গালিলিও একাদশ শ্রেণির বাংলা প্রবন্ধর গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উত্তর |একাদশ শ্রেণির বাংলা প্রবন্ধ গালিলিও প্রশ্ন উত্তর PDF |Class 11 Bengali Galileo question in bengali pdf
আজ আমি তোমাদের জন্য নিয়ে এসেছি একাদশ শ্রেণির বাংলা প্রবন্ধ গালিলিও প্রশ্ন উত্তর PDF। class 11 Bengali golpo question Pdf | WB Class nine Bengali question pdf |WBBSE পরীক্ষা প্রস্তুতির জন্য একাদশ শ্রেণি বাংলা প্রবন্ধর গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উত্তর pdf গুরুত্বপূর্ণ ভাবে তোমাকে সাহায্য করবে।
তাই দেড়ি না করে এই পোস্টের নীচে দেওয়া Download লিংকে ক্লিক করে |একাদশ শ্রেণি বাংলা প্রবন্ধ গালিলিও গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উত্তর pdf download । class 11 bengali Galileo question,ডাউনলোড করো । এবং প্রতিদিন বাড়িতে বসে প্রাক্টিস করে থাকতে থাক।ভবিষ্যতে আরো গুরুত্বপূর্ণ Note ,Pdf ,Current Affairs,ও প্রতিদিন মকটেস্ট দিতে আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন।
‘গালিলিও’ একাদশ শ্রেণির বাংলা প্রবন্ধ প্রশ্ন উত্তর নিচে দেওয়া হলো।
একাদশ শ্রেণি বাংলা প্রবন্ধ 1 নম্বরের গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উত্তর [একটি বাক্যে উত্তর দাও],একাদশ শ্রেণির বাংলা প্রবন্ধ গালিলিও 1 নং প্রশ্ন উত্তর
১। গালিলিও কবে, কোথায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন?
উত্তর গালিলিও ১৫৬৪ খ্রিস্টাব্দের ১৫ ফেব্রুয়ারি পিসা শহরে জন্মগ্রহণ করেছিলেন।
২। ১৬০৯ খ্রিস্টাব্দে কোথায় একটা নতুন ব্যাপার ঘটেছিল?
১৬০৯ খ্রিস্টাব্দে হল্যান্ডে একটা নতুন ব্যাপার ঘটেছিল।
৩। Duke-এর ছেলে Cosmo গালিলিওর কে ছিল?
উত্তর Duke পুত্র Cosmo গালিলিওর প্রিয় ছাত্র ছিল।
৪। শেষপর্যন্ত গালিলিও কার কাছে হেরে গেলেন?
উত্তর শেষপর্যন্ত গালিলিও কুসংস্কার ও ধর্মান্ধতার কাছেহেরে গেলেন।
৫। গালিলিও মঠ ছেড়েছিলেন কেন?
উত্তর গালিলিওর পিতা ছেলের ক্ষীণ দৃষ্টিশক্তি, পড়াশোনায় ক্ষতি করবে বলে মঠ ছাড়িয়ে দিয়েছিলেন।
৬। গালিলিওর পরিবার ফ্লোরেন্সে চলে এসেছিলেন কেন?
উত্তর গালিলিওর পরিবারের অর্থসামর্থ্য না থাকায় সবাই ফ্লোরেন্সে চলে এসেছিলেন।
৭। গালিলিও প্রথম জীবনে কীভাবে অর্থ উপার্জন করতেন?
উত্তর গালিলিও প্রথম জীবনে ছাত্র পরিয়ে অর্থ উপার্জন করতেন।
১৮। গালিলিও ফ্লোরেন্সে কী নিয়ে পড়াশোনা শুরু করলেন?
উত্তর গালিলিও ফ্লোরেন্সে গণিত ও পদার্থবিদ্যা নিয়ে পড়াশোনা শুরু করলেন।
৯। মাইকেল এন্জেলো গালিলিওর কে ছিলেন?
উত্তর মাইকেল এনজেলো গালিলিওর ছোটো ভাই ছিলেন।
১০। গালিলিওর সঙ্গে বেলারিমিনের সম্পর্ক কী ছিল?
গালিলিওর সঙ্গে বেলারিমিনের সম্পর্ক ছিল বন্ধুত্বের।
১১। গালিলিওর মতে সত্য জ্ঞানের উদবোধন কীভাবে সম্ভব?
উত্তর গালিলিওর মতে সত্য জ্ঞানের উদবোধন সম্ভব চোখ দিয়ে দেখে এবং বুদ্ধি দিয়ে বুঝে।
১২। গালিলিওর বিরুদ্ধাচরণে সামিল হন কারা?
গালিলিওর বিরুদ্ধাচরণে শামিল হন ফ্লোরেন্সের ডোমিনিকান সন্ন্যাসী, বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও ছাত্ররা।
১৩। ধর্মযাজকেরা কী প্রচার করতে লাগলেন?
উত্তর গালিলিওর অধ্যাপনা ধর্মবিশ্বাসের পরিপন্থী।
১৪। ধর্মযাজকরা কী সিদ্ধান্ত প্রকাশ করলেন?
উত্তর ধর্মযাজকরা সিদ্ধান্ত প্রকাশ করলেন যে, পৃথিবীর আহ্নিক ও বার্ষিক গতির ধারণা ধর্মবিরোধী।
১৫। গালিলিও কবে কারারুদ্ধ হন?
উত্তর গালিলিও ১৬১৬ খ্রিস্টাব্দের ১২ এপ্রিল কারারুদ্ধ হন।
১৬। গালিলিও কবে লোকান্তরিত হন?
উত্তর গালিলিও ১৬৪২ খ্রিস্টাব্দের ৮ জানুয়ারি ৭৭ বছর বয়সে লোকান্তরিত হন।
গালিলিও 5 নম্বরের গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উত্তর,একাদশ শ্রেণির বাংলা প্রবন্ধ গালিলিও 3 নং প্রশ্ন উত্তর
১। গালিলিওর কর্মজীবনের পরিচয় দাও।
উত্তর পুরাণ-ইতিহাস-সংগীত জগতের পরিমণ্ডলের মধ্যে জন্মগ্রহণ করলেও গালিলিওকে শৈশবেই ভালাম ব্রোসার বেনেডিক্টিন মঠে ন্যায় ও ধর্মশাস্ত্র অধ্যয়নের জন্য পাঠানো হয়। সেখানকার পাঠ অসমাপ্ত রেখেই তিনি ফিরে আসেন। ১৫৮১ খ্রিস্টাব্দে পিসা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভরতি হলেন ডাক্তারি পড়ার জন্য। কিন্তু ডাক্তারি পড়া অসমাপ্ত রেখে গালিলিও এক পারিবারিক বন্ধুর প্রভাবে গণিত ও পদার্থবিদ্যার পাঠ নিতে শুরু করেন, যা তাঁকে পরবর্তীকালে কর্মজীবনে প্রতিষ্ঠিত করে। ১৫৮৮ খ্রিস্টাব্দে গালিলিও বার্ষিক ৬০ স্কুডি অর্থাৎ, ৯০০ থেকে ১০০০ টাকা বেতনে পিসা বিশ্ববিদ্যালয়ে গণিতের অধ্যাপক রূপে কাজে যোগ দেন। এই স্বল্প টাকায় তিনি সংসারের বিপুল খরচ সামলাতে পারতেন না। এর মধ্যে তাঁর পিতার মৃত্যু হওয়ায় গালিলিওর অবস্থা শোচনীয় হয়ে ওঠে। ১৫৯২ খ্রিস্টাব্দে তাই গালিলিও পাড়ুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দিলেন। বিজ্ঞানী হিসেবে কর্মজীবন শুরু হয় প্রকৃতপক্ষে এখান থেকেই। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনার পাশাপাশি তাঁকে দেশের সুরক্ষার ব্যাপারেও পরামর্শ দিতে হত। ১৬০৯ খ্রিস্টাব্দে এক হল্যান্ডবাসী দূরবিন যন্ত্র আবিষ্কার করেন। গালিলিও সেই যন্ত্রকে ত্রুটিমুক্ত করে আরও শক্তিশালী দূরবিন তৈরি করলেন। ভেনিস নগরীর সুরক্ষার জন্য এই যন্ত্রকে কাজে লাগানো হতে লাগল। তা ছাড়া যুদ্ধে ও বাণিজ্যে এই দূরবিনের ব্যাপক চাহিদা হওয়ায় গালিলিও নিজেই দূরবিন তৈরি করে সরবরাহ করতে লাগলেন। এই দূরবিনের সাহায্যে মহাকাশ পর্যবেক্ষণের কাজেও অনেক সুবিধা হল। ফ্লোরেন্সের রাজপণ্ডিতরূপে তিনি যোগদান করলেন। শুরু হল নতুন কর্মজীবন। সেই সঙ্গে তাঁর খ্যাতিও বেড়ে গেল। সূর্যের চারিদিকে জগৎ ঘুরছে অর্থাৎ, সূর্যকেই জগতের কেন্দ্রস্বরূপ বলায় ধর্মযাজকেরা তাঁর
বিরুদ্ধে পোপের কাছে নালিশ করলে গালিলিওকে কারারুদ্ধ করা হয়।
৷ ২। “এই স্বভাবই শেষ জীবনে তাঁর অশেষ দুঃখের কারণ হলো।” কার কোন্ স্বভাব, কেন তাঁকে দুঃখ দিয়েছিল? ১+১+৩=৫
উত্তর বিজ্ঞানসাধক গালিলিওর শেষ জীবনের দুঃখ- কষ্টের কথা বলতে গিয়ে সত্যেন্দ্রনাথ বসু তাঁর ‘গালিলিও' রচনায় এরূপ মত ব্যক্ত করেছেন। সত্য আবিষ্কারের নেশা, ধর্মনিরপেক্ষতা, মুক্তবুদ্ধি এই
স্বভাবের জন্যই তাঁর শেষজীবন অতীব দুঃখময় হয়ে উঠেছিল। গালিলিওর সারস্বত বিজ্ঞান সাধনায় আর্থিক সমস্যা বিড়ম্বনার সৃষ্টি করলেও তা তিনি সহজেই কাটিয়ে উঠতে পেরেছিলেন। পিসা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনার সময়েই তিনি বিজ্ঞানসাধনায় মগ্ন হন। পাড়ুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকাকালীন তাঁর প্রকৃত বিজ্ঞানচর্চা শুরু হয়। দুরবিন যন্ত্রের উন্নতি ঘটিয়ে তিনি সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা ও আর্থিক সুবিধা লাভ করেন। ফ্লোরেন্সের রাজপণ্ডিতরূপে যোগদানের পর গালিলিওর প্রতিষ্ঠা ও যশ বেড়ে গেল।
গালিলিও তথ্য প্রমাণের ওপর ভিত্তি করে দেখালেন যে, সূর্যই জগতের কেন্দ্রস্বরূপ। পৃথিবীকে প্রদক্ষিণকরে তার একটি মাত্র উপগ্রহ চাঁদ। তাঁর এই সিদ্ধান্ত ধর্মান্ধ ও কুসংস্কারাচ্ছন্ন যাজকদের মতাদর্শের পরিপন্থী। পাড়ুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনার সময়ে টলেমীর বিশ্ববীক্ষাকে অস্বীকার করে, কোপারনিকাসের মতবাদের পক্ষে ঘোষণা করলেন সূর্যই জগতের কেন্দ্র। তাঁর এই ঘোষণায় ধর্মযাজকেরা তাঁর বিরোধিতা করতে আরম্ভ করলেন। উন্নত দূরবিন যন্ত্রের সাহায্যে তিনি মহাকাশের আরও নানা অজানা তথ্য প্রত্যক্ষ করে লাতিন ভাষার পরিবর্তে ইটালিয়ান ভাষায় প্রচার করতে লাগলেন। সনাতনপন্থী ধর্মধ্বজীরা তাঁর বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্র শুরু করল। তাঁর বিরুদ্ধে ধর্মবিরোধিতার অভিযোগ এনে তাঁকে কারারুদ্ধ করা হল। জীবনের শেষ নয় বছর অত্যন্ত দুঃখে কাটল প্রায় অন্ধদশায়। তাঁর সত্যনিষ্ঠার কাছে সবকিছুই একদিন পরাজিত হল।
৩। “তোমার ভুল দেশের ভয়ানক অমঙ্গল করেছে।”—কার, কোন্ ভুল দেশের কীরূপ অমঙ্গল করেছে?১+১+৩=৫
উত্তর গালিলিওর সত্য প্রমাণের আপ্রাণ চেষ্টাকে অবদমিত করতে তাঁকে ধর্মদ্রোহী আখ্যা দিয়ে বিচারের নামে প্রহসন করা হয়। সেই বিচারের সময় বিচারকগণ তাঁকে এ কথাগুলি বলেছিলেন। যার উল্লেখ রয়েছে সত্যেন্দ্রনাথ বসুর ‘গালিলিও’ প্রবন্ধে। গালিলিও বিজ্ঞানের যুক্তি দিয়ে প্রমাণ করেছিলেন সূর্যই জগতের কেন্দ্রস্বরূপ এবং পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করে একটি মাত্র উপগ্রহ চাঁদ। ধর্মধ্বজীদের যুক্তি ঠিক এর বিপরীত। তাদের স্বার্থে আঘাত লাগায় তারা গালিলিওর বিরুদ্ধে ধর্মবিরোধিতার নালিশ আনলেন। তাঁর লেখা বই নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হল—তাঁকে কারারুদ্ধ করা হল। তাঁকে দিয়ে স্বীকার করিয়ে নেওয়া হল— তাঁর প্রচারিত মতবাদ ভুল। বিচারকেরা তাঁকে জানালেন, গালিলিওর প্রচারিত তত্ত্ব দেশের সমূহ অকল্যাণ ডেকে এনেছে। দেশের এইরূপ কল্যাণের জন্য গালিলিওকে নজরবন্দি করে রাখা হল। জীবনের শেষ নয় বছর তাঁর অত্যন্ত কষ্টের সঙ্গে কেটেছিল। গালিলিওর আবিষ্কৃত তথ্যকে বিচারকরা ‘ভুল’ আখ্যা দিয়েছিলেন। বিচারকদের মনে হয়েছিল গালিলিওর আবিষ্কার যেহেতু ধর্মের বিরোধী—তাই তা দেশের অমঙ্গল ডেকে আনবে। বিচারকদের এই দৃষ্টিভঙ্গি আসলে রাষ্ট্রীয় মতাদর্শ ও ধর্মগুরুদের পোষকতা করেছে। বিচারকরা সত্যিকারের বিচার করার সাহস দেখাতে পারেননি। তাঁরা ধর্মপ্রণেতাদের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে গালিলিওকে দোষী সাব্যস্ত করেছিলেন। বিজ্ঞান কিন্তু পরবর্তীকালে গালিলিওর মতকে সত্য বলে মেনে নিয়েছিল। তাই বিচারকদের রায়ে গালিলিওর মতকে ‘ভুল’ আখ্যা দেওয়াটা ছিল বিচারের কণ্ঠরোধ করার এক কু-চক্রান্ত।
৪। গালিলিওর নতুন মতবাদটির পরিচয় দাও।
উত্তর বিশ্ববিন্যাস সম্পর্কে টলেমীর তত্ত্ব ছিল—পৃথিবীকে কেন্দ্র করে সূর্য, চন্দ্র ও অন্যান্য গ্রহনক্ষত্র আবর্তিত হয়। টলেমির বিশ্ববিন্যাস তত্ত্বে যখন সর্বজনের বিশ্বাস তখন গালিলিও ঘোষণা করলেন—পৃথিবী নয়, সূর্যই সৌরজগতের কেন্দ্র। টলেমীর বিশ্ববিন্যাস তথ্যকে বিরোধিতা করেন দার্শনিক ও বিজ্ঞানী পিথাগোরাস। নিকোলাস কোপারনিকাসও টলেমীর তথ্যের প্রতি সংশয় প্রকাশ করেন। কোপারনিকাস তাঁর জ্যোতির্বিজ্ঞান সংক্রান্ত গবেষণায় ঘোষণা করলেন পৃথিবী নয় সূর্যই সৌরজগতের কেন্দ্র। গালিলিও ছিলেন স্বভাববিদ্রোহী বিজ্ঞানী । কোপারনিকাসের মত অনুযায়ী তিনিও প্রচার করলেন—সূর্যই জগতের কেন্দ্রস্বরূপ। ধর্মযাজকদের এই মত মনঃপূত না হওয়ায় তারা গালিলিওর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেন। দূরবিন যন্ত্রকে ত্রুটিমুক্ত ও উন্নত করে গালিলিও দেখালেন—মহাকাশের নানান অজানা রহস্য। দূরবিনের সাহায্যেই তিনি সিদ্ধান্ত নিলেন—পৃথিবীর চারিদিকে প্রদক্ষিণ করে একটি মাত্র উপগ্রহ চাঁদ। কিন্তু ধর্মযাজকরা তা মানতে চাইলেন না। গালিলিও দূরবিনের সাহায্যে দেখলেন চাঁদের পর্বতমালা, বৃহস্পতির উপগ্রহসমূহ, সূর্যের গায়ে আঁকা কলঙ্কচিহ্ন, শনির বলয়, ছায়াপথে লক্ষ তারার সমাবেশ। সেসব কিছুকে ধর্মধ্বজীরা দূরবিনের কারসাজি বলতে লাগলেন। অন্যদিকে গালিলিও তাঁর সিদ্ধান্তে অটল। তাঁর
মতবাদগুলিকে তিনি ইটালিয়ান ভাষায় পুস্তিকা আকারে প্রচার করতে লাগলেন। বিজ্ঞানের সত্যকে তিনি প্রতিষ্ঠা দিয়েছিলেন। কোপারনিকাসের মতবাদটি ছিল পর্যবেক্ষণ ও ধারণার ওপর নির্ভরশীল। কিন্তু গালিলিও প্রত্যক্ষ প্রমাণের ওপর ভিত্তি করে প্রতিষ্ঠা করলেন—সূর্যই মহাজগতের কেন্দ্রস্বরূপ।
৫। "দুঃখে-কষ্টে গ্যালিলিওর জীবনের শেষ ৯ বৎসর কাটলো”—গালিলিওর শেষ জীবনে কী পরিণতি হয়েছিল?
উত্তর সারস্বত বিজ্ঞান সাধনাই ছিল গালিলিওর জীবনের একমাত্র ব্রত। অধ্যাপনার পাশাপাশি তাই গবেষক ও বিশ্বনিরীক্ষায় তিনি মনোনিবেশ করেন। পাড়ুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনার সময়েই গালিলিওর প্রকৃত বিজ্ঞানসাধনা শুরু হয়। দূরবিন নামক যন্ত্রটিকে পরিমার্জিত করে তিনি বিশ্বনিরীক্ষার কাজে আরও মনোযোগী হয়ে ওঠেন। কোপারনিকাসের মতবাদকে তিনি প্রত্যক্ষ প্রমাণের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত করতে চাইলেন। তখন থেকেই গালিলিওর বিরুদ্ধে ধর্মযাজকেরা সরব হয়ে উঠলেন। দূরবিনের সাহায্যে মহাকাশের অনেক অজানা ছবি প্রত্যক্ষ করে তা লাতিন ভাষার পরিবর্তে ইটালিয়ান ভাষায় প্রচার করতে থাকলে গালিলিওর বিরুদ্ধে ধর্মধ্বজীরা ষড়যন্ত্র শুরু করল। ধর্মপ্রবক্তাদের মত অনুযায়ী গালিলিও ধর্মদ্রোহী। তাঁর কার্যকলাপও ধর্মবিরোধী। ধর্মবিরোধিতার অভিযোগে গালিলিওকে অভিযুক্ত করা হল। তাঁর প্রকাশিত পুস্তক নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হল। ১৬১৬ খ্রিস্টাব্দে এই অপরাধে তাঁকেকারারুদ্ধ করা হয়। তাঁকে দিয়ে স্বীকার করিয়ে নেওয়া হয় তিনি যা বলেছেন তা ভুল বলেছেন। বিচারকদের সামনে সাদা পোশাক পরে তাঁকে হাঁটু গেড়ে বসতে হল। প্রথমে সিয়েনাতেএবং পরে ফ্লোরেন্সে তাঁকে নজরবন্দি করে রাখা হল। দেশের অমঙ্গল সাধনের জন্য যে অপরাধ তিনি করেছেন—তারই সাজা দেওয়া হল এভাবে। জীবনের শেষ নয়বছর অত্যন্ত দুঃখকষ্টের সঙ্গে অতিবাহিত করেন তিনি। তাঁর পরিচর্যায় নিযুক্ত কন্যাটিরও মৃত্যু ঘটে। গালিলিও প্রায়অন্ধ হয়ে গেলেন। পোপের নির্দেশে তাঁর ওপর নজরদারি কমলেও তখনও গালিলিও অসহায়ভাবে দিনযাপন করেছেন। ১৬৪২ খ্রিস্টাব্দে এইরূপ দুঃখ ও যন্ত্রণার মধ্য দিয়ে তিনি মৃত্যুকে বরণ করেন।
৬। “তিনি কুসংস্কার ও ধর্মান্ধতার যাঁতায় গুঁড়ো হয়ে গেলেন।” —তিনি কে? কেন এরূপ পরিণতি ঘটল ? ১+৪=৫
উত্তর গালিলিও গালিলাই মুক্তবুদ্ধি ও ধর্মনিরপেক্ষ বিজ্ঞানসাধক ছিলেন। তাঁর জীবনের চরম পরিণতি কী ঘটেছিল—সে কথা বলতে গিয়ে প্রাবন্ধিক সত্যেন্দ্রনাথ বসু তাঁর ‘গালিলিও’ প্রবন্ধে এরূপ মন্তব্য করেছেন। খ্যাতি ও প্রতিষ্ঠাই গালিলিওর জীবনে চরম বিপর্যয় ডেকে এনেছিল। টলেমীর বিশ্বব্যাখ্যাকে নস্যাৎ করে, ধর্মীয় বিশ্বতত্ত্বকে দূরে সরিয়ে, গালিলিও কোপারনিকাসের মতবাদকে প্রত্যক্ষ প্রমাণের ওপর ভিত্তি করে প্রতিষ্ঠা দিতে উদ্যোগী হলেন। সূর্যই যে জগতের কেন্দ্রস্বরূপ—এ সম্পর্কে তিনি মতবাদ প্রচার করতে থাকলেন। দূরবিনের সাহায্যে তিনি মহাজগতের অনেক অজানা তথ্যকে আবিষ্কার করলেন। কিন্তু প্রতিষ্ঠাপ্রাপ্তির চরম মুহূর্তেই তাঁর ওপর আঘাত নেমে এল। গালিলিওর বিরুদ্ধে ধর্মবিরোধী কার্যকলাপের অভিযোগ আনা হল। প্রত্যক্ষ প্রমাণের ভিত্তিতে গালিলিও সত্য উদ্ঘাটনে সচেষ্ট হলেও যেহেতু তাঁর আবিষ্কার ধর্মান্ধ, কুসংস্কারাচ্ছন্ন যাজক ও সনাতনপন্থীদের মতাদর্শের পরিপন্থী তাই তাঁর বিরুদ্ধে এই ধরনের অভিযোগ আনা হল। বিচারের নামে প্রহসন হল। বিচারকদের দৃষ্টিভঙ্গি নিরপেক্ষ ছিল না। তারা রাষ্ট্রীয় মতাদর্শ ও ধর্মাদর্শের অনুগত হয়ে গালিলিওকে কারারুদ্ধ করার নির্দেশ দিলেন। বিচারকবৃন্দ কোনো মুক্ত বিজ্ঞানসম্মত চিন্তার পরিচয় না দিয়ে রাষ্ট্রযন্ত্রের নির্দেশ পালন করলেন। বিজ্ঞানবিরোধী কাজের পরিচয় দিলেন বিচারকগণ। গালিলিওর মতবাদকে ‘ভুল’ বলা ছিল তাদের জীবনের সবচেয়ে বড়ো প্রাপ্তি।
গালিলিও বড় প্রশ্ন উত্তর,একাদশ শ্রেণীর বাংলা প্রবন্ধ 5 নং প্রশ্ন উত্তর
৮। গ্যালিলিওর ছাত্রজীবন সম্পর্কে যা জান লেখো।
উত্তর জগতে যিনি সত্যের আলো জ্বালিয়েছিলেন, তার শিখা উজ্জ্বল থেকে উজ্জ্বলতর হয় দিনে দিনে। এমনই এক বিশ্ববন্দিত বিজ্ঞানী গালিলিও গালিলাই। এরূপ বিজ্ঞানীর শিক্ষাজীবন শুরু হয়েছিল বাড়িতে পিতার কাছে। মঠে অধ্যয়নের জন্য ১৩ বছর বয়সে গালিলিওকে পাঠানো হয় ফ্লোরেন্স থেকে ৩০ কিমি দূরে ভালামব্রোসা বেনেডিক্টিন সম্প্রদায়ের মঠে। সেখানে দুই বছর গালিলিও সাহিত্য, ন্যায় ও ধর্মশাস্ত্র বিষয়ে পাঠ নিয়েছিলেন। পরবর্তীকালে গালিলিওকে ওই মঠের শিক্ষানবিশ ধর্মযাজকের পদ দেওয়া হয়। কিন্তু ছেলে সন্ন্যাসী হয়ে যাওয়ার ভয়ে পিতা তাঁকে সেখান থেকে নিজের কাছে এনে সংগীতে তালিম দেন। গালিলিও লিউট নামক বাদ্যযন্ত্রটি বাজানোয় দক্ষতা অর্জন করেন।
পিতার ঐকান্তিক ইচ্ছায় ১৫৮১ খ্রিস্টাব্দে গালিলিও পিসা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভরতি হন ডাক্তারি পড়ার জন্য। কিন্তু গালিলিও ডাক্তারি পাঠে উৎসাহ দেখালেন না। ডাক্তারি পড়ার সময় গালিলিওর সঙ্গে গণিতজ্ঞ আস্তিলিও রিকির সাক্ষাৎলাভ গালিলিওর জীবনের পট পরিবর্তন করে। রিকি গালিলিওর আগ্রহে অভিভূত হয়ে তাঁকে গণিতের শিক্ষা দেন। ডাক্তারি পড়া ছেড়ে রিকির তত্ত্বাবধানে গালিলিও গণিত ও পদার্থবিদ্যার
অধ্যয়ন শুরু করেন। ১৫৮৮ খ্রিস্টাব্দে তিনি পিসা বিশ্ববিদ্যালয়ে গণিতের শিক্ষকতার কাজ পান। কিন্তু এইসময় পিতার মৃত্যু হওয়ায় সংসার খরচ সামলানোর জন্য পাড়ুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দেন। এখানেই শুরু হয় গালিলিওর প্রকৃত বিজ্ঞানীর জীবন। প্রথম জীবনের শিক্ষা এভাবেই গালিলিওকে বিজ্ঞানী গালিলিওতে পরিণত করে।
1০। “এই জন্য সারাজীবন দেখা যায় গালিলিও একদিকে যেমন মহানুভব পরের কথা ভাবছেন।”—এর মধ্যে গালিলিওর চরিত্রের মানবিকতার দিকটি আলোচনা করো।
উত্তর ধর্ম ও বিজ্ঞানের সংঘাতে বিজ্ঞান যখন সত্যকে প্রকাশ করে তখন ধর্ম সেই সত্যকে স্বীকার করে না- কারণ সেটা ধর্মবিরোধী কথা এবং মানুষ সেই বৈজ্ঞানিক সত্যকে গ্রহণ করলে ধর্মের প্রতি আস্থা হারাবে। এ কারণে সত্যের বিপরীত পথে হেঁটে ধর্মধ্বজীরা বৈজ্ঞানিক সত্যের কণ্ঠরোধ করে সত্যকে দমন করতে উদ্যত হয়। এরকমই এক বিশ্বখ্যাত বিজ্ঞানী ধর্মধ্বজীদের রোষানলে পড়েছিলেন— যিনি গালিলিও নামে পরিচিত। সত্যেন্দ্রনাথ বসুর ‘গালিলিও' রচনায় এই বিজ্ঞানীর মহানুভবতার দিকটি সুপরিস্ফুট। গালিলিওর বিশ্বজোড়া খ্যাতি শুরু হয় মাত্র ২৪ বছর বয়সেই। কিন্তু পারিবারিক আর্থিক অস্বাচ্ছন্দ্য দূর করতে তাঁকে পরিবারের কথা মাথায় রেখে ‘পিসা’ বিশ্ববিদ্যালয়ে গণিতের শিক্ষকতা শুরু করতে হয়। পিতার অকাল প্রয়াণে পরিবারের সামগ্রিক দায়িত্ব তাঁর ওপরেই বর্তায়। তিনি সেই গুরভার কখনোই অস্বীকার করেননি। ভাই এনজেলোর অনুপস্থিতিতে তাঁর স্ত্রী ও সাত সন্তানের দায়িত্ব তাঁর ওপরেই বর্তায়। ফলে দেখা গেল গালিলিও বিজ্ঞানী, গ্যালিলিও আবিষ্কারক; তারও
আগে তিনি একজন দায়িত্বশীল মানুষ। সে কারণে তিনি কখনো অধ্যাপনা, কখনো টিউশনি, কখনো ব্যাবসা বা কখনো রাজার পরামর্শদাতা—সকল কাজই করেছেন সফলতার সঙ্গে। যার মধ্য দিয়ে তাঁর চরিত্রের মানবিক সংবেদনশীলতার দিকটি সুপরিস্ফুট।
৭। “১৬০৯ সালে ঘটলো এক নতুন ব্যাপার।” ঘটনাটি কী, সেই ঘটনার পরে দেশের পরিস্থিতি কী দাঁড়িয়েছিল? ১+৪=৫
বিশ্ববন্দিত বিজ্ঞানী সত্যেন্দ্রনাথ বসু রচিত ‘গালিলিও’ প্রবন্ধ থেকে আলোচ্য অংশটি গৃহীত। হল্যান্ড দেশের এক ব্যক্তি কাচের লেন্স নিয়ে নড়াচড়া করতে করতে হঠাৎ একটি নলের দুপাশে রেখে দেখছিলেন—তাতে দূরের জিনিসকে বড়ো ও অনেক কাছে বলে মনে হচ্ছে। এই ঘটনার কথাই আলোচ্য অংশে বর্ণিত। হল্যান্ড অধিবাসীর এই আবিষ্কারকে সামনে রেখে গালিলিও তৈরি করলেন একটি নতুন যন্ত্র দূরবিন। হল্যান্ডের মানুষটি তার তৈরি যন্ত্রে দূরের জিনিসকে উলটো দেখছিলেন। গালিলিওর দূরবিনে সমস্ত জিনিসকে সোজা অবস্থানেই দেখা যাচ্ছিল। ভেনিস-এ তখন সমুদ্রপথেই ব্যাবসাবাণিজ্য চলত। সমুদ্রপথে নৌবহরকে সুরক্ষা দিতে শত্রুপক্ষের আক্রমণ থেকে রক্ষা পাবার জন্য সরকার দূরবিনের সাহায্য নিতে শুরু করল। ফলে দূরবিন তৈরির দায়িত্ব এসে পড়ল গালিলিওর ওপর। অপর্যাপ্ত অর্থ আমদানির সঙ্গে সঙ্গে গালিলিও বিশ্বসমীক্ষার যন্ত্র পেয়ে নতুন করে ভাবনার অবকাশ পেলেন। তাঁর তৈরি দূরবিনে ধরা পড়ল চাঁদের পর্বতমালা, বৃহস্পতির উপগ্রহ, সূর্যের কলঙ্ক, শনির বলয়, শুক্রগ্রহের চন্দ্রের মতো ঔজ্জ্বল্যের হ্রাসবৃদ্ধি। কোপারনিকাসের সমীক্ষাকে তিনি প্রতিষ্ঠা দিতে তৎপর হলেন। এর ফলেই গালিলিওর জীবনে নেমে আসে চরম বিপর্যয়। ধর্মযাজকরা গালিলিওর দূরবিনে দেখা ঘটনাকে অবিশ্বাস করলেন। সেটিকে যন্ত্রের কারসাজি বলে তাঁরা মনে করতে লাগলেন। গালিলিওএইকুসংস্কারাচ্ছন্ন মানুষগুলির কোনো কথাকে গ্রাহ্য না করে নিজের আবিষ্কারে মগ্ন থাকলেন।
[TAG]: একাদশ শ্রেণি গালিলিও প্রবন্ধ pdf,গালিলিও প্রবন্ধ mcq,গালিলিও বড় প্রশ্ন উত্তর,একাদশ শ্রেণি,একাদশ শ্রেণির বাংলা প্রবন্ধ প্রশ্ন উত্তর,একাদশ শ্রেণির বাংলা প্রবন্ধ,একাদশ শ্রেণির বাংলা প্রবন্ধ 3 নং প্রশ্ন উত্তর,একাদশ শ্রেণির বাংলা প্রবন্ধ বড় প্রশ্ন উত্তর,একাদশ শ্রেণির বাংলা প্রবন্ধ 1 প্রশ্ন উত্তর,Class 11 Bengali Galileo question in bengali,
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন