বিভাব নাটক প্রশ্ন উত্তর|উচ্চমাধ্যমিক বাংলা বিভাব নাটক প্রশ্ন উত্তর PDF |Bibhab natok question answer

WhatsAp Group Join Now
Telegram Group Join Now

বিভাব -শম্ভু মিত্র| দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা বিভাব প্রশ্ন উত্তর |HS bengali Bibhab natok question answer pdf download.


আজ আমি তোমাদের জন্য নিয়ে এসেছি উচ্চমাধ্যমিক বিভাব প্রশ্ন উত্তর PDF। Class 12 bengali Bibhab natok question answer pdf|WBCHSE পরীক্ষা প্রস্তুতির জন্য দ্বাদশ শ্রেণি বাংলা নাটক বিভাব প্রশ্ন উত্তর pdf download. তোমাকে সাহায্য করবে।


তাই দেড়ি না করে এই পোস্টের নীচে দেওয়া Download লিংকে ক্লিক করে |সমর সেনের লেখা বিভাব প্রশ্ন উত্তর pdf download করো এবং প্রতিদিন বাড়িতে বসে প্রাক্টিস করে থাকতে থাক।ভবিষ্যতে আরো গুরুত্বপূর্ণ Note ,Pdf ,Current Affairs,ও প্রতিদিন মকটেস্ট দিতে আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন।


উচ্চমাধ্যমিক বাংলা বিভাব প্রশ্ন উত্তর নিচে দেওয়া হলো।

Read More:--


দ্বাদশ শ্রেণি বাংলা বিভাব 1 নম্বরের প্রশ্ন উত্তর 

১. শম্ভু মিত্রের ‘বিভাব’ নাটকটি আঙ্গিকের দিক থেকে কী ধরনের নাটক?

উত্তর: শম্ভু মিত্রের ‘বিভাব’ নাটকটি একটি একাঙ্ক নাটক।

২. ‘বিভাব’ নাটকে অমর গাঙ্গুলি কোন্ নাট্যদলের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন?

উত্তর: শম্ভু মিত্রের ‘বিভাব’ নাটকে অমর গাঙ্গুলি ‘বহুরূপী’ নাট্যদলের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।

o. ‘বিভাব’ নাটকে ‘বৌদি’ কে ছিলেন?

উত্তর: ‘বিভাব’ নাটকে ‘বহুরূপী’র সভ্য স্বজনদের কাছে শম্ভু মিত্রের স্ত্রী অভিনেত্রী তৃপ্তি মিত্র ‘বৌদি’ হিসেবে পরিচিত ছিলেন।

৪. শম্ভু মিত্রের ‘বিভাব' নাটকটি শুরু হয়েছে কীভাবে?

উত্তর: শম্ভু মিত্রের ‘বিভাব’ নাটকটি শুরু হয়েছে দর্শকদের সঙ্গে শম্ভু মিত্রের এক দীর্ঘ কথোপকথনের মধ্য দিয়ে।

‘বিভাব’ নাটকের নামকরণ হয়েছিল কীভাবে? [উচ্চমাধ্যমিক, ২০১৬]

উত্তর: কোনো এক ভদ্রলোক পুরোনো সব নাট্যশাস্ত্র খুঁজে শম্ভু মিত্রের নাটকের নাম দিয়েছিলেন ‘বিভাব’ |

৬. শম্ভু মিত্রের মতে ‘বিভাব’ নাটকের নাম কী হওয়া উচিত ছিল?

উত্তর: শম্ভু মিত্রের মতে ‘বিভাব’ নাটকের নাম হওয়া উচিত ছিল ‘অভাব নাটক’ |


উচ্চমাধ্যমিক বাংলা বিভাব mcq প্রশ্ন উত্তর

কমবেশি ২০টি শব্দে উত্তর দাও।

১. “বুদ্ধিটা কী করে এল তা বলি।”—কোন্ বুদ্ধির কথা এখানে বলা হয়েছে?

উত্তর: প্রয়োজনীয় নাট্য-উপকরণকে অগ্রাহ্য করে দর্শকের সামনে কীভাবে

নাটককে আকর্ষণীয়ভাবে উপস্থাপিত করা যায়—সেই বুদ্ধির কথা এখানে বলা হয়েছে |

২. “এক পুরোনো বাংলা নাটকে দেখি...”—নাট্যকার সেখানে কী দেখেছিলেন?

উত্তর: নাট্যকার শম্ভু মিত্র একটি পুরোনো বাংলা নাটকে দেখেছিলেন যে, লেখা আছে “রাজা রথারোহণম্ নাটয়তি’’ | অর্থাৎ “রাজা রথে আরোহণ করার ভঙ্গি করলেন”।

৩. ‘বিভাব’ নাটকে উল্লিখিত ‘রাজা রথারোহণম নাটয়তি’ কথাটির অর্থ কী?

উত্তর: ‘বিভাব’ নাটকে উল্লিখিত ‘রাজা রথারোহণম নাটয়তি’ কথাটির অর্থ—‘রাজা রথে আরোহণ করার ভঙ্গি করলেন।”

৪, “তমে ঘোড়া নেইকরি চঞ্চল খবর নেই আসিবি।”—কে এ কথা কাকে বলেছিলেন বলে ‘বিভাব’ নাটকে উল্লেখ আছে?

উত্তর: শম্ভু মিত্রের ‘বিভাব' নাটক থেকে জানা যায় যে উপরোক্ত কথাটি • উড়ে দেশের যাত্রায় রাজা বলেছিলেন তাঁর দূতকে।

5. . ওড়িয়া নাটকে দূত ঘোড়ায় চড়ার অভিনয় কীভাবে করে?

উত্তর: ওড়িয়া নাটকে রাজা যখন দূতকে ঘোড়ায় চেপে দ্রুত খবর নিয়ে আসার কথা বলেন, তখন দূত ছোটো ছেলের মতো দুই পায়ের ফাঁকে লাঠি গলিয়ে ঘোড়ায় চড়ার ভঙ্গিতে হেট্ হেট্ করতে করতে মঞ্চ ছেড়ে বেরিয়ে যায়।


বিভাব নাটক বড় প্রশ্ন উত্তর

১ “বুদ্ধিটা কী করে এল তা বলি।”—কোন্ বুদ্ধি এবং তা কীভাবে এল—নাট্যকারকে অনুসরণ করে আলোচনা করো।

উত্তর শম্ভু মিত্র তাঁর ‘বিভাব’ নাটকে গ্রুপ থিয়েটারের নানারকম সমস্যার পাশাপাশি সেই সমস্যা থেকে মুক্তির পথও সন্ধান করেছেন। মঞ্চ বা মঞ্চসজ্জার উপকরণসমূহ না থাকা সত্ত্বেও কীভাবে নাটক মঞ্চস্থ করা যায়, ‘বুদ্ধি’ শব্দটির প্রয়োগে তার উপায় খুঁজে বের করার কথাই নাট্যকার বোঝাতে চেয়েছেন।

→ নাট্যকারের একবার চোখে পড়ে, কোনো এক পুরোনো বাংলা নাটকে ‘রাজা রথারোহণম নাটয়তি’ অর্থাৎ রাজা রথে আরোহণ করার ভঙ্গি করলেন—এ কথা লেখা ছিল। অর্থাৎ উপকরণ ছাড়াই কেবল ভঙ্গির মাধ্যমে অভিনয় সম্পন্ন করার একটি রেওয়াজ বাংলা নাটকে আগে থেকেই ছিল। উড়িষ্যার যাত্রাতেও ঘোড়ার অনুপস্থিতিতেই একটিমাত্র লাঠি সম্বল করে রাজার নির্দেশে দূতের খবর নিয়ে আসার উদাহরণ রয়েছে। একইভাবে মারাঠি তামাশাতেও ভঙ্গিনির্ভর অভিনয়ের সাহায্যে জমিদারের কাছে চাষির কাতর আবেদন, কিংবা ব্যর্থমনোরথ হয়ে মন্দিরে গিয়ে ভগবানের কাছে নালিশের দৃশ্য অভিনীত হতে দেখেছেন নাট্যকার | এভাবেই দর্শকদের কল্পনার সাহায্য নিয়ে ভঙ্গিনির্ভর নাট্য অভিনয়ের যে ঐতিহ্য রয়েছে, সেখান থেকেই নিজেদের নাটক মঞ্চস্থ করার বুদ্ধি পেয়েছিলেন নাট্যকার  শম্ভু মিত্র।


“আমাদের মনে হয় এর নাম হওয়া উচিত 'অভাব নাটক'।"—অভাবের চিত্র ‘বিভাব' নাটকে কীভাবে প্রকাশ পেয়েছে লেখো। [উচ্চমাধ্যমিক, ২০১৫;

• উত্তর শম্ভু মিত্রের ‘বিভাব' নাটকে আমরা দেখি যে, জনৈক ভদ্রলোক পুরোনো নাট্যশাস্ত্র ঘেঁটে শম্ভু মিত্র রচিত নাটকের নাম দিয়েছিলেন ‘বিভাব’ | ‘বিভাব’ শব্দটির অর্থ হল মনের মধ্যে সৃষ্টি হওয়া ন-টি রসানুভূতির কারণ। কিন্তু নিজের নাট্যভাবনা ও অভিজ্ঞতার সঙ্গে এই নামের বিরোধ খুঁজে পেয়েছেন স্বয়ং নাট্যকারই | একারণেই তাঁর মনে হয়েছে, তাঁদের নাটকের নাম হওয়া উচিত ‘অভাব নাটক’ | প্রবল অভাব থেকেই তাঁদের এই নাটকের জন্ম। সেখানে ভালো মঞ্চ নেই, নেই আলো বা ঝালর ইত্যাদি মঞ্চসজ্জার বিবিধ উপকরণ | থাকার মধ্যে শুধু আছে নাটক করার অদম্য আকাঙ্ক্ষা | এর ওপর রয়েছে সরকারের চূড়ান্ত অসহযোগিতাও | এত কষ্ট করে সব কিছু জোগাড় করে অভিনয়ের ব্যবস্থা করা হলেও উঠে আসে খাজনার দাবি | পেশাদারি মঞ্চকে যে খাজনা দিতে হয় না, গ্রুপ থিয়েটারকে তা দিতে হয়। সরকারের এই বিমাতৃসুলভ দৃষ্টিভঙ্গিকে তীব্র শ্লেষে বিদ্ধ করে নাট্যকার এরপর নিজের ক্ষোভ উগরে দিয়ে জানান—“...আমরা তো নাটক নিয়ে ব্যবসা করি না, তাই সরকার আমাদের গলা টিপে খাজনা আদায় করে নেন।” এই চূড়ান্ত প্রতিকূলতায় গ্রুপ থিয়েটারের পক্ষে নিজের পায়ে দাঁড়ানো অনেক সময়েই সম্ভব হয়ে ওঠে না। গ্রুপ থিয়েটারের প্রবল অভাবের এই চিত্রই ‘বিভাব’ নাটকে প্রকাশ পেয়েছে।

“আর একবার এক মারাঠি তামাশায় দেখেছিলাম” –বক্তা মারাঠি তামাশায় কী দেখেছিলেন? বক্তা কোন্ প্রসঙ্গে মারাঠি তামাশার কথা বলেছিলেন? ৪+১ [উচ্চমাধ্যমিক, ২০১৬]

উত্তর শম্ভু মিত্রের লেখা ‘বিভাব’ নাটক থেকে সংকলিত এই উদ্ধৃতিটিতে নাট্যকারের দেখা মারাঠি তামাশার প্রসঙ্গ রয়েছে। নাট্যকার শ্রী শম্ভু মিত্র মারাঠি তামাশায় দেখেন যে, মঞ্চের একদিকে দাঁড়িয়ে থেকে চাষি জমিদারের কাছে অনেক অনুরোধ-উপরোধ করে। তার সমস্ত চেষ্টা ব্যর্থ হলে সে মন্দিরে যায় ভগবানের কাছে অভিযোগ জানাতে | চাষি মন্দিরে গেলেও মঞ্চের বাইরে সে গেল না, মঞ্চের তক্তার ওপর কয়েকবার সে এমনভাবে ঘুরপাক খেল যে, তাকে দেখে মনে হল সে যেন গ্রামটা পেরিয়ে গেল | তারপর একপাশে গিয়ে সে কাল্পনিক মন্দিরকে লক্ষ করে ভগবানের উদ্দেশে তার মনের দুঃখ কথা নিবেদন করতে লাগল। কিছু আগে যে জমিদারের পাঠ করেছিল, সে মঞ্চে দাঁড়িয়েই মুখে দাড়ি-গোঁফ এঁটে পুরোহিত সাজল এবং মন্দিরের সামনে দাঁড়ানো চাষির কাছে এসে ধর্মীয় তর্জনগর্জন করতে লাগল। শ্রী শম্ভু মিত্র মারাঠি তামাশার এই দৃশ্যই দেখেছিলেন এবং তিনি এও লক্ষ করেছিলেন যে, মাঠ-ভরতি দর্শক এই আজব অভিনয় নিঃশব্দে বিনা বাক্যে দেখে চলেছে।

→ নাট্যকার শম্ভু মিত্র গ্রুপ থিয়েটারের নানাবিধ অসুবিধার কথা বলতে গিয়ে বলেন যে, মঞ্চ বা মঞ্চসজ্জার উপকরণসমূহ না থাকা সত্ত্বেও নাটক মঞ্চস্থ করা যায়। এই সিদ্ধান্তটা কীভাবে তার মাথায় এল, তার কারণ হিসেবেই নাট্যকার মারাঠি তামাশার প্রসঙ্গ এনেছেন।


বিভাব 1 নম্বরের প্রশ্ন উত্তর প্রশ্ন উত্তর

কমবেশি ২০টি শব্দে উত্তর দাও।

১. “এমনি সময় হঠাৎই এক সাহেবের লেখা পড়লাম।”—সাহেবের নাম কী ছিল?

উত্তর: ‘বিভাব’ নাটকে উল্লিখিত এই সাহেব ছিল বিখ্যাত রুশদেশীয় চিত্রপরিচালক আইজেনস্টাইন।

২. আইজেনস্টাইন কাবুকি থিয়েটারের অভিনয় কোথায় দেখেছিলেন?

উত্তর: আইজেনস্টাইন মস্কোতে কাবুকি থিয়েটারের অভিনয় দেখেছিলেন।

৩. “তাদের অভিনয় দেখে আইজেনস্টাইন সাহেব অত্যন্ত উচ্ছ্বসিত হয়ে অনেক কথা লিখেছেন।”—কাদের অভিনয়ের কথা বলা হয়েছে?

উত্তর:[: মস্কোতে জাপানি থিয়েটার কাবুকির অভিনয়ের কথা বলা হয়েছে।

৪. ‘বিভাব’ নাটকে উল্লিখিত ‘কাবুকি’-র বৈশিষ্ট্য কী?

উত্তর: ‘বিভাব’ নাটকে উল্লিখিত ‘কাবুকি’ থিয়েটারের বৈশিষ্ট্য ছিল সেই

নাটকের অভিনয়ে ভঙ্গির বহুল ব্যবহার করা হত।

৫. “অর্থাৎ Perspective রচনা হল আর কী।”—কীভাবে এই পারস্পেক্‌টিভ রচিত হয়েছিল?

উত্তর: নাইটের বেরিয়ে যাওয়ার সময়ে শিফটারদের দুর্গদ্বার হাতে দাঁড়ানো এবং তার এগোনোর সঙ্গে সঙ্গে ক্রমশ ছোটো দরজার ব্যবহার—এভাবে পারস্পেক্‌টিভ রচিত হয়েছিল।

৬. “... কাল্পনিকভাবে সরে গেল।”—কার কথা বলা হয়েছে?

উত্তর: জাপানের কাবুকি থিয়েটারে ভঙ্গিনির্ভর অভিনয়ে কাল্পনিক তরোয়াল হাতে দুই যোদ্ধার লড়াইয়ে যার শেষ অবধি কাল্পনিক মৃত্যু ঘটে তার কথা বলা হয়েছে।

৭. “খুব আর্টিস্টিক মরা, একেবারে ইসথেটিক মরা।”—এই মৃত্যু কীরকম?

উত্তর: : জাপানের কাবুকি নাটকে দেখা যায় দুই যোদ্ধার লড়াইয়ে যার মৃত্যু

কমবেশি ২০টি শব্দে উত্তর দাও।

১. “কী করে যাব? দরজা বন্ধ যে!”—কোন্ দরজার কথা এখানে বলা হয়েছে?

উত্তৱ: ‘বিভাব' নাটকে অমর গাঙ্গুলির কল্পিত বাড়ির নীচতলায় যে কল্পিত দরজাটি ছিল, যার সামনে দাঁড়িয়েছিলেন শম্ভু মিত্র, সেই দরজার কথা বলা হয়েছে।

২. “এমনি এলাম—একেবারে এমনি নয়...”—বক্তার আসার কারণ কী?

উত্তর: হাসির নাটক লেখার খোরাক জোগাড় করতে ‘বিভাব’ নাটকের নাট্যকার শম্ভু মিত্র অমরবাবুর বাড়িতে এসেছিলেন। 

এবাঙালিরা শুনি কাঁদুনে জাত”—কে, কার উদ্দেশ্যে বলেছেন?

উত্তর: এটি আসলে বল্লভভাইয়ের মন্তব্য হলেও এখানে অমর গাঙ্গুলি শম্ভু মিত্রকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন।

৪. “সম্পাদক বলেছে হাসির নাটক করতে হবে”—এ কথা বলার কারণ কী?

উত্তর: হাসির নাটকের ‘দারুণ বক্স অফিস' অর্থাৎ দর্শকচাহিদা বেশি থাকার জন্য সম্পাদক হাসির নাটক করতে চলেছেন।

৫. ‘বিভাব’ নাটকের নাট্যকার শম্ভু মিত্রকে নাট্যদলের সম্পাদক কী বলেছিলেন?

উত্তর: ‘বিভাব’ নাটকের নাট্যকার শম্ভু মিত্রকে নাট্যদলের সম্পাদক হাসির নাটক লিখতে বলেছিলেন এই কথা জানিয়ে যে, হাসির নাটকের বক্স অফিস দারূপ।

৬. “হ্যাঁ বল্লভভাই বলে গেছেন...”-বল্লভভাই বলে গেছেন বলে কী করতে হবে?

উত্তর: ‘বিভাব’ নাটকে অমর গাঙ্গুলি বলছেন, বল্লভভাই বলে গেছেন বলে, হাসতে হলে বেশ কোমর বেঁধে হাসতে হবে।

৭. “ওঃ দাতাকর্প যে।”—বক্তা কাকে কেন ‘দাতাকৰ্ণ’ বলেছেন?

উত্তর: ‘বৌদি’র আনা কল্পিত চা খেতে গিয়ে শম্ভু মিত্রের কল্পিত সিগারেটটি নষ্ট হলে অমর গাঙ্গুলি তাঁকে আবার সিগারেট দিতে বললে শম্ভু মিত্র এ কথা বলেন।

৬. নায়ক-নায়িকা ছাড়া প্রগ্রেসিভ লভ সিনে আর কোন্ চরিত্রের দরকার ছিল?

উত্তর: নায়ক-নায়িকা ছাড়া প্রগ্রেসিভ লভ সিনে একজন পুলিশ চরিত্রের দরকার ছিল।

৩৮ আমি পুলিশ মানে এই চেহারায়?”—অমর গাঙ্গুলি তাঁর এই কথার কী উত্তর পেয়েছিলেন?

উত্তর: শম্ভু মিত্র উত্তর দিয়েছিলেন যে, ৩২ ইঞ্চি বুক হলেই পুলিশ হওয়া যায়।

৮৮ আর তার নীচের দিয়েই তো একটা রাস্তা আছে?”—এই রাস্তাটার নাম কী ছিল?

উত্তর: ‘বিভাব’ নাটকে উল্লিখিত এই রাস্তার নাম ছিল মণি সমাদ্দার লেন ।

১. “গল্পটা progressive হয় কী করে?”—গল্পকে প্রগ্রেসিভ হতে গেলে কী করা প্রয়োজন?

উত্তর: গল্পকে প্রগ্রেসিভ করতে গেলে গল্পের নায়ককে আন্ডারগ্রাউন্ড পলিটিক্যাল লিডার করে তাতে রাজনৈতিক তাৎপর্য আনা প্রয়োজন।

মী ব্রূয়াৎ সত্যম্অ প্রিয়ম্”—কথাটির বাংলা কী?y

উত্তর: “মা ব্রূয়াৎ সত্যম্ অপ্রিয়ম্’’—কথাটির বাংলা তরজমা হল—অপ্রিয় সত্য বোলো না।

ও অমর গাঙ্গুলি ‘বিভাব' নাটকে তাঁর সংস্কৃত শিক্ষা বিষয়ে কী জানিয়েছেন? |

উত্তর: ‘বিভাব’ নাটকে অমর গাঙ্গুলি জানিয়েছেন যে, সংস্কৃতে তেরো পেয়েছিলেন বলে হেডপণ্ডিত স্কুলে তাঁকে প্রোমোশন দেননি।

৫ অমর গাঙ্গুলিকে স্কুলের হেডপণ্ডিত প্রোমোশন দেননি কেন?

উত্তর: শম্ভু মিত্রের ‘বিভাব’ নাটকে স্কুলের হেডপণ্ডিত অমর গাঙ্গুলিকে প্রোমোশন দেননি, কারণ তিনি সংস্কৃতে তেরো পেয়েছিলেন।

৬. “মুখে ভীষণ চিন্তা”—এই চিন্তার কারণ কী ছিল?

উত্তর: একাধিক চেষ্টার পরেও উপযুক্ত হাসির নাটক তৈরি করতে না পেরে শম্ভু মিত্র ও অমর গাঙ্গুলি চিন্তিত হয়ে পড়েছিলেন।

১৮ শম্ভু মিত্র ‘বিভাব’ নাটকের ‘লভ সিন’-কে কেন বলেছেন ‘জখমি লভ সিন'?

উত্তর: ‘বিভাব’ নাটকে লভ সিন করতে করতে ঘটনা পরম্পরায় তৃপ্তি মিত্র নায়ক শম্ভুর গালে একটা চড় বসিয়ে দিয়েছিলেন বলে শম্ভু তাকে ‘জখমি লভ সিন' বলেছেন।

১৩. ‘বিভাব’ নাটকের নেপথ্যে কোন্ গানটি শোনা গিয়েছিল?[হেয়ার স্কুল]

উত্তর: ‘বিভাব’ নাটকের নেপথ্যে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘মালতী লতা দোলে’ গানটি শোনা গিয়েছিল।

১৪)১৫ আরে সব সময়ে কি aesthetic দিক দেখলেই চলে? Box office বলেও তো একটা কথা আছে?””—বক্তা কখন কথাটি বলেন?

উত্তর: শম্ভু মিত্র ‘বিভাব’ নাটকে ফিল্‌ল্মি কায়দায় রবিঠাকুরের 'মালতী লতা দোলে' গানটি গাওয়া নিয়ে নিজের আপত্তি জানালে নেপথ্যের হারমোনিয়ামবাদক মন্তব্যটি করেন।

১৫. “রাস্তায় তাদের দুজনের ধাক্কাধাক্কি হবে।”—কাদের ধাক্কাধাক্কি হবে? [হেয়ার স্কুল]

উত্তর: রাস্তায় কলেজফেরত নায়িকা তৃপ্তি মিত্রের সঙ্গে নায়ক শম্ভু মিত্রের ধাক্কাধাক্কি হবে।

১৬. “খালি সে ধাক্কা দিয়ে বেড়ায়”—কে খালি ধাক্কা দিয়ে বেড়ায়?

উত্তর শম্ভু মিত্রের ‘বিভাব’ নাটকে বলা হয়েছে যে, নায়ক খালি ধাক্কা দিয়ে বেড়ায় |

১৯৭৮ বিশ্বভারতী কি পারমিশন দেবে?”—কীসের পারমিশন? [উচ্চমাধ্যমিক, ২০১৭]

উত্তর শ্রীশম্ভু মিত্র রচিত ‘বিভাব’ নাটক থেকে গৃহীত উদ্ধৃতিটিতে ‘মালতীলতা দোলে' রবীন্দ্রসংগীতটি ফিল্‌মি কায়দায় গাওয়ার জন্য বিশ্বভারতীর পারমিশন বা অনুমতি পাওয়ার কথা বলা হয়েছে। 

Box office বলেও তো একটা কথা আছে”—বক্তা কখন কথাটি [উচ্চমাধ্যমিক, ২০১৬] বলেছিলেন?

উত্তর ‘বিভাব’ নাটকে ‘মালতী লতা দোলে' রবীন্দ্রসংগীতটি ফিল্মি কায়দায় গাওয়া নিয়ে শম্ভু মিত্র আপত্তি করলে নেপথ্যের হারমোনিয়াবাদক কথাটি বলেছিলেন। 


উচ্চমাধ্যমিক বাংলা বিভাব ৫ নম্বরের প্রশ্ন উত্তর

২ “তাদের অভিনয় দেখে আইজেনস্টাইন সাহেব অত্যন্ত উচ্ছ্বসিত হয়ে অনেক কথা লিখেছেন।”—আইজেনস্টাইন সাহেব কে? তিনি কাদের অভিনয় দেখে উচ্ছ্বসিত হয়েছিলেন? সেই অভিনয় দেখে তিনি কী লিখেছিলেন? [উচ্চমাধ্যমিক, ২০১৭]

● উত্তর নাট্যকার শম্ভু মিত্রের ‘বিভাব’ নাটক থেকে গৃহীত উদ্ধৃতিটিতে উল্লিখিত

আইজেনস্টাইন সাহেব হলেন প্রখ্যাত এক রাশিয়ান চিত্রপরিচালক।

→ তিনি জাপানের নৃত্যনির্ভর, ঐতিহ্যশালী কাবুকি থিয়েটারের অভিনেতাদের অভিনয় দেখে উচ্ছ্বসিত হয়েছিলেন।

→ আইজেনস্টাইন সেই অভিনয় দেখে লেখেন যে, কাবুকি থিয়েটারে দেহ এবং মুখভঙ্গি বহুলভাবে ব্যবহৃত হয়। উদাহরণ হিসেবে তিনি বলেন, মঞ্চে এক ‘নাইট’ ক্ষুব্ধ হয়ে দুর্গ থেকে বেরিয়ে যাচ্ছেন এবং কতদূর চলে এলেন তা বোঝাতে তিনি স্টেজের পিছন দিক থেকে গম্ভীরভাবে এগোতে থাকেন। শিফটাররা তাঁর ঠিক পিছনে মস্ত দুর্গদ্বার ধরে দাঁড়ায়। তরোয়াল-যুদ্ধের দৃশ্যে দেখা যায়, দুই যোদ্ধা খাপ থেকে মিছিমিছি তরোয়াল বের করলেন এবং কাল্পনিক যুদ্ধ করতে লাগলেন। একজন অন্যজনের কাল্পনিক খোঁচা খেয়ে লুটিয়ে পড়লেন | মরার আগে একবার তাঁর হাতটা নড়ে উঠল, তারপর একটা পা তিরতির করে কাঁপল, চোখটা দুবার ঘুরল, মাথাটা দুবার নড়ল | শেষে তাঁর জিভ বেরিয়ে গেল । তারপর স্টেজে তাঁর সদ্যবিধবা স্ত্রী ঢুকে যখন প্রবল কান্নাকাটি শুরু করলেন, তখন কিন্তু সেই মৃত লোকটা উঠে আস্তে করে চলে গেলেন। কারণ, তখন দর্শকদের কাছে মহিলার পোকপ্ৰকাশটাই কাঙ্ক্ষিত দৃশ্য, তার মৃত স্বামীর উপস্থিতি নয়। কাবুকি থিয়েটারের এইসব প্রাসঙ্গিক দৃশ্যগুলির বর্ণনাই দিয়েছিলেন আইজেনস্টাইন।


১ “পৃথিবীতে সবচেয়ে পপুলার জিনিস হচ্ছে প্রেম।” – এই মন্তব্যের প্রসঙ্গ উল্লেখ করো। নাট্যবিষয়ে এই মন্তব্যটি কতটা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে আলোচনা করো। ২+৩

উত্তর শম্ভু মিত্রের ‘বিভাব’ নাটকে দেখা যায়, নাট্যদলের সম্পাদকের নির্দেশে, হাসির নাটক তৈরির উদ্দেশ্যে শম্ভু মিত্র ‘বহুরূপী’ নাট্যগোষ্ঠীর অপর অভিনেতা অমর গাঙ্গুলির বাড়িতে হাসির রসদ খুঁজতে গিয়েছিলেন। কিন্তু সেখানে হাস্যরস সৃষ্টিতে তাঁর প্রথম প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয় | তখন কীভাবে সার্থকরূপে হাসি সৃষ্টি করা যায়, তা উল্লেখ করতে গিয়ে নাট্যগোষ্ঠীতে ‘বৌদি’ বলে পরিচিত তৃপ্তি মিত্র মন্তব্যটি করেন।

→ অমর গাঙ্গুলির বক্তব্য অনুযায়ী, যে নাটকে কোনো গল্প নেই, ‘হিউম্যান ইন্টারেস্ট’ বা ‘পপুলার অ্যাপিল’ নেই, তা থেকে যথার্থ হাস্যরস তৈরি হতে পারে না। তাই শম্ভু মিত্রের কল্পিত বসার ভঙ্গি তাঁদের কাছে হাসির উপকরণ হিসেবে বিবেচিত হয় না। এরপরই বউদি তৃপ্তি মিত্র প্রেমকে পৃথিবীর সব থেকে পপুলার জিনিস বলে চিহ্নিত করেন | এরই সূত্র ধরে শম্ভু মিত্রকে নায়ক এবং তৃপ্তি মিত্রকে নায়িকা করে মূলত তৃপ্তি মিত্রের নির্দেশনায় একটি প্রেমের দৃশ্যের অভিনয়ের অনুশীলন হয়। কিন্তু মূল উদ্দেশ্য অর্থাৎ হাসি সৃষ্টির প্রচেষ্টা সেখানেও ব্যর্থ হয় | ফলে নতুন প্রেমের দৃশ্য তৈরির প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। অর্থাৎ, আপাতভাবে নাটকে ‘প্রেম’ শব্দটিকে রঙ্গতামাশার বিষয় করে তার অবমূল্যায়ন ঘটানোর মধ্য দিয়ে এক সামাজিক প্রবণতাকেই যেন তুলে ধরা হয়, আর তার ভূমিকায় থেকে যায় তৃপ্তি মিত্রের মন্তব্যটি


২“...আমাদের একটা লভ সিন করা উচিত।” –বক্তার এই মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে নাটকে যে দৃশ্যটি তৈরি হয়েছে তা নিজের ভাষায় বর্ণনা করো।

.উত্তর ‘বিভাব’ নাটকে দেখা যায়, শম্ভু মিত্র তাঁর নাট্যদলের সম্পাদকের ইচ্ছা অনুসারে হাসির নাটকের রসদ খুঁজতে সহ-অভিনেতা অমর গাঙ্গুলির বাড়িতে আসেন। সেখানে উপস্থিত তৃপ্তি মিত্র সাধারণ মানুষের গ্রহণযোগ্যতার কথা ভেবে তাঁদের একটি প্রেমের দৃশ্য তৈরি করা উচিত বলে মন্তব্য করেন। প্রথমেই ঘরের কাল্পনিক চেয়ার-টেবিলগুলো সরিয়ে দৃশ্যের উপযুক্ত পটভূমি তৈরি করা হয়। তারপর শম্ভু মিত্রকে নায়ক, আর বউদি তৃপ্তি মিত্রকে নায়িকার ভূমিকায় নির্বাচন করা হয়। অমর গাঙ্গুলি এতে খানিকটা অপ্রস্তুত হলেও পরে বিষয়টি মেনে নেন। তৃপ্তি মিত্রের নির্দেশনায় মঞ্চটিকেই রাস্তা ভেবে নিয়ে সেখানে কলেজ থেকে আসা নায়িকার সঙ্গে নায়কের ধাক্কাধাক্কির দৃশ্যের পরিকল্পনা করা হয় | ধাক্কা লাগার পরে এক পা পিছিয়ে গিয়ে “কেয়া আপ দেখতে নেহি...”—বলে নায়িকা তৃপ্তি মিত্র শম্ভু মিত্রের গালে একটা চড় কষিয়ে দেন | শম্ভু মিত্র ও অমর গাঙ্গুলি এই আকস্মিক চড়ে বিস্ময় প্রকাশ করেন। শম্ভু মিত্র একে ‘জখমি লভ সিন’ বলে চিহ্নিত করেন। নেপথ্য থেকে হারমোনিয়াম সহযোগে একটি মেয়ের কণ্ঠে কিছুটা ন্যাকামির ভঙ্গিতে ‘মালতী লতা দোলে' রবীন্দ্রসংগীতটি শোনা যায় । কিন্তু শম্ভু মিত্র ও অমর গাঙ্গুলি এই সিদ্ধান্তে পৌঁছোন যে, তাঁদের মূল উদ্দেশ্য অর্থাৎ হাসি সৃষ্টি এখানেও সম্ভব হচ্ছে না। এভাবেই এই দৃশ্য পরিকল্পনার সমাপ্তি ঘটে।


প্রশ্ন “এই চার দেওয়ালের মধ্যে, এই ঘরের মধ্যে জীবনকে উপলব্ধি করা যাবে না—হাসিও পাবে না...।” –বক্তার এই মন্তব্যের তাৎপর্য আলোচনা করো।

• উত্তর অভিনেতা ও নাট্যকার শম্ভু মিত্রের ‘বিভাব’ নাটকে নাট্যদলের সম্পাদকের নির্দেশ ছিল বক্স অফিসের চাহিদা অনুযায়ী হাসির নাটক মঞ্চস্থ করার। সেই হাসির নাটকের উপকরণ খুঁজতে শম্ভু মিত্র এসে পৌঁছোন সহ-অভিনেতা অমর গাঙ্গুলির বাড়িতে | প্রথমে শম্ভু মিত্র বসার ভঙ্গির মাধ্যমে হাস্যরস সৃষ্টির চেষ্টা করেন, কিন্তু অমর গাঙ্গুলি এবং বউদি তৃপ্তি মিত্র জানিয়ে দেন, “এতে হবে না”, কারণ এর কোনো ‘হিউম্যান ইন্টারেস্ট’ বা ‘পপুলার অ্যাপিল’ নেই। এরপর তৃপ্তি মিত্রের উদ্যোগে দর্শকদের চাহিদার কথা ভেবে ‘লভ সিন’ এবং তারপর ‘প্রগ্রেসিভ লভ সিন’-এর দৃশ্য অভিনীত হয় | কিন্তু তা–ও সার্থক হাসি তৈরি করতে পারে না | তখনই শম্ভু মিত্র নাটককে চার দেয়ালের গণ্ডি থেকে বের করে বাইরে সাধারণ মানুষের মধ্যে নিয়ে যেতে বলেন। তাঁর মতে সেখানেই ‘হাসির খোরাক’, পপুলার জিনিসের খোরাক পাওয়া যাবে। এখানে মূলত জীবনের গভীরতাকে খোঁজার বদলে তার লঘু ব্যঞ্জনা বা ‘খোরাক’- কে খোঁজার দিকেই ইঙ্গিত করা হয়েছে। একইসঙ্গে বাংলা নাটকের সস্তা জনপ্রিয়তা খোঁজার যে চেষ্টা, সেদিকেও নাট্যকারের শ্লেষ রয়েছে । শম্ভু মিত্র লিখেছেন—“কিছু গভীর কথা যদি গভীরভাবে বলবার থাকে তার, তবেই সে শিল্পী, ...কেবল যদি মনোহরণ করাটাই উদ্দেশ্য হয় তার, তাহলে সে ভাঁড় মাত্র।” এই সস্তা জনপ্রিয়তা খোঁজার প্রবণতাকেই ‘বিভাব’ নাটকে পরোক্ষ শ্লেষের মাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে।

বিভাব বড় প্রশ্ন উত্তর pdf,

প্রশ্ন ৪ “এই ঘরের মধ্যে জীবনকে উপলব্ধি করা যাবে না”— জীবনকে উপলব্ধি করার জন্য বক্তা কী করেছিলেন? শেষে তাঁর কীরূপ অভিজ্ঞতা হয়েছিল? ৩+২ 

উত্তর ‘বিভাব’ নাটকে নাট্যদলের সম্পাদকের নির্দেশে হাসির নাটকের উপকরণ খুঁজতে শম্ভু মিত্র সহ-অভিনেতা অমর গাঙ্গুলির বাড়িতে যান। সেখানে তৃপ্তি মিত্রের নির্দেশনায় ‘লভ সিন’ এবং ‘প্রগ্রেসিভ লভ সিন’-এর দৃশ্যের অবতারণা করেও যখন হাসি পায় না তখন তাঁরা সিদ্ধান্ত নেন যে, ঘরের মধ্যে জীবনকে উপলব্ধি করা যাবে না। ‘হাসির খোরাক, পপুলার জিনিসের খোরাক’-এর জন্য চার দেয়ালের বাইরে বেরোতে হবে। রাস্তায়, মাঠে, ঘাটে গিয়ে দাড়াতে হবে। কিন্তু কাল্পনিকভাবে রাস্তায় গিয়েও সেখানকার মোটরগাড়ি, বাস, হাত- রিকশা কিংবা চলন্ত ট্রামের মধ্যে হাসির উপকরণের খোঁজ মেলে না। হাসির উপাদান নিয়ে শম্ভু মিত্র এবং অমর গাঙ্গুলি যখন হতাশ সেই সময়েই রাস্তায় একটা মিছিল থেকে খাদ্য-বস্ত্রের দাবিতে স্লোগান শোনা যায়। মিছিলের সামনে পুলিশ চলে আসে। তারা আন্দোলনকারীদের ফিরে যেতে বললেও তারা ফিরে যায় না। পুলিশের গুলি চলে। একটি ছেলে এবং একটি মেয়ে চিৎকার করে পড়ে যায় | হাহাকার আর গোঙানির শব্দের মধ্যেই পুলিশ চলে যায়। এতক্ষণ আড়াল থেকে এইসব দৃশ্য দেখার পরে শম্ভু মিত্র এবং অমর গাঙ্গুলি মঞ্চে প্রবেশ করেন | শম্ভু মিত্র তাঁর হাসির নাটকের সন্ধান শেষ করেন এই বলে—“এবার নিশ্চয়ই লোকের খুব হাসি পাবে?” জীবনের নির্মম অভিজ্ঞতা এবং সস্তা জনপ্রিয়তার খোঁজে নাটকের প্রযোজনাকে এভাবেই তীব্র শ্লেষে বিদ্ধ করেন নাট্যকার।


প্রশ্ন “এবার নিশ্চয়ই লোকের খুব হাসি পাবে?”—সমগ্র নাট্যকাহিনির নিরিখে মন্তব্যটির তাৎপর্য আলোচনা করো।

উত্তর অভিনেতা ও নাট্যকার শম্ভু মিত্রের ‘বিভাব’ নাটকের প্রেক্ষাপটে রয়েছে হাসির নাটক মঞ্চস্থ করার জন্য হাসির উপকরণের সন্ধান। কিন্তু কোনো বিশেষ ভঙ্গি কিংবা ‘লভ সিন’ বা ‘প্রগেসিভ লাভ সিন’ তৈরি করে এই হাসি সৃষ্টিতে ব্যর্থ হন নাট্যকার | নাট্যকারের প্রস্তাবমতো চার দেয়ালের বাইরে

বেরিয়ে, ব্যস্ত গতিশীল জীবনেও তাঁরা হাসির কোনো উপকরণই খুঁজে পান না। এমন সময়ে ‘চাল’, ‘কাপড়’-এর দাবি জানিয়ে একটি মিছিল আসে। উলটো দিক থেকে হাজির হয় পুলিশও। সার্জেন্ট মিছিলকে ফিরে যাবার নির্দেশ দিলেও স্লোগান চলতেই থাকে। নিরস্ত্র জনগণের ওপর গুলি চালায় পুলিশ এবং একটি ছেলে ও একটি মেয়ে পড়ে যায় | হাহাকার আর গোঙানির শব্দে ভরে ওঠে চারপাশ। পুলিশ চলে গেলে অমর গাঙ্গুলি এবং শম্ভু মিত্রের পুনরায় মঞ্চে আগমন ঘটে। আর সেসময়ই শম্ভু মিত্র দর্শকদের দিকে তাকিয়েবলেন “এবার নিশ্চয়ই লোকের খুব হাসি পাবে?” -এই মন্তব্যের মধ্য দিয়ে কোথাও যেন সাধারণ মানুষ সম্পর্কে উন্নাসিকনাগরিক সমাজের আত্মকেন্দ্রিক মানসিকতাকে চাবুক মারা হয়। যারা সস্তা মনোরঞ্জনকে উপভোগ করতে চায়, জীবনের গভীরতাকে ছুঁতে চায় না— হাসির উপকরণ খুঁজতে থাকা অভিনেতা শম্ভু মিত্রের বিবেক যেন তাদের সেই উদাসীনতাকেই তাচ্ছিল্য করে।



একাঙ্ক নাটক হিসেবে ‘বিভাব' কতখানি সার্থক তা আলোচনা করো।

● উত্তর ‘বিভাব’ নাটকের সূচনা অংশে নাট্যকার শম্ভু মিত্র নিজেই এটিকে ‘একাঙ্কিকা’ বলে উল্লেখ করেছেন। বহিরাঙ্গিক বিচারে আয়তনের সংক্ষিপ্ততা এবং চরিত্রের স্বল্পতা এই নাটকের অন্যতম বৈশিষ্ট্য | শম্ভু মিত্র,অমর গাঙ্গুলি এবং ‘বৌদি’ তৃপ্তি মিত্র—এই তিনটি চরিত্রকে আশ্রয় করে নাটকটি রচিত। একাঙ্ক নাটকের শর্ত মেনে একটিমাত্র উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে নাটকটি রচিত হয়েছে এবং তা হল নাটকে হাসির কারণ সন্ধান | কিন্তু তার আড়ালে নাট্যকার আসলে স্পষ্ট করতে চেয়েছেন, জীবনের প্রকৃত স্বরূপকে বিসর্জন দিয়ে স্থূল হাসির জন্য দর্শকদের ও তথাকথিত নাট্যদলগুলোর অপপ্রয়াসকে। একাঙ্ক নাটকেও ক্লাইম্যাক্সের একটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকে | ‘বিভাব’ নাটকে দেখা যায় ‘লভ সিন’, ‘প্রগ্রেসিভ লভ সিন’ ইত্যাদি অভিনয় করেও যখন যথেষ্ট হাসির উদ্রেক হল না—তখন শম্ভু মিত্র অমর গাঙ্গুলিকে নিয়ে রাস্তায় বেরিয়ে পড়েন, সেখানে দেখা যায় ‘চাল’, ‘কাপড়’-এর দাবিতে মানুষের মিছিল চলেছে, তাতে পুলিশ গুলি চালায় এবং সামনে থাকা ছেলে মেয়েটি লুটিয়ে পড়ে। সেদিকে তাকিয়ে শম্ভু মিত্র মন্তব্যকরেন—“এবার নিশ্চয়ই লোকের খুব হাসি পাবে?”—সমগ্র নাটকটি শেষ অবধি গিয়ে দাঁড়ায় এই একটি মন্তব্যের শীর্ষদেশে। এই বাস্তবতাকে আশ্রয় করাই একাঙ্ক নাটকের ধর্ম। এইসব সাধারণ বৈশিষ্ট্যের পাশাপাশি গ্রুপ থিয়েটারের নিজস্ব ভাবনার প্রকাশে ভঙ্গিনির্ভর, মঞ্চসজ্জাহীন অভিনয়ের দিকে নাট্যকারের ঝোঁক এবং শুরুতে সূচনা অংশে তাঁর অনুপ্রেরণা হিসেবে দেশ-বিদেশের নানা নাটকের প্রসঙ্গ উল্লেখ, নিঃসন্দেহে এক অন্যরকম সূচনা। এভাবে সর্ব অর্থেই ‘একাঙ্ক’ নাটক  হিসেবে ‘বিভাব’ বিশিষ্ট হয়ে উঠেছে।


প্রশ্ন ৩.১৭ ‘বিভাব’ নাটকে নাট্যরীতির যে নতুনত্ব প্রকাশ পেয়েছে তা আলোচনা করো। নমুনা প্রশ্ন, '১৪] উত্তর: 

অঙ্গভঙ্গি সৃষ্ট সংকেত : প্রখ্যাত নট ও নাট্যকার শম্ভু মিত্রের রচিত একাঙ্ক ‘বিভাব’ নাটক ‘বহুরূপী’ নাট্যদলের প্রযোজনায় ও শম্ভু মিত্রের নির্দেশনায় অভিনীত হত। নতুন নাট্যরীতিতে নাটকটি মঞ্চস্থ হত। সেজন্য অবশ্য সুসজ্জিত মঞ্চের দরকার হত না। কোনোরকমের একটা প্ল্যাটফর্ম হলেই অভিনয় চলত। স্টেজে সিনসিনারি, দরজা-জানালা, টেবিল-বেঞ কোনো কিছুর প্রয়োজন ছিল না। অঙ্গভঙ্গি-সৃষ্ট সংকেতের দ্বারা ওসবের অভাব মেটানো হত।

নাট্যৱীতির নতুনত্ব : ওই নতুন নাট্যরীতির প্রয়োগ-বুদ্ধিটা এসেছিল পুরোনো বাংলা নাটক থেকে। তাতে লেখা আছে ‘রাজা রথারোহণম্ নাটয়তি’। অর্থাৎ, ‘রাজা রথে আরোহণ করার ভঙ্গি করলেন। সে ভঙ্গি অবশ্যই এরকম ভঙ্গি যে, যা দেখে দর্শক সহজে বুঝে নিতে পারতেন যে, রাজা রথে চড়লেন। তাহলে দেখা গেল, রাজার রথে চড়া অভিনয়ের জন্য রথ ও ঘোড়া কোনো কিছুর দরকার হত না। এরকম আর-একটি দৃষ্টান্ত হল উড়ে যাত্রার একটি দৃশ্য। দূতকে রাজা বললেন, ‘তবে ঘোড়া নেই করি চঞ্চল খবর নেই আসিবি। দূত এই হুকুম পাওয়া মাত্র দু-পায়ের ফাঁকে একটা লাঠি গলিয়ে ঘোড়ার চড়ার ভঙ্গি করে হেট্ হেট্ক রতে করতে আসর থেকে বেরিয়ে গেল। একটু পরে আসরে একই ভঙ্গিতে এসে খবর দিল রাজাকে। দর্শকরা বুঝে নিল দূত ঘোড়ায় চড়ে গেছে আর এসেছে। এরকম অঙ্গভঙ্গির সংকেতের মাধ্যমে নাট্যরীতির নতুনত্ব ‘বিভাব’ নাট্যাভিনয়ে দেখা যায়।


প্রশ্ন ৩.১৯ ‘এই ঘরের মধ্যে জীবনকে উপলব্ধি করা যাবে না—’—জীবনকে উপলব্ধি করার জন্য বক্তা কীকরেছিলেন? শেষে তাঁর কীরূপ অভিজ্ঞতা হয়েছিল?

অথবা, ‘এই ঘরের মধ্যে জীবনকে উপলব্ধি করা যাবে না’—জীবনকে উপলব্ধি করতে বক্তা কী করেছিলেন?শেষ পর্যন্ত জীবনের কোন্ অভিজ্ঞতা তাঁর হয়েছিল লেখো।

উত্তর : উপলব্ধি ও লব্ধ অভিজ্ঞতা : বহুরূপীর সম্পাদকমশায়ের ইচ্ছা হাসির নাটক করার, সেজন্য শম্ভু মিত্র অমর গাঙ্গুলির বাড়ি এসেছেন হাসাতে এবং হাসির খোরাক ও জোগাড় করতে। সেই উদ্দেশ্যে শম্ভু, অমর ও বৌদি দু-দুটি লভ সিন অভিনয় করেন। নায়ক হন শম্ভু মিত্র, নায়িকা হন বৌদি। দুটি সিনই অভিনয় হওয়ার পরে তাঁদের মনে হয় কাঙ্ক্ষিত হাস্যরস তাঁদের কাছে অধরা থেকেছে। শম্ভু ও অমর উভয়ে তখন চিন্তা করার পর এই বোধে আসেন যে, ঘরের চার দেয়ালের ঘেরাটোপের মধ্যে জীবনকে উপলব্ধি করা সম্ভব নয়। সেজন্য যেতে হবে রাস্তায়, মাঠে, ঘাটে, মানুষের সান্নিধ্যে। তাঁরা তখন ঘরের চার দেয়ালের বন্ধন পিছনে ফেলে রাস্তায় নেমে আসেন। প্রথমে তিন-চার রকমের যানবাহন অতিক্রম করার পর শোভাযাত্রার স্লোগানের আওয়াজ তাঁদের কানে আসে। স্লোগান হল ‘চাল চাই, কাপড় চাই, চাল চাই, কাপড় চাই? শোভাযাত্রা ক্রমশ পুলিশ বাহিনীর মুখোমুখি হয়। প্রথমে পুলিশ সার্জেন্ট শোভাযাত্রীদের ফিরে যাওয়ার পরামর্শ দেন। শোভাযাত্রার সামনের মেয়েটি ‘না’ বলে অসম্মতি জানায়। ফিরে না গেলে পুলিশ ফায়ার করার হুমকি দেয়। একসময় ফায়ারও করে। একটি ছেলে ও একটি মেয়ে মারা যায়। শম্ভু মিত্র ও অমর গাঙ্গুলি এক শোকাবহ অভিজ্ঞতা লাভ করেন।


প্রশ্ন ৩.২৩ ‘বিভাব’ কথাটির সাধারণ অর্থ কী? বিভাব’ নাটকটির নামকরণ কতখানি তাৎপর্যপূর্ণ, আলোচনা করো।

উত্তর : সংস্কৃত কাব্যনাটকে মনের মধ্যে শোক, হাসি ইত্যাদি ভাব সৃষ্টির কারণকে বিভাব বলে।

নামকরণের সার্থকতা বৈশিষ্ট্যাবলি ছোটোগল্পেরমতো একই তাগিদ ও প্রেরণা থেকে একাঙ্ক নাটকের জন্ম। তা ছাড়া একাঙ্ক নাটক সৃষ্টির মূলে আছে জীবনের সুতীব্র অভিজ্ঞতা বা গাঢ় অনুভূতি। একাঙ্ক নাটকের বৈশিষ্ট্য হল, ঘটনার একমুখীনতা, ঘটনার বাহুল্য বর্জন, স্থান, সময় ও ঘটনার ঐক্য, ঘটনার দ্রুতগামিতা, ঘটনার চরম মুহূর্ত সৃষ্টি প্রভৃতি।

প্রথম বৈশিষ্ট্য : এক ঘটনার একমুখীনতা একাঙ্ক নাটকের বিশেষ বৈশিষ্ট্য। ঘটনার তীব্রতা বা গাঢ়তা রক্ষা করতে হলে ঘটনার বাহুল্যবর্জিত একমুখীনতা অবশ্যই দরকার। ‘বিভাব’নাটকে ঘটনার একমুখীনতার বৈশিষ্ট্যটি সুন্দরভাবে রক্ষিত হয়েছে। শম্ভু মিত্র অমর গাঙ্গুলির বাড়িতে পৌঁছানোর পর থেকে হাসির খোরাক জোগাড়ের বিষয়টি সামনে রেখে প্রথম ও দ্বিতীয় লাভ সিন ও পরিশেষে ক্ষুধার্ত মানুষের মিছিলে গুলিবর্ষণের ঘটনাক্রমকে আশ্রয় করে ঘটনার একমুখীনতা লক্ষ্যভেদী তিরের মতো নাটকের চরম পরিণতির দিকে এগিয়েছে।

দ্বিতীয় বৈশিষ্ট্য : দুই বাহুল্যবর্জিত ঘটনা একাঙ্কের উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য। একাঙ্কের ঘটনা একমুখী হওয়ায় নাটকে বেশি ঘটনার স্থান হয় না। লক্ষণীয় যে, ‘বিভাব’ নাটকটি ঘটনাকেন্দ্রিক নাটক। হাসির নাটকের জন্য হাসির খোরাক জোগাড় করা ঘটনার লক্ষ্য। সেই উদ্দেশ্যে ঘটনাক্রমের ধারা এগিয়ে চলেছে প্রথম ও দ্বিতীয় লাভ সিন অতিক্রম করে জীবনসন্ধানে। জীবন-উপলব্ধির সন্ধানে ঘটনার অগ্রগতি। সেজন্য ‘বিভাব’ নাটকে ঘটনার বাহুল্য নেই।

তৃতীয় বৈশিষ্ট্য : তিন → স্থান, কাল ও কার্যের ঐক্যএকাঙ্ক নাটকের আর-এক গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য। সাধারণভাবে একাঙ্কে দৃশ্যান্তরের ব্যাপার না থাকায় এক দৃশ্যে নাটক অভিনীত হওয়ায় স্থান ও কালের ঐক্য থাকে। এই একাঙ্কে কালের ঐক্য বজায় থাকলেও স্থান ও দৃশ্যের ঐক্য অনেকাংশেশিথিল। তিনটি দৃশ্য ও তিনটি স্থানের অবস্থিতিকে অভিনীত অঙ্গভঙ্গির সাহায্যে দক্ষতার সঙ্গে একই ঘটনার অন্তর্ভূক্তি করে নেওয়া হয়েছে।

চতুর্থ বৈশিষ্ট্য : চার ঘটনার দ্রুতগামিতা ও নাটকীয় চরম মুহূর্ত। ‘বিভাব’ নাটকে ঘটনার প্রবহমানতা গতিশীল। হাসির নাটক হিসেবে ঘটনা এগোতে এগোতে নাটকীয় চরম মুহূর্তে দেখা গেল হাস্যরসের জন্য জীবন-উপলব্ধির সন্ধানে যে বিভাব মিলেছে তা এক পরিহাসের মতো মর্মস্তুদ করুণ রসের উৎস। একাঙ্কের আলোচিত উল্লিখিত বৈশিষ্ট্যগুলির নিরিখে দেখা গেল নাটকের ‘বিভাব' নামকরণটি যথাযথ ও সার্থক।


[TAG]:   দ্বাদশ শ্রেণি বিভাব, বিভাব mcq,উচ্চমাধ্যমিক বাংলা বড় প্রশ্ন উত্তর,দ্বাদশ শ্রেণি বাংলা প্রশ্ন উত্তর,দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা বিভাব প্রশ্ন ,দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা বিভাব ৫ নং প্রশ্ন উত্তর,বাংলা বিভাব বড় প্রশ্ন উত্তর

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url