পরিবেশের প্রভাব প্রবন্ধ রচনা Clas 5, 6, 7, 8, 9

WhatsAp Group Join Now
Telegram Group Join Now

প্রবন্ধ রচনা : পরিবেশের প্রভাব

[রচনা সংকেত : ভূমিকা—প্রাকৃতিক পরিবেশ ও মানবজীবন—সামাজিক পরিবেশ ও মানজীবন—সুস্থ পরিবেশ রক্ষার গুরুত্ব—উপসংহার।]


ভূমিকা : ভূমিষ্ঠ হওয়ার শুভ মুহূর্তেই মা ধরিত্রী তাঁর ধুলো-মাটি মাখা কোলে আমাদের সস্নেহে তুলে নেন। তাঁর আকাশভরা আলোর সমুদ্রে আমরা চোখ মেলি। বুক ভরে টেনে নিই তাঁর প্রাণদ বাতাস। তাঁর নদীনালা-ঝরনায় জল মেটায় তৃষ্ণা। ফলমূল দূর করে জঠরজ্বালা। মুঠো মুঠো দূর্বা আর গাছগাছালির সবুজ ঘ্রাণ সতেজ ও সজীব করে। এভাবে গর্ভধারিণী মায়ের হাত ধরে আমরা প্রকৃতি মায়ের ঘনিষ্ঠ সান্নিধ্যে পৌঁছোই। বাড়ির আঙিনাকে ঘিরে আলো-বাতাস, ঝড়-বৃষ্টি, গাছপালা, পশুপাখি, চন্দ্র-সূর্য, গ্রহনক্ষত্র নিয়ে যে নিত্যদিনের পরিচিত পরিবেশ তার সঙ্গে পরিচয় নিবিড় থেকে নিবিড়তর হয়।


প্রাকৃতিক পরিবেশ ও মানবজীবন : ঘর বেঁধে বাস করার আগে প্রাকৃতিক পরিবেশের সরাসরি প্রভাবে আমরা ছিলাম অরণ্যবাসীরা আজও প্রকৃতির কোলে প্রকৃতিরই ঘনিষ্ঠ সাহচর্যে মানুষ। আমরা সভ্য ও গৃহী হলেও প্রকৃতির সরাসরি প্রভাব থেকে দূরে সরে গেছি। ফলে প্রকৃতির দেওয়া আলো, বাতাস, জল, ফলমূলের জোগান গেছে কমে। অথচ এগুলির পরিমিত জোগান না থাকলে জীবন বাঁচে না। দুঃখের কথা, আমরা ভ্রান্ত মানুষ ভোগ সুখের জন্য ইট-কাঠ-পাথরের দেয়াল তুলে প্রকৃতি থেকে ক্রমশ বিচ্ছিন্ন হচ্ছি।


সামাজিক পরিবেশ ও মানবজীবন : প্রাকৃতিক পরিবেশের পাশাপাশি সামাজিক পরিবেশের গুরুত্বও অস্বীকার করা যায় না। খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও আত্মরক্ষা প্রতিটি বিষয়েই আমরাসমাজের ওপর নির্ভর করি। চাষি খাদ্য জোগায়। তাঁতি বস্ত্রের জোগান দেয়। ঘরামি ঘর তৈরি করে। শিক্ষকমশায় শিক্ষা দেন। স্বাস্থ্যকর্মী স্বাস্থ্য রক্ষায় কাজ করেন। দেশের প্রশাসন আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করে। এভাবে সমাজের ছোটো-বড়ো অসংখ্য মানুষের সহযোগিতায় আমরা বড়ো হই। আমাদের জীবন পূর্ণতা ও সার্থকতার দিকে এগোয়।

সুস্থ পরিবেশ রক্ষার গুরুত্ব : প্রাকৃতিক ও সামাজিক পরিবেশ নিয়ে আমাদের জীবনের সামগ্রিক পরিবেশ। পরিতাপের কথা, সুস্থ পরিবেশ রক্ষার গুরুত্ব ও দায়দায়িত্ব সম্পর্কে আমরা সজাগ নই । মাটি থেকে গাছ তার প্রাণের রসদ টেনে নেয়। আমরাও পরোক্ষভাবে জীবনীশক্তি নিই পরিবেশের সরল মৃত্তিকা থেকে। সেজন্য পরিবেশকে সুস্থ ও সুন্দর রাখার দায়িত্ব আমাদের সবার। সুস্থ পরিবেশই দেয় সুস্থ মন ও সুস্থ জীবন। দেয় দীর্ঘ পরমায়ু।


উপসংহার : আর এজন্যই বিশ্বের কল্যাণকামী মানুষ পরিবেশ ভাবনায় ভাবিত। পরিবেশকে দূষণমুক্ত রাখার প্রয়াস প্রচেষ্টার শেষ নেই। সরকারি ও বেসরকারি বহু উদ্যোগ ও আয়োজন হয়েছে। উদ্যোগ-আয়োজন ঠিক মতন কার্যকরী হলে দূষণমুক্ত পরিবেশ মানবজীবন ও সভ্যতাকে দেবে দীর্ঘায়ু।


Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url