প্রাত্যহিক জীবনে বিজ্ঞান প্রবন্ধ রচনা Class 5, 6, 7, 8, 9
প্রাত্যহিক জীবনে বিজ্ঞান প্রবন্ধ রচনা
ভূমিকা: নিশ্বাস-প্রশ্বাসের মতো বিজ্ঞানও আজ আমাদের কাছে অপরিহার্য। দিনের একটা মুহূর্তও বিজ্ঞানের সাহায্য ছাড়া আমরা চলতে পারি না। সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর থেকে সারাদিনের নানা কাজকর্মের মধ্যে কীভাবে বিজ্ঞানের অবদান লুকিয়ে আছে তা একটু সতর্ক হলেই লক্ষ করা যায় ।
ব্যাবহারিক জীবনে বিজ্ঞান: সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর সংবাদপত্র পাঠ করে সমগ্র দুনিয়ার খবর সংগ্রহ, গ্যাস অথবা স্টোভেতাড়াতাড়ি রান্না করে খাওয়া, কয়েক মাইল দূরত্বকে বাস বা ট্রেনের মাধ্যমে হ্রাস করে অফিস বা স্কুলে যাওয়া—এইভাবে প্রতি মুহূর্তে আমরা বিজ্ঞানের সাহায্যে জীবনটাকেউপভোগ করে চলেছি। আবার সারাদিনের কাজের ক্লান্তি দূর করার জন্য রেডিয়ো বা টেলিভিশন চালিয়ে মনটাকে সতেজ বা উৎফুল্ল রাখতে ভরসা সেই বিজ্ঞান।
শরীর, স্বাস্থ্য ও চিকিৎসায় বিজ্ঞান : বিজ্ঞান ছাড়া বর্তমান যুগে সুস্থ থাকার কথা কল্পনাই করা যায় না। বর্তমানে পরিবেশের পরিবর্তনের ফলে নানান অদ্ভুত রোগের সৃষ্টি হচ্ছে। মানুষকে সেই দুরারোগ্য ব্যাধিথেকে উদ্ধার করার জন্য বিজ্ঞানও তার কল্যাণকর দিকটিকে তুলে ধরেছে। আবিষ্কৃত হয়েছে অনেক আধুনিক ওষুধ। পেনিসিলিন, ক্লোরোমাইসেটিন ইত্যাদি ওষুধ মানুষকে জীবন দান করেছে।
অন্যান্য ক্ষেত্রে বিজ্ঞানের প্রভাব : দৈনন্দিন জীবনের প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রেই বিজ্ঞানের প্রভাব রয়েছে। শহরজীবনকে অতিক্রম করে গ্রাম্যজীবনেও বিজ্ঞানের ওপর নির্ভরতা ক্রমশ বেড়েই চলেছে। টুথপেস্ট থেকে শুরু করে টিভি, কম্পিউটার কিংবা মোবাইল ফোনের ব্যবহার গ্রামীণ জীবনেও অপরিহার্য হয়ে উঠেছে। রাসায়নিক সার, কীটনাশক দ্রব্য প্রভৃতি কৃষিজীবি মানুষের দৈনন্দিন জীবনের অঙ্গ হয়ে গেছে। অন্যদিকে শহরের মানুষ জীবনযাত্রাকে উন্নত ও সহজতর করতে বিজ্ঞানকে নিত্যসঙ্গী করে নিয়েছে।
দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞানের অপকারিতা: আধুনিক জীবনে বিজ্ঞানের ওপর অপরিমিত নির্ভরতা মানুষের অনেক ক্ষতি করছে। যন্ত্রের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরশীল হওয়ায় মানুষ পরিশ্রমবিমুখ হয়ে উঠেছে। মানসিক পরিশ্রমের তুলনায় শারীরিক পরিশ্রম খুবই কম হওয়ায় নানা জটিল রোগের সৃষ্টি হচ্ছে। আবার যন্ত্রনির্ভরতার ফলে মানুষ ক্রমশ প্রকৃতির কাছ থেকেও দূরে সরে যাচ্ছে। এ ছাড়া আর্থিকসংগতির অভাবে বহু মানুষ বিজ্ঞানের নানাবিধ আশীর্বাদ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এর ফলে মানুষে মানুষে বিভেদ বাড়ছে।
উপসংহার: বিজ্ঞানের জয়যাত্রার পূর্বে মানুষের দৈনন্দিন জীবন ছিল নীরস, গতানুগতিক। বর্তমানে বিজ্ঞান সেই বিপুল পরিমাণ মানবশক্তির অপচয় থেকে সমাজ ও সভ্যতাকে রক্ষা করেছে। মানুষের জীবনযাপন হয়েছে সহজ, আরামপ্রদ । তবে এ কথা মনে রাখা উচিত যে, বিজ্ঞানকে সর্বদা কল্যাণকর কাজে ব্যবহার করাই শ্রেয়।