটিশ সরকারের নেতিবাচক মনোভাব | [ii] জাতীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে অর্জিত ডিগ্রি লাভের পরও শিক্ষার্থী সরকারি চাকরি পেত না। [iii] প্রবল অর্থসংকটের মুখোমুখি হয়ে জাতীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলির কাজকর্ম অনেকাংশেই বন্ধ হয়ে যায়। [iv] অভিভাবক এবং শিক্ষার্থীদের একাংশ জাতীয় শিক্ষা অপেক্ষা ব্রিটিশ সরকারের শিক্ষাব্যবস্থাকে বেশি কার্যকরী মনে

করত।

উপসংহার: তবে ব্যর্থতা সত্ত্বেও জাতীয় শিক্ষা পরিষদের উদ্যোগে জাতীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলি বহু

মেধাবী শিক্ষার্থীর জন্ম দেয়। সর্বোপরি, বিকল্প শিক্ষাভাবনার বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে নানা উদ্যোগ গ্রহণ ও জাতীয় শিক্ষার প্রসারের মাধ্যমে এই প্রতিষ্ঠানটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।


PDF Download link Click here 

[TAG]: বিকল্প চিন্তা ও উদ্যোগ পঞ্চম অধ্যায় pdf,পঞ্চম অধ্যায় বড় প্রশ্ন উত্তর,মাধ্যমিক ইতিহাস পঞ্চম অধ্যায় বড় প্রশ্ন উত্তর,দশম শ্রেণির ইতিহাস পঞ্চম অধ্যায় প্রশ্ন উত্তর,


Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url