সুয়েজখালে হাঙ্গর শিকার |একাদশ শ্রেণির বাংলা প্রবন্ধর প্রশ্ন উত্তর|সুয়েজখালে হাঙ্গর শিকার প্রশ্ন উত্তর একাদশ শ্রেণির বাংলা|Suyejakhale hangara sikara

সুয়েজখালে হাঙ্গর শিকার একাদশ শ্রেণির বাংলা প্রবন্ধর গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উত্তর |একাদশ শ্রেণির বাংলা প্রবন্ধ সুয়েজখালে হাঙ্গর শিকার প্রশ্ন উত্তর PDF |Class 11 Bengali Suyejakhale hangara sikara question in bengali  pdf

সুয়েজখালে হাঙ্গর শিকার |একাদশ শ্রেণির বাংলা প্রবন্ধর প্রশ্ন উত্তর|সুয়েজখালে হাঙ্গর শিকার প্রশ্ন উত্তর একাদশ শ্রেণির বাংলা|Suyejakhale hangara sikara


আজ আমি তোমাদের জন্য নিয়ে এসেছি একাদশ শ্রেণির বাংলা প্রবন্ধ সুয়েজখালে হাঙ্গর শিকার প্রশ্ন উত্তর PDFclass 11 Bengali Suyejakhale hangara sikara question Pdf | WB Class nine Bengali question pdf |WBBSE পরীক্ষা প্রস্তুতির জন্য একাদশ শ্রেণি বাংলা প্রবন্ধর গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উত্তর pdf গুরুত্বপূর্ণ ভাবে তোমাকে সাহায্য করবে।


তাই দেড়ি না করে এই পোস্টের নীচে দেওয়া Download লিংকে ক্লিক করে |একাদশ শ্রেণি বাংলা প্রবন্ধ সুয়েজখালে হাঙ্গর শিকার গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উত্তর pdf download । Class xi Bengali Question Pdf  ডাউনলোড করো । এবং প্রতিদিন বাড়িতে বসে প্রাক্টিস করে থাকতে থাক।ভবিষ্যতে আরো গুরুত্বপূর্ণ Note ,Pdf ,Current Affairs,ও প্রতিদিন মকটেস্ট দিতে আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন।


‘সুয়েজখালে হাঙ্গর শিকার’ একাদশ শ্রেণির বাংলা প্রবন্ধ প্রশ্ন উত্তর নিচে দেওয়া হলো।

একাদশ শ্রেণি বাংলা প্রবন্ধ 1 নম্বরের গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উত্তর [একটি বাক্যে উত্তর দাও],একাদশ শ্রেণির বাংলা প্রবন্ধ সুয়েজখালে হাঙ্গর শিকার 1 নং প্রশ্ন উত্তর

প্রশ্ন ১। স্বামীজিদের জাহাজ সুয়েজ খালে পৌঁছায় কত তারিখে?

উত্তর ১৪ জুলাই স্বামীজিদের জাহাজ সুয়েজ খালে পৌঁছায়।

প্রশ্ন ২। সিডনি বন্দর কোন দেশে অবস্থিত?

উত্তর সিডনি বন্দর অস্ট্রেলিয়ায় অবস্থিত।

প্রশ্ন ৩। জাহাজের নীচে পুলিশ নৌকার কী কাজ ছিল?

উত্তর জাহাজের নীচে পুলিশ নৌকার চৌকি দেওয়ার কাজ ছিল।

প্রশ্ন ৪। কারাঁটীন (Quarantine) কী?

উত্তর সংক্রামক রোগ বন্ধ করার জন্য জাহাজ ও ব্যক্তিকে আলাদা করা।

প্রশ্ন ৫। ইলিশ মাছের মতো দেখতে মাছটির নাম কী ছিল ?

উত্তর ইলিশ মাছের মতো দেখতে মাছটির নাম বনিটো।

প্রশ্ন ৬। হাঙর ধরার বঁড়শি কে খুঁজে এনেছিল?

উত্তর জাহাজের ফৌজি ব্যক্তি হাঙর ধরার বঁড়শি খুঁজে এনেছিল।

প্রশ্ন ৭। সুয়েজ প্রাকৃতিক বন্দরটি কেমন ছিল?

উত্তর সুয়েজ প্রাকৃতিক বন্দরটি ছিল তিনদিকে বালির ঢিপি আর পাহাড়।

প্রশ্ন ৮“এমন আর দুনিয়ার কোথাও নেই” – কীসের কথা বলা হয়েছে?

উত্তর সুয়েজ বন্দর আর সিডনির মতো হাঙর।

প্রশ্ন ৯। নিষ্ঠুরতার কথা বলে কারা চিৎকার করতে লাগল ?

।উত্তর নিষ্ঠুরতার কথা বলে জাহাজের মধ্যে মহিলা

যাত্রীরা চিৎকার করতে লাগল।

প্রশ্ন ১০। সেদিন খাওয়াদাওয়ার দফা মাটি হওয়ার কারণ কী?

উত্তর হাঙরের বিশ্রী গন্ধে সেদিন খাওয়াদাওয়ার দফা মাটি হল। 

প্রশ্ন ১১।১০০ বছর আগে পর্যন্ত নানাবিধ মশলার স্থান কোন্ দেশে ছিল?

উত্তর ১০০ বছর আগে পর্যন্ত নানাবিধ মশলার স্থান ছিল ভারতবর্ষে।

প্রশ্ন ১২। কোন্ মুসলমান সেনাপতি মিশর জয় করেন?

উত্তর সেনাপতি অমরু মিশর জয় করেন।

প্রশ্ন ১৩। কাদের সুয়েজ খালের নিয়ন্ত্রক বলা হত?

উত্তর ফরাসিদের সুয়েজ খালের নিয়ন্ত্রক বলা হত।

প্রশ্ন ১৪। কারা রোম সাম্রাজ্য দখল করে বাণিজ্যের পথ বন্ধ করে দিয়েছিল?

উত্তর তুর্কিরা রোম সাম্রাজ্য দখল করে বাণিজ্যের পথ বন্ধ করে দিয়েছিল।

প্রশ্ন ১৫। হাঙরটি টোপের কাছে এসে কী করেছিল ?

উত্তর হাঙরটি সোঁ করে টোপের সামনে এসে লেজটা বাঁকিয়ে নিয়ে চলে গিয়েছিল।

প্রশ্ন ১৬।“কিন্তু নেহাত হতাশ হবার প্রয়োজন নেই।” -হতাশ হবওয়ার প্রয়োজন নেই কেন?

বাঘা পালিয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তার গা ঘেঁষে একটা থ্যাবড়ামুখো হাঙর আসায় হতাশ হওয়ার প্রয়োজন নাই।

প্রশ্ন ১৭। সুয়েজ খালের স্থপতির নাম কী?

উত্তর সুয়েজ খালের স্থপতির নাম ফর্ডিনেন্ড লেসেপ্স।

সুয়েজখালে হাঙ্গর শিকার 5 নম্বরের গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উত্তর

একাদশ শ্রেণির বাংলা প্রবন্ধ সুয়েজখালে হাঙ্গর শিকার 5 নং প্রশ্ন উত্তর,সুয়েজখালে হাঙ্গর শিকার বড় প্রশ্ন উত্তর,একাদশ শ্রেণির বাংলা প্রবন্ধ 5 নং প্রশ্ন উত্তর


১। স্বামী বিবেকানন্দের ‘সুয়েজখালে: হাঙ্গর শিকার’ প্রবন্ধ অবলম্বনে হাঙর শিকারের বর্ণনা দাও।৫

উত্তর  সুয়েজ বন্দরে অবস্থানরত গোলকোন্ডা জাহাজের যাত্রীরা অনেকেই হাঙর দেখার আশায় জাহাজের ডেকে দাঁড়িয়েছিলেন। এই সময় সমবেতস্বরে ‘ঐ আসছে, ঐ আসছে’ বলে চিৎকার উঠল। দেখা গেল জলের ৬-৭ ইঞি নীচে দিয়ে একটি অতিকায় হাঙর চলে আসছে। হাঙরের সঙ্গে তার

সাঙ্গপাঙ্গর দলও অর্থাৎ ছোটো ছোটো মাছের দল—যাদের পাইলট ফিস বা আড়কাটী মাছ এবং হাঙর চোষক বলে। সুয়েজ খাল বিখ্যাত হয়ে আছে এইরূপ হাঙরদের জন্যই। জাহাজের এক ফৌজি যাত্রী হাঙর শিকারের জন্য তোড়জোর শুরু করেছেন। একটি বিশাল বঁড়শি কাছিতে বেঁধে একটি ভাঙা কাঠের টুকরোকে ফাতনা হিসেবে ব্যবহার করে দড়ির অপর প্রান্ত জাহাজে বেঁধে রাখা হয়। বঁড়শিতে টোপ হিসেবে একখণ্ড মাংস গেঁথে টোপটিকে জাহাজ থেকে দূরে জলে ফেলা হল। কিছুক্ষণ পরে একটি ‘বাঘা’ হাঙর টোপ গিলল। কাছি ধরে টান দিয়ে ডেকে তোলার সময় হাঙরটি বঁড়শি খুলে চলে গেল। কিছুক্ষণ পরে একটি ‘থ্যাবড়ামুখো’ হাঙর বঁড়শির টোপ গিলল। চল্লিশ-পঞ্চাশ জন মিলে হাঙরটিকে অবশেষে তোলা হল। পেট চিরে নাড়ি-ভুঁড়ি বেরিয়ে যাওয়ায় সেগুলিকে কেটে ফেলে হাঙরটিকে হালকা করা হল। ডেকে তোলার পর হাঙরের মাথায় কড়িকাঠ দিয়ে আঘাত করে ফৌজি যাত্রীটি হাঙরের ভবলীলা সাঙ্গ করল। হাঙরটিকে কেটে তার থেকে হাড়, মাংস, চামড়া বার করে নেওয়া হল। জাহাজের ডেকে দাঁড়িয়ে থাকা স্বামী বিবেকানন্দ এভাবে হাঙর শিকার প্রত্যক্ষ করলেন। সেই দেখার হুবহু বর্ণনা তিনি এই প্রবন্ধে তুলে ধরেছেন 5


■৩। “আগে যান ভগীরথ শঙ্খ বাজাইয়ে” –কোন্ প্রসঙ্গে কেন এরূপ মন্তব্য করা হয়েছে?

উত্তর  দ্বিতীয়বার ইউরোপ ভ্রমণের উদ্দেশ্যে গোলকোন্ডা জাহাজে চেপে স্বামী বিবেকানন্দ পাড়ি দেন। সুয়েজ বন্দরে জাহাজ অবস্থান করলে সুয়েজ খালের হাঙরদের যাতায়াত তিনি জাহাজের ডেকে অবস্থানকালীন লক্ষ করতে থাকলেন। স-পারিষদ হাঙরদের গতিবিধির বর্ণনা করতে গিয়ে ভগীরথের পৌরাণিক প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেছেন। ইক্ষ্বাকু বংশীয় রাজা সগরের অধস্তন পঞ্চম পুরুষ ছিলেন ভগীরথ। পিতা দিলীপ সাধনায় সিদ্ধিলাভের উদ্দেশ্যে পুত্র ভগীরথের হাতে রাজ্যের ভার দিয়ে হিমালয়ে চলে যান। কপিলমুনির অভিশাপে ভস্মীভূত সগর রাজার ষাট হাজার সন্তানের উদ্ধারের জন্য ভগীরথ বহু বছর তপস্যা করেন। প্রজাপতি ব্রহ্মা তপস্যায় সন্তুষ্ট হয়ে ভগীরথকে দুটি বর দেন। প্রথম বরে, ভগীরথের বংশ লোপ পাবে না। দ্বিতীয় বরে, সগর রাজার ষাট হাজার সন্তান গঙ্গার পবিত্র জলস্পর্শে স্বর্গলাভ

করবে। এর জন্য মর্ত্যে গঙ্গাকে আনা প্রয়োজন। কিন্তু গঙ্গার পতনবেগ ধরিত্রী সহ্য করতে পারবে না। একমাত্র মহাদেবই পারেন তার বেগ ধারণ করতে। ভগীরথ তপস্যায় শিবকে সন্তুষ্ট করে তাঁর মাথার জটায় গঙ্গাকে ধারণ করাতে সমর্থ হলেন। মহাদেব তাঁর জটায় গঙ্গাকে আবদ্ধ করে রাখলেন। ভগীরথের অনুরোধে মহাদেব জটা থেকে গঙ্গাকে বার করে দিলেন। ভগীরথ আগে আগে শাঁখ বাজিয়ে পথ দেখিয়ে গঙ্গাকে নিয়ে গিয়েছিলেন। সুয়েজের জলে হাঙরের সামনে পাইলট মাছেদের যাওয়া দেখে স্বামীজির এরূপ পৌরাণিক প্রসঙ্গটি মনে পড়ে যায়। এখানে পাইলট ফিসের সঙ্গে ভগীরথ এবং হাঙরের সঙ্গে গঙ্গাদেবীর তুলনা করা হয়েছে।



৪। “সেদিন আমার খাওয়াদাওয়ার দফা মাটি হয়ে গিয়েছিল।”—প্রসঙ্গসহ খাওয়া দাওয়ার দফা মাটি হয়ে যাওয়ার কারণ উল্লেখ করো। ২+৩=৫

উত্তর  রেড-সী পেরিয়ে গোলকোন্ডা জাহাজ সুয়েজ বন্দরে জিনিসপত্র নামানোর জন্য দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করে দাঁড়িয়েছিল। জাহাজের যাত্রীরা প্রাথমিক বিরক্তি কাটিয়ে সুয়েজের সৌন্দর্য উপভোগ করতে এবং জলে হাঙরের আনাগোনা দেখতে ব্যস্ত হয়ে পড়ল। ডেকে অবস্থানরত অন্যান্য যাত্রীদের সঙ্গে বিবেকানন্দ সুয়েজের প্রাকৃতিক দৃশ্য উপভোগ করছিলেন। এক ফৌজির হাঙর শিকারের উৎসাহে

সকলেই রহস্যের গন্ধ পেলেন। ফৌজি হাঙর শিকারের উদ্যোগ করলেন। এক বড়ো বঁড়শিকে কাছিতে বেঁধে তার অপর প্রান্ত জাহাজের সঙ্গে বেঁধে রাখলেন। বঁড়শিতে মাংসখণ্ড গেঁথে তা টোপ হিসেবে জলে ফেললেন। প্রথমবারে একটি হাঙর বঁড়শি থেকে খুলে গেলেও পরে একটি থ্যাবড়ামুখো হাঙর টোপ গিলল। তাকে টেনে তোলার সময় তার নাড়ি-ভুঁড়ি বেরিয়ে যাওয়ায় তা কেটে

ফেলা হল। ডেকে তোলার পর তার মাথায় কড়িকাঠ দিয়ে আঘাত করে সেটিকে মেরে ফেলা হল।

হাঙরটিকে এভাবে মারার ফলে যে নৃশংসতার পরিচয় পাওয়া গেল এবং যে উগ্র গন্ধ ছড়ালো তাতে বিবেকানন্দের খাবারের প্রতি চরম অভক্তি দেখা গেল। হাঙরটিকে কেটে তার ভিতর থেকে মাংস, হাড়, চামড়া, কাঠের টুকরো বের করে আনা হল। এই ঘটনাগুলি বিবেকানন্দ ডেকে দাঁড়িয়ে প্রত্যক্ষ

করলেন। সমস্তদিনই হাঙর শিকারের বীভৎসতা বিবেকানন্দের চোখের সামনে ফুটে উঠতে লাগল—যা তাঁর মনে ঘৃণার উদ্রেক করল। কোনো খাবার তিনি সেদিন গ্রহণ করতে পারেননি। ঘটনার তীব্রতা তাঁর মনকে এমনই অধিকার করেছিল যে সব খাবারেই তিনি হাঙরের গন্ধ পেতে শুরু করেছিলেন।


৷৫। “আমি একাই ঠকবো?”—কার, কেন এরূপ উক্তি?

উত্তর  উক্তিটি প্রাবন্ধিক স্বামী বিবেকানন্দ বিরচিত ‘সুয়েজখালে : হাঙ্গর শিকার' প্রবন্ধের অংশবিশেষ। এই

প্রবন্ধে বর্ণিত ‘বাঘা’ নামের যে হাঙরটি বঁড়শিতে গাঁথা মাংসের টোপ গিলে আহত অবস্থায় পালাতে সক্ষম হয়েছে—এটি তার উক্তি। বাঘা পালাতে সক্ষম হলেও টোপ গেলবার জন্য এবার একটি ‘থ্যাবড়ামুখো’ হাঙর আসে। হাঙরদের ভাষা নেই, না হলে ‘বাঘা’ হাঙর নিশ্চিত এই খবর দিয়ে ‘থ্যাবড়ামুখোকে সাবধান করে দিত। নিশ্চিত বলত—“দেখ হে সাবধান, ওখানে একটা নূতন জানোয়ার এসেছে, বড় সুস্বাদু সুগন্ধ মাংস তার, কিন্তু কি শক্ত হাড়।” অবশ্যই ‘বাঘা’ তার মুখ ব্যাদান করে ‘থ্যাবড়ামুখো’-কে দেখাত তার দাঁত ও চোয়ালের কী অবস্থা হয়েছে। সেও প্রাচীন বয়স্ক অভিজ্ঞতার দ্বারা চ্যাঙ মাছের পিত্তি, কুঁজো ভেটকির পিলে, ঝিনুকের ঠান্ডা সুরুয়া ইত্যাদি ঔষধের কথা বলত। কিন্তু এসব কিছুই ঘটল না—হয় হাঙরদের ভাষার অভাব অথবা জলের মধ্যে কথা বলা চলে না। অথবা ‘বাঘা’ হাঙরটি মানুষের ঘেঁষা হয়ে মানুষের স্বার্থপর স্বভাব পেয়েছে। তাই ‘থ্যাবড়ামুখো’কে সাবধান না করে—‘ভালো আছো তো হে’ বলে সরে গেল। সে নিজে ঠকেছে তাই একা ঠকার হাত থেকে রেহাই পেতে ‘থ্যাবড়ামুখো’কে বিপদের মুখে ঠেলে দিল। এ কারণেই তার এরূপ মন্তব্য। 


৬। “হাঁকাহাঁকির চোটে আরব মিঞা চোখ মুছতে মুছতে উঠে দাঁড়ালেন।” আরব মিঞা উঠে দাঁড়িয়ে কী করলেন? এরূপ মন্তব্য করা হয়েছে?


উত্তর  পুলিশের যে নৌকা সুয়েজ বন্দরে স্বামী বিবেকানন্দদের জাহাজ পাহারা দিচ্ছিল যাতে সুয়েজের

লোকেদের সঙ্গে জাহাজের যাত্রীদের কোনোরূপ ছোঁয়াছুঁয়ি না হয়; সেই নৌকার চৌকিদার আরব মিঞা, যার কথা স্বামী বিবেকানন্দ তাঁর ‘সুয়েজখালে: হাঙ্গর শিকার' প্রবন্ধে বলেছেন। জাহাজের দ্বিতীয় শ্রেণির এক ফৌজি যাত্রী হাঙর শিকার করার জন্য সেরখানেক শুয়োরের মাংস একটি বঁড়শিতে গেঁথে একটি কাঠের ফাতনাসহ জলে নিক্ষেপ করলেন। টোপটিকে জাহাজ থেকে দূরে সরিয়ে জলে ফেলার প্রয়োজন

ছিল। জাহাজের কাছে থাকা আরব মিঞার নৌকার উদ্দেশ্যে যাত্রীরা ওই টোপ দূরে ফেলার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছিল। যাত্রীদের সমবেত অনুরোধ আর হাঁকাহাঁকি শুনে কোনো হাঙ্গামা বেঁধেছে ভেবে নৌকায় নিদ্রিত আরব মিঞা চোখ মুছতে উঠে দাঁড়ালেন। যাত্রীদের চিৎকার তার ঘুমভাঙিয়ে দিয়েছিল। যাত্রীদের অনুরোধ শুনে আরব মিঞা স্বস্তির হাসি হেসে একটা লগির আগা দিয়ে টোপসহ বঁড়শি ও ফাতনাটিকেও দূরে জলের মধ্যে নিক্ষেপ করলেন।


৭। "সখি শ্যাম না এলো।” –কোন্ প্রসঙ্গে কে 

উত্তর  বিশ্বসমাজে যুবধর্মের প্রতীক ও প্রখ্যাত প্রাবন্ধিক স্বামী বিবেকানন্দের ‘সুয়েজখালে : হাঙ্গর শিকার' প্রবন্ধ থেকে আলোচ্য উদ্ধৃতাংশটি গৃহীত।

আলোচ্য প্রবন্ধে প্রাবন্ধিক হাঙর শিকার প্রসঙ্গে এই উক্তিটি করেছেন—যেটি বৈষ্ণব পদাবলির ‘অনুরাগ’ পর্যায়ের একটি পদের অংশ বিশেষ। লোহিত সাগর পার হয়ে বিবেকানন্দদের জাহাজ সুয়েজ খালে পৌঁছোলে যেখানকার জলে প্রচুর হাঙর দেখতে পাওয়া যায়। জলে ভাসমান হাঙরধরবার জন্য জাহাজের দ্বিতীয় শ্রেণির এক ফৌজি যাত্রী একটি বঁড়শি জোগাড় করে তাতে সেরখানেক শুয়োরের মাংস মজবুত দড়ি দিয়ে জোর করে জড়িয়ে বাঁধলেন। তাতে একটা মোটা কাছি বাঁধা হল। সেই বঁড়শি থেকে দড়ির ওপর দিকে হাত চার বাদ দিয়ে একখানা মস্ত কাঠ ফাতনা হিসেবে ব্যবহার করা হল। তারপর ফাতনাসুদ্ধ বঁড়শির টোপ ঝুপ করে জলে ফেলে দেওয়া হল। হাঙর আসার জন্য এরপর সকলে অপেক্ষা করতে

লাগল। হাঙর এসে হাজির হয়ে টোপ খাবে এই আশায় মানুষজন উদগ্রীব হয়ে দাঁড়িয়ে রইল। কিন্তু হাঙর মিঞার কোনো দেখাই নেই। সেই প্রসঙ্গে বলতে গিয়েই স্বামী বিবেকানন্দ এরূপ উপমাটি ব্যবহার করেছেন।


৮। “দশ-বারো জন বলে উঠল—ঐ আসছে, ঐ আসছে”—দশ-বারো জন কারা? কী আসার কথা বলছিল? সেই বস্তুর বিবরণ দাও।১+১+৩=৫

উত্তর দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করে থাকার পর হাঙরকে জলে দেখতে পেয়ে অসীম উৎসাহের সঙ্গে জাহাজের যাত্রীদের মধ্যে দশ-বারো জন যাত্রী এই কথা বলেছিল। অপেক্ষার অবসান ঘটায় যাত্রীদের মধ্যে দশ-বারো জন হাঙর আসার আনন্দে চিৎকার করে উঠেছিল। সুয়েজ বন্দরে যাত্রীদের কাছে মূল আকর্ষণ জলের হাঙর। জাহাজে যাত্রীরা হাঙর দেখার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করেছিল। বেশ কিছুক্ষণ পর হাঙরের আগমন ঘটল। জলের ছয়-সাত ইঞ্চি গভীরে হাঙরের চলাফেরা লক্ষ করা গেল।

থ্যাবড়া মাথার একটা হাঙর দেখা গেল, যার চালচলন গদাইলঙ্করি চালে। হাঙর একবার ঘাড় ঘোরালেই জলে প্রকাণ্ড চক্কর উঠছে। ভয়ংকর চেহারার এই হাঙরের সামনে চলেছে কিছু ছোটো মাছ। এই পাইলট ফিসগুলি হাঙরকে শিকার ধরতে সাহায্য করে। হাঙরের পেটে-পিঠে কিছু মাছ লেপটে রয়েছে। হাঙরের গায়ের পোকামাকড় খেয়ে এই মাছগুলি বেঁচে থাকে বলে এদের হাঙর-চোষক মাছ বলে। এরূপ হাঙর দেখেই যাত্রীরা উৎসাহী হয়ে উঠেছিল।



 ১০। স্বামী বিবেকানন্দের ‘সুয়েজখালে : হাঙ্গর শিকার’ প্রবন্ধ অবলম্বনে সুয়েজ বন্দরে জাহাজ থামার প্রথম অভিজ্ঞতাটি বর্ণনা করো।

 উত্তর গোলকোন্ডা জাহাজে স্বামী বিবেকানন্দ, ভগিনী

নিবেদিতা ‘উদ্বোধন’ পত্রিকার তৎকালীন সম্পাদক ত্রিগুণাতীতানন্দ এবং সতীশ চক্রবর্তী দ্বিতীয়বার পাশ্চাত্য ভ্রমণের উদ্দেশ্যে বের হলেন। জাহাজ সুয়েজ বন্দরে অবস্থান করলে জাহাজের যাত্রীদের সেখানে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়। কোনো যাত্রী বা জাহাজ কর্মীর সুয়েজ বন্দরে নামার অনুমতি নেই। ভারতবর্ষে তখন প্লেগ রোগের মারাত্মক প্রভাব, তাই ভারত থেকে আগত জাহাজের কোন যাত্রীকেই বন্দরে নামার অনুমতি দেওয়া হত না। তাই জাহাজের মালপত্র নামানোর জন্য সুয়েজ বন্দরের

কর্মীদেরও জাহাজে যাওয়া নিষেধ ছিল। এমনকি কোম্পানির সাহেব এজেন্টও জাহাজে প্রবেশ করতে পারত না। তাকেও জাহাজের গায়ে বোট লাগিয়ে প্রয়োজনীয় কথাবার্তা সেরে নিতে হত। বাইরের দেশের কোনো রোগ যাতে ইউরোপে প্রবেশ করতে না পারে সে দিকে সতর্ক দৃষ্টি ছিল। কারণ ইউরোপীয়দের দৃষ্টিতে ভারতবর্ষ ছিল নরক এবং তাদের দেশ ইউরোপ ছিল স্বর্গভূমি। এছাড়া মিশরীয় প্লেগের উৎপাত

থাকাতেও বন্দরে যাত্রী নামার ক্ষেত্রে কড়া সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। তবুও সুয়েজ বন্দরের প্রাকৃতিক দৃশ্য জাহাজের যাত্রীদের মুগ্ধ করে রেখেছিল। তিনদিকে বালির ঢিবি ও পাহাড়ে ঘেরা সুয়েজের স্বচ্ছ জল যাত্রীদের আকর্ষণ করে। সেই জলে বিভিন্ন প্রকার মাছের আনাগোনা দেখা যায়। ইলিশ মাছের মতো বনিটো মাছের তির বেগে ছোটাছুটি দেখা যায়। খুব কাছথেকেই সুয়েজের জলে হাঙরদের চলাফেরা লক্ষ করা যায়। তাই প্রাথমিক বিরক্তি কাটিয়ে জাহাজের যাত্রীরা প্রাকৃতিক দৃশ্যে মনোনিবেশ করেছিল।


১১। ভারতের শ্রমজীবী সম্পর্কে স্বামী বিবেকানন্দের মনোভাব ব্যাখ্যা করো।

অথবা, “সে তোমরা ভারতের চির পদদলিত শ্রমজীবী! -তোমাদের প্রণাম করি।” —উক্তিটির ব্যাখ্যা লেখো।

উত্তর ভারতবর্ষের শ্রমজীবী সম্প্রদায়ের নীরব অনবরত নিন্দিত পরিশ্রমের ফলস্বরূপ পাশ্চাত্য দেশগুলির আধিপত্য ও ঐশ্বর্য সৃষ্টি হয়েছে। প্রাচীনকাল থেকেই শ্রমজীবী মানুষ নিরন্তর কর্মরত। তাদের নিরলস কর্মপ্রয়াসের ফললাভ করেছে ভারতবর্ষে আগত ইংরেজ, ফরাসি, ওলন্দাজ, দিনেমাররা। কিন্তু এই সাম্রাজ্যবাদীর দল স্বীকার করতেই চায় না—“ভারত যে তাদের ধন, সভ্যতার প্রধান সহায় ও সম্বল।” তাই ভারতের শ্রমজীবী মানুষগণ আবহমানকাল নীরবে কাজ কর গেলেও—তাদের পরিশ্রমের ফসল তারা পাচ্ছে না। তারই জন্য স্বামী বিবেকানন্দ শ্রমজীবীদের প্রসঙ্গে এরূপ মনোভাব

ব্যক্ত করেছেন। সাম্রাজ্যবাদী শক্তির হাতে সমস্ত ঐশ্বর্য, সমস্ত আধিপত্য। কিন্তু শ্রমজীবী সম্প্রদায় সর্বস্ব ভারতবাসীর পিতৃপুরুষ দু-খানা দর্শন, দশখানা কাব্য রচনা করেছেন, দশটা মন্দির করেছেন। তাদের ডাকের চোটে গগন ফাটছে, আর তাদের রুধির স্রাবে মনুষ্যজাতির যা কিছু উন্নতি। অথচ এই সকল মানুষেরা এখনও সকলের কাছে ঘৃণার পাত্র। তাদের কেউ প্রশংসা করে না, তাদের কর্মের কেউ স্বীকৃতি দেয় না। এত কিছুর পরেও শ্রমজীবী সম্প্রদায় অপার সহিষ্ণুতায় অনন্ত প্রীতি ও নির্ভীক  কার্যকারিতায়, আমাদের গরীবের দুনিয়ায় কাজ করে চলেছে। স্বামী বিবেকানন্দ তাদের কর্মদক্ষতায় শ্রদ্ধাবান। তাই তিনি বলেছেন যে, অতি নগণ্য কর্মেও শ্রমজীবীরা যে নিঃস্বার্থ কর্তব্যপরায়ণতা দেখান—তার জন্য তারাই ধন্য ও প্রণম্য।


১২। সুয়েজ খালের জাহাজ পারাপারের ব্যবস্থা বর্ণনা করো।

অথবা, “এ সুয়েজ খালও অতি প্রাচীন জিনিস।” –সুয়েজের বর্ণনা দাও।

উত্তরবড়ো সুন্দর প্রকৃতির চিত্রে প্রায় তিনদিকে বালির ঢিপি আর পাহাড় নিয়ে সুয়েজ বন্দরের অবস্থান। এই সুয়েজ খাল খাত-স্থাপত্যের এক অদ্ভুত নিদর্শন। যদিও খালটি খননের মূল উদ্দেশ্য ছিল বাণিজ্য। সুয়েজ খাল খননের মধ্য দিয়ে ভূমধ্যসাগর ও লোহিত সাগরের মধ্যে সংযোগ সেতু রচনা করে ইউরোপ ও ভারতবর্ষের মধ্যে ব্যাবসাবাণিজ্যের সুবিধা করা হয়েছে। প্রাচীন মিশরের ফেরো বাদশাহের আমলে কতকগুল লবণাম্বু জলা খাতের দ্বারা সংযুক্ত করে উভয় সমুদ্রস্পর্শী এক খাত তৈরি হয়। মুসলিম সেনাপতি অমরু মিশর বিজয় করে ওই খাতের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ বদল করেন। তুরস্ক সুলতানের প্রতিনিধি ফরাসিদের পরামর্শে এই খাল আবার খনন করান। মরুভূমির মধ্যদিয়ে যাওয়ার ফলে এই খালটি বারবার বালিতে ভরে যায়। বড়ো বড়ো বাণিজ্য জাহাজ সুয়েজ খালের ভিতর দিয়ে একটি একেবারে যেতে পারে। কিন্তু অতি বড়ো বাণিজ্য জাহাজ এই খাল দিয়ে একেবারে যেতে পারে না। তা ছাড়া দুটি পরস্পর অভিমুখী জাহাজের মধ্যে যাতে সংঘর্ষ না হয়—তার জন্য খালটিকে কয়েকটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে।

প্রত্যেক ভাগের দুই মুখে কতকটা স্থান এমন চওড়া করে রাখা আছে—যাতে সেখানে দু-তিনখানি জাহাজ একসঙ্গে থাকতে পারে। স্বামীজির ভাষায়—“ভূমধ্যসাগর মুখে প্রধান অফিস, আর প্রত্যেক বিভাগেই রেল স্টেশনের মতো স্টেশন।” সুয়েজ খালের অতীত ইতিহাস সাম্প্রতিক সমাজচিত্রের সংযোগসাধনকরে দেয়।



[TAG]:   একাদশ শ্রেণি সুয়েজখালে হাঙ্গর শিকার প্রবন্ধ প্রশ্ন উত্তর pdf,সুয়েজখালে হাঙ্গর শিকার প্রবন্ধ mcq,সুয়েজখালে হাঙ্গর শিকার বড় প্রশ্ন উত্তর,একাদশ শ্রেণি,একাদশ শ্রেণির বাংলা প্রবন্ধ প্রশ্ন উত্তর,একাদশ শ্রেণির বাংলা প্রবন্ধ,একাদশ শ্রেণির বাংলা প্রবন্ধ 3 নং প্রশ্ন উত্তর,একাদশ শ্রেণির বাংলা প্রবন্ধ বড় প্রশ্ন উত্তর,একাদশ শ্রেণির বাংলা প্রবন্ধ 1 প্রশ্ন উত্তর,Class 11 Bengali Suyejakhale hangara sikara question in bengali,

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url

পড়াশোনা বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ আপডেট পেতে তাড়াতাড়ি

WhatsAp Group Join Now
Telegram Group Join Now