ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের জীবনী PDF | Ishwarchandra Vidyasagar biography in bengali PDF
[রচনা সূত্র:-ভূমিকা-জন্ম ও বংশপরিচয়-শিক্ষা জীবন-কর্মজীবন-সাহিত্যকর্ম-অবদান-উপসংহার]
Ishwarchandra Vidyasagar jiboni pdf| ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর জীবনী |Ishwarchandra Vidyasagar biography in bengali
ভূমিকা : রত্নগর্ভা বঙ্গ মায়ের কোলে যুগে যুগে জন্মগ্রহণ করেছেন নানা কৃতি সন্তান। যারা তাঁদের প্রতিভার দ্যুতিতে জগৎ সভায় আলোকিত করেছেন বাংলার মুখকে।বঙ্গমাতার এমনই একজন কৃতি সন্তান হলেন সমাজ সংস্কারক ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর। তিনি মহান সমাজ সংস্কারক, লেখক, শিক্ষক ও উদ্যোক্তা ছিলেন এবং সমাজের পরিবর্তনের জন্য কাজ করে গেছেন অবিরাম। ভারতের শিক্ষার প্রতি তাঁর অবদান অপরিসীম এবং নারীদের অবস্থার পরিবর্তনের জন্য তিনি চিরস্মরণীয়।
জন্ম ও বংশ পরিচয়: তিনি ১৮২০ খ্রিস্টাব্দের ২৬ শে সেপ্টেম্বর মেদিনীপুরের বীরসিংহ গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা ছিলেন ঠাকুরদাস বন্দ্যোপাধ্যায় মাতা ছিলেন ভগবতী দেবী।ঈশ্বরচন্দ্রের প্রপিতামহ ভুবনেশ্বর বিদ্যালঙ্কার ছিলেন হুগলী জেলার বনমালীপুর গ্রামের বিখ্যাত পণ্ডিত।দরিদ্র পরিবারে জন্মগ্রহণ করলেও তারা নিজেদের শিক্ষা, সংস্কার, আন্তরিকতা, কঠোরতা, দয়ালুতা ও নিষ্ঠার জন্য প্রচুর খ্যাতি অর্জন করেছিলেন, যার কারণে তিনি অমর।
শিক্ষাজীবন: ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর প্রথমে গ্রাম্য পাঠশালায় ভর্তি হয়েছিলেন এবং পরে কলকাতা সংস্কৃত কলেজে পড়াশুনা করেন।তিনি ১২ বছর কাব্য,ব্যাকরণ,অলঙ্কার শাস্ত্র,বেদান্ত,স্মৃতি ন্যায় – জ্যোতিষ প্রভৃতি পাঠ করে অসাধারণ পান্ডিত্য অর্জন করেন।তিনি ১৭ বছর বয়সে স্মৃতি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন এবং বেদান্ত ও ন্যায় দর্শন পড়া শেষ করেন। প্রথম যৌবনে শাস্ত্রে পাণ্ডিত্যের জন্য তিনি 'বিদ্যাসাগর' উপাধি পান।
কর্মজীবন: বিদ্যাসাগর ফোর্ট উইলিয়াম কলেজের সংস্কৃত ভাষার অধ্যাপক হয়ে তাঁর প্রথম উচ্চ কর্মজীবন শুরু করেন। ফোর্ট উইলিয়াম কলেজে তিনি প্রধান পণ্ডিত হিসেবে যোগদান করেন। তারপর সংস্কৃত কলেজে নিযুক্ত হন। প্রথমে তিনি সহকারী সম্পাদকের পদ এবং পরবর্তীকালে সংস্কৃত কলেজের অধ্যক্ষের পদ লাভ করেন।সেই সঙ্গে স্কুল পরিদর্শকের অতিরিক্ত কার্যভার গ্রহণ করেছিলেন।
সাহিত্যকর্ম: বিদ্যাসাগর স্কুল বিভাগের শিক্ষার জন্য বহুবিধ গ্রন্থ রচনা করেন । যেমন বােধােদয় , বর্ণপরিচয় , কথামালা , চরিতাবলী , ঋজুপাঠ প্রভৃতি । বাংলাভাষায় বলসঞ্চার , সংস্কৃত বাহুল্য মুক্তির জন্য বেতাল পঞ্চবিংশতি , শকুন্তলা , সীতার বনবাস প্রভৃতি রচনা করেন । এছাড়াও রঘুবংশ , সর্বদর্শ সংগ্রহ , কুমারসম্ভব , কাদম্বরী , মেঘদূত , উত্তররামচরিত , অভিজ্ঞান শকুন্তলম প্রভৃতি গ্রন্থ সম্পাদনা করেন ।
সমাজ সংস্কারে: সমাজ সংস্কারেও তার অনন্যসাধারণ ভূমিকা বাঙালী জীবনে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে । তার একাগ্র ও অনলস প্রচেষ্টায় বিধবাবিবাহ আইন প্রণীত ও প্রচলিত হয় । হিন্দু বিধবা নারীদের কাছে তিনি এক মহামানব স্বরূপ । তিনি নিজ পুত্রকে দিয়ে প্রথম বিধবা বিবাহ করান । দুস্থ মহিলাদের সেবা – সহায়তা দিয়ে বাঁচানাের জন্য । তিনি হিন্দু ফ্যামিলি এ্যানুয়িটি ফান্ড ’ গঠন করেন স্ত্রীশিক্ষা প্রচলনের ব্যবস্থাও করেন ।
অবদান: বিদ্যাসাগর নারী শিক্ষা প্রসারের জন্য বহু বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি বিধবা বিবাহ চালু করেন।বাংলা গদ্যের বিকাশে এবং সমাজ সংস্কারক হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ছিলেন বিদ্যাসাগর।তিনি শুধু বিদ্যাসাগর ই ছিলেন না ,তিনি ছিলেন দয়ার সাগর, করুণার সাগর ।
উপসংহার: ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর ১৮৯১ সালের ২৯ শে জুলাই পরলােকগমন করেন । তখন তাঁর বয়স হয়েছিলাে ৭১ বছর।মায়াময় মাটির পৃথিবী থেকে কালের নিয়মে বিদায় গ্রহণ করলেও তিনি তাঁর অমর সৃষ্টির মধ্য দিয়ে চিরকাল বাঙালি তথা দেশবাসীর হৃদয়ে অমর হয়ে থাকবেন।
- সমাজসংস্কারক ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর বায়োগ্রাফি
- ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের জীবনী PDF
- ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর জীবনী PDF