পরিবেশরক্ষায় ছাত্রছাত্রীদের ভূমিকা প্রবন্ধ রচনা pdf |পরিবেশ পরিসেবায় ছাত্রসমাজ প্রবন্ধ রচনা Paribesaraksaya chatrachatridera bhumika prabandha racana
প্রবন্ধ রচনা-পরিবেশ পরিসেবায় ছাত্রসমাজ/পরিবেশরক্ষায় ছাত্রছাত্রীদের ভূমিকা
ভূমিকা: উদ্ভিদ ও জীবজগৎ-সহ যে প্রাকৃতিক ঘেরের মধ্যে আমরা বাস করি, তাই হল পরিবেশ | প্রাকৃতিক নিয়মে এই পরিবেশের মধ্যে যুগ যুগ ধরে ভারসাম্য রক্ষিত হয়ে অসিছে বলে জীবকুল আজও পৃথিবীতে সুখ- স্বাভাবিকভাবে বসবাস করতে পারছে | আমাদের সুস্থভাবে বেঁচে থাকার সঙ্গে পরিবেশের ভারসাম্যরক্ষার একটি অনিবার্য সম্পর্ক রয়েছে।
আধুনিক যন্ত্রসভ্যতা ও পরিবেশের ভারসাম্য: আধুনিক যন্ত্রসভ্যতার বিকাশের সঙ্গে সঙ্গে পরিবেশের ভারসাম্যে সংকটের সূচনা ঘটেছে। জীবনযাপনের সুখস্বাচ্ছন্দ্যের জন্য আমরা হাতের কাছে পেয়েছি অজস্র উপত্রপ, গড়ে উঠেছে বড়াে বড়াে কলকারখানা দুতগামী যানবাহন থেকে শুরু করে অত্যাধুনিক কম্পিউটার—সবই আজ আমাদের হাতে। মানুষ জেনেছে পারমাণবিক মহাশক্তির রহস্য | কিন্তু এসবের জন্য আমরা অবহেলা করেছি পরিবেশকে| যত বেশি আমরা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির অগ্রগতিতে উল্লসিত হয়েছি তার থেকে অনেক কম মনােযােগ দিয়েছি পরিবেশের ভারসাম্যের দিকে।
ভারসাম্যের সংকট; পরিবেশের প্রতি মনােযােগের অভাবের জন্য পরিবেশে দেখা দিয়েছে নানা প্রতিকূলতা। বাতাসে, জলে, মাটিতে দেখা দিয়েছে মারাত্মক দূষণ | অজস্র যানবাহন আর কলকারখানা থেকে প্রতি মুহূর্তে বের হচ্ছে বিষাক্ত ধোঁয়া। বনজঙ্গল কেটে নগরায়ণ করতে গিয়ে এবং শিল্পের প্রসার ঘটাতে গিয়ে কার্বন মনােক্সাইড, কার্বন ডাইঅক্সাইড ও সালফার ডাইঅক্সাইডের মতাে বিষাক্ত গ্যাসে ভরে গেছে বাতাস | রাসায়নিকসার, কীটনাশক ওষুধ এবং কলকারখানা থেকে যে বর্জ্য পদার্থ বের হচ্ছে,তা থেকে দূষিত হচ্ছে নদী, সমুদ্র ও ভূগর্ভের জল; দূষিত হচ্ছে মাটি। শব্দদানবতাে আজকের যুগের একটি বড়াে সমস্যা হিসেবে দেখা দিয়েছে। যানবাহনের শব্দ, বাজি ও মাইকের আওয়াজে জীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠছে। এসবের সঙ্গে আছে পরমাণু বােমার বিস্ফোরণের ফলে ছড়িয়ে পড়া দূষণ | সবমিলিয়ে আমাদের পরিবেশ যে ভারসাম্যহীনতায় ভুগছে, তাতে দেখা দিচ্ছে অতিবৃষ্টি, অনাবৃষ্টি এবং নানা অসুখবিসুখ।
ভারসাম্যরক্ষায় ছাত্রছাত্রীদের ভূমিকা: সমস্যা আছে, অতএব প্রতিকারও চাই। এই প্রতিকারে পৃথিবীর সমস্ত স্তরের মানুষেরই ভূমিকা আছে। বিশেষ করে ছাত্রছাত্রীদের ভূমিকাটি এক্ষেত্রে খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে আমরা মনে করি। পরিবেশের ভারসাম্যরক্ষায় বৃক্ষরােপণ ও বনসংরক্ষণ খুবই জরুরি, বলা যায়,এই সমস্যাসমাধানের অন্যতম প্রধান উপায়। ছাত্রছাত্রীরা বন-সংরক্ষণের জন্য বিভিন্ন মহলে দাবি জানাতে পারে। তারা পরিকল্পিতভাবে রাস্তার ধারে, বিদ্যালয়ে কিংবা পােড়াে জমিতে বৃক্ষ রােপণ করতে পারে। শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণের জন্য তারা সাধারণ মানুষকে সচেতন করে তােলার দায়িত্ব গ্রহণ করবে। জল ও বাতাসকে যথাসম্ভব বিশুদ্ধ রাখার জন্য মানুষকে পরিবেশের ভারসাম্যের সংকটের কথা বােঝানাের চেষ্টা করবে। এর জন্য তারা আলােচনা সভা, পথনাটিকা প্রভৃতির আয়ােজন করতে পারে। কেন- যারা আজকের ছাত্রছাত্রী, ভবিষ্যতে তারাই হবে দেশের দায়িত্বশীল নাগরিক। সুতরাং এখন থেকে তারা যদি সচেতন হয় ও সক্রিয় ভূমিকা নেয়তাহলে পরিবেশকে রক্ষা করা অসম্ভব হবে বলে মনে হয় না।
উপসংহার: একটি বিষয়ে আমরা সবাই বােধহয় একমত যে, এই পৃথিবীতে আমরা সবাই সুস্থভাবে বাঁচতে চাই। কিন্তু সুস্থভাবে বেঁচে থাকার জন্য একটা সুস্থ পরিবেশও যে খুবই প্রয়ােজন, সে বিষয়ে আমরা এখনও সবাই সচেতন নই। এক্ষেত্রে ছাত্রছাত্রীদের একটি গুরুদায়িত্ব রয়েছে। তারা বয়সে তরুণ, তাদের দেহে-মনে আছে অদম্য প্রাণশক্তি, তারা উন্নত কোনাে আদর্শকে সামনে রেখে এগােতে চায়, তাই তারা এগিয়ে এলে চারপাশের মানুষকে পরিবেশ সচেতন করে তােলা অসম্ভব হবে না নিশ্চয়ই।
অনুসরণে লেখা যায় পরিবেশ ও ছাত্রসমাজ
পরিবেশের ভারসাম্যের সংকট ও ছাত্রসমাজ
পরিবেশরক্ষায় ছাত্রছাত্রীদের ভূমিকা
পরিবেশ পরিসেবায় ছাত্রসমাজ
পরিবেশরক্ষার আবশ্যকতা
পরিবেশ-উন্নয়নে ছাত্রছাত্রীদের ভূমিকা
পরিবেশের ভারসাম্যরক্ষায় ছাত্রছাত্রীদের ভূমিকা