নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু প্রবন্ধ রচনা Class 5, 6, 7, 8, 9
প্রবন্ধ নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু
[রচনা সংকেত : ভূমিকা— জন্ম ও শিক্ষা—কর্মজীবন—উপসংহার।]
উত্তর :
ভূমিকা : দেশমাতৃকার পরাধীনতার শৃঙ্খলমোচনের জন্য যে বরেণ্য দেশনায়ক নিরুদ্দেশ যাত্রার শামিল হয়ে আর দেশে ফেরেননি তিনি ভারতমাতার সুযোগ্য সন্তান নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু। সুভাষচন্দ্র দেশপ্রেমের উজ্জ্বল দীপশিখা। দেশবাসীর প্রেরণাস্থল।
জন্ম ও শিক্ষা : ১৮৯৭ খ্রিস্টাব্দের ২৩ জানুয়ারি ওড়িশার কটক শহরে সুভাষচন্দ্রের জন্ম। পিতা জানকীনাথ বসু ও মাতা প্রভাবতী দেবী। কটকের মিশনারি স্কুলে বিদ্যারম্ভ। র্যাভেনশ কলেজিয়েট স্কুল
থেকে প্রবেশিকা পরীক্ষায় দ্বিতীয় স্থান লাভ করেন। এরপর প্রেসিডেন্সি কলেজে ভরতি হন। ভারতীয়দের সম্পর্কে অধ্যাপক ওটেনের অসম্মানকর বক্তব্যের প্রতিবাদ করলে তিনি কলেজ থেকে বহিষ্কৃত হন। স্যার আশুতোষ মুখোপাধ্যায়ের চেষ্টায় স্কটিশ চার্চ কলেজে ভরতি হন। দর্শনশাস্ত্রে অনার্স নিয়ে বি. এ. পাস করেন। অতঃপর আই. সি. এস পরীক্ষার জন্য বিলেত যাত্রা এবং চতুর্থ স্থান লাভ করেন।
কর্মজীবন : ১৯২০ খ্রিস্টাব্দের সুভাষ দেশে ফিরে দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জনের সহকর্মী হিসেবে স্বাধীনতা আন্দোলনে যোগ দেন। কংগ্রেসের সম্পাদক, কলকাতা কর্পোরেশনের মেয়ররূপে তিনি অসামান্য
দক্ষতার পরিচয় রাখেন। ১৯৩৮ খ্রিস্টাব্দে হরিপুরা কংগ্রেসের সভাপতি হন আবার ১৯৩৯ খ্রিস্টাব্দে ত্রিপুরি অধিবেশনের সভাপতি হন। মতভেদের কারণে সুভাষচন্দ্র পদত্যাগ করেন নতুন দল ফরওয়ার্ড ব্লক গড়ে তোলেন। জীবনের অনেকটা সময় কারান্তরালে অতিবাহিত করার ফলে সুভাষচন্দ্র অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁকে তাঁর বাড়িতে অস্তরিন রাখা হয়। ১৯৪১ খ্রিস্টাব্দে ২৬ জানুয়ারি প্রহরীদের চোখে ধুলো দিয়ে কাবুল-বার্লিন অতিক্রম করে সিঙ্গাপুর পৌঁছে যান। সেখানে বিপ্লবী রাসবিহারী বসুর আজাদ হিন্দ্ ফৌজের দায়িত্ব নেন। তিনি হলেন দলের সর্বাধিনায়ক। ১৯৪৪ খ্রিস্টাব্দে আজাদ হিন্দ ফৌজ ব্রিটিশ রাজের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেন—‘দিল্লি চলো’। ১৯৪৫ খ্রিস্টাব্দে ১৮ মার্চ ভারতের মাটিতে তুললেন জাতীয় পতাকা। আজাদ হিন্দ ফৌজের পত্তন হয়। নেতাজি বিমানে করে জাপান যাত্রা করেন। তারপর সেই মর্মান্তিক সংবাদ। তাইহোকুর বিমান দুর্ঘটনায়
নেতাজির মৃত্যু। কিন্তু সেই দুর্ঘটনার পরিণতি সম্বন্ধে সঠিক তথ্য আজও রহস্যাবৃত।
উপসংহার : নেতাজির মৃত্যু নিয়ে আজও সংশয়, কৌতুহল। ভারতবাসীর হৃদয়ে নেতাজি চিরকাল বেঁচে থাকবেন তাতে কোনো সংশয় নেই। তাদের কামনা—‘তোমার আসন শূন্য আজি/হে বীর পূর্ণ করো'।
অনুরূপ রচনা : জয়তু নেতাজি। তোমার প্রিয় দেশনায়ক।